Sylhet View 24 PRINT

সাবরিনা-আরিফ : প্রতারকদম্পতির উত্থান-পতনের গল্প

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৭-১২ ২৩:১১:২১

সিলেটভিউ ডেস্ক :: জেকেজি হেলথকেয়ারের করোনার ভুয়া রিপোর্ট তৈরির ঘটনায় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার (১২ জুলাই) ডা. সাবরিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের তেজগাঁও ডিসি কার্যালয়ে ডাকা হয়। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে জেকেজি হাসপাতালে করোনার ভুয়া রিপোর্ট তৈরির বিষয়ে অস্বীকার করেছেন প্রতিষ্ঠানটির অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। এসময় আরিফ চৌধুরীর সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কও অস্বীকার করেন তিনি।

এদিকে জেকেজি হেলথকেয়ারের করোনা টেস্ট নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর আগেই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী এবং ডা. সাবরিনার স্বামী আরিফ চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বামী-স্ত্রী দু\'জন মিলেই এই প্রতারণার জাল বোনা শুরু করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

জানা যায়, আরিফ-সাবরিনা দম্পতির জীবনও রূপকথার গল্পের মতো। আরিফের চতুর্থ স্ত্রী সাবরিনা। আরিফের আরেক স্ত্রী থাকেন রাশিয়ায়, অন্যজন লন্ডনে। তবে ইতোমধ্যে আরেক স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়িও হয়ে গেছে আরিফের। তবে ছাড়াছাড়ির পরও সাবেক ওই স্ত্রী উচ্চমহলে আরিফের জন্য দেন দরবার করে যাচ্ছেন।

তদন্ত সুত্রে জানা যায়, মূলত সাবরিনার হাত ধরেই করোনার স্যাম্পল কালেকশনের কাজটি বাগিয়ে নেয় অনেকটা অখ্যাত জেকেজি নামে উক্ত প্রতিষ্ঠান। প্রথমে তিতুমীর কলেজ মাঠে স্যাম্পল কালেকশন বুথ স্থাপনের অনুমতি মিললেও প্রভাব খাটিয়ে ঢাকার অন্য এলাকা এবং অনেক জেলা থেকেও নমুনা সংগ্রহ করছিল মহলটি।

স্বামী-স্ত্রী মিলে এমন লোক ঠকানো \'ব্যবসা\' চালু করলেও তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের নয়। স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের এক চিকিৎসককে মারধর করেন আরিফ চৌধুরী। পরে এ ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে গত ৪ জুন শেরেবাংলা নগর থানায় জিডি করেন ডা. সাবরিনা। এর দুই মাস আগে তাদের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে দাবি সাবরিনার।

এছাড়া জেকেজির এক কর্মীকে অশালীন প্রস্তাব দেয়ার ঘটনায় গুলশান থানায় আরিফ চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলাও  রয়েছে। বিএমএর নেতার পরিচয় ভাঙিয়ে চলাফেরা করেন ডা. সাবরিনা। ওই নেতার ছত্রছায়াই এতদিন ছিলেন সাবরিনা।

আরিফ-সাবরিনার প্রতিষ্ঠান জেকেজির বিরুদ্ধে অভিযোগ, সরকারের কাছ থেকে বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের অনুমতি নিয়ে \'বুকিং বিডি\' ও \'হেলথকেয়ার\' নামে দু\'টি সাইটের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই প্রদান করা হচ্ছিল ভুয়া করোনা রিপোর্টের সনদ।

পুলিশ জানায়, জেকেজি হেলথকেয়ার থেকে ২৭ হাজার রোগীকে করোনার টেস্টের রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনার আইইডিসিআরের মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ রিপোর্ট প্রতিষ্ঠানটির ল্যাপটপে তৈরি করা হয়। জব্দ করা ল্যাপটপে তার প্রমাণ পাওয়া যায়।

জেকেজির মাঠকর্মীরা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে করোনা উপসর্গ দেখা দেয়া মানুষের নমুনা সংগ্রহ করতেন। প্রতি রিপোর্টে ৫-১০ হাজার টাকা নেয়া হতো। আর বিদেশিদের কাছ থেকে নেন ১০০ ডলার। সেই হিসাবে ইতোমধ্যে করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্টে প্রায় ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জেকেজি!


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ১২ জুলাই, ২০২০/ সময় টিভি / এসএইচ / ডালিম

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.