আজ মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ইং

এক মাস ১১ দিনের বেতন দান করছেন সুমন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৪-০৩ ১১:০১:০৪

সিলেটভিউ ডেস্ক :: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগকারী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের সর্বশেষ এক মাস ১১ দিনের বেতনের টাকা করোনায় লকডাউনে থাকা অসহায় গরিবদের দান করবেন। সুমন চান তার এই কাজে উৎসাহিত হোক দেশের হাজারো বিচারক ও আইনজীবীসহ সাংবিধানিক পোস্টধারীরা।

৪১ দিনের বেতন দানের বিষয়টি ব্যারিস্টার সুমন গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন,করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্বে ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। এরই মধ্যে বাংলাদেশেও করোনার প্রভাব পড়েছে। তাই করোনার বিস্তার রোধে কার্যত লকডাউন চলছে সারাদেশব্যপী।

এর মধ্যে দিন আনে দিন খায় এমন নিম্ন আয়ের মানুষ ও নিম্ম মধ্যবিত্তদের সংসার চালাতে কষ্ট করতে হচ্ছে। বাংলাদেশের পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে তাদের বেতনের টাকা প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে অনুদান হিসেবে জমা দিয়েছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে এবং অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে সহযোগীতা নিয়ে এগিয়ে এলেও সরকারের সচিবসহ বিভিন্ন সরকারি চাকরিজীবীরা এখনো সাড়া দেননি।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আমি দান করার বিষয়টি প্রকাশ করছি এইজন্য যে করোনা মোকাবেলায় শুধু সরকার কেন একা ভাববেন। এটি একটি আন্তর্জাতিক দুর্যোগ। তাই এই দুর্যোগে সরকার কেন একা দায়িত্ব পালন করবে। আইন অঙ্গনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্টের বিচারকসহ দেশের সকল বিচারক ও আইনজীবী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় রয়েছে। তারা এগিয়ে আসতে পারেন।

নির্বাচন কমিশনারসহ দেশের সাংবিধানিক পোস্টে যারা রয়েছেন, তারা কমপক্ষে এক-দুই দিনের বেতনও যদি প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে দান করেন তাহলে এই দুর্যোগের সময়ে অসহায় মানুষের অনেক উপকার হবে। এজন্য আমি আমার বেতনের টাকা দান করে তা জানিয়ে দেশের সর্বস্তরের মানুষকে উৎসাহিত করছি।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। পদত্যাগের বিষয়ে সুমন গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে স্বেচ্ছায় জড়িত হওয়ায় ট্রাইব্যুনালে সময় দিতে পারছি না। এ অবস্থায় সরকারের কোষাগার থেকে বেতন নেয়া অনৈতিক মনে করায় আমি পদত্যাগ করেছি।

পদত্যাগপত্রে ব্যারিস্টার সুমন লিখেছেন, ‘২০১২ সালের ১৩ নভেম্বর আমি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে যোগদান করি। যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন মামলা অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে পরিচালনা করেছি। ইদানিং বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছামূলক কাজে নিবিড়ভাবে জড়িত হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মতো রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে সম্পূর্ণ নিষ্ঠার সাথে সময় দিতে পারছি না। এমতাবস্থায় সরকারি কোষাগার থেকে বেতন নেওয়াকে আমি অনৈতিক বলে মনে করি। এ কারণে আমি বর্তমান পদ থেকে অব্যাহতি প্রার্থনা করছি।’

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ছাড়াও হাইকোর্টের একজন আইনজীবী। এছাড়া তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি। ফেসবুকে তাকে ২২ লাখ মানুষ অনুসরণ করে।

সৌজন্যে : জাগোনিউজ ২৪

সিলেটভিউ২৪ডটকম/৩ এপ্রিল ২০২০/মিআচৌ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন