Sylhet View 24 PRINT

শেখ হাসিনা বেঁচে থাকতে যুদ্ধাপরাধীর ঠাঁই এ দেশে হবে না : হানিফ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৯-২৯ ০১:২৩:৫৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা অফিস:: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে থাকতে কোনো যুদ্ধাপরাধীর ঠাঁই এ দেশে হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।


সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনীর সমাপনী দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, শেষ হাসিনা একটি নাম। শুধু এই বাংলাদেশে নয়, এই উপমহাদেশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র শেখ হাসিনা। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের সন্তান শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের গরিব-দুঃখী মানুষের আশ্রয়স্থল জননেত্রী শেখ হাসিনা। এ দেশের অর্থনীতির মুক্তি ও জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা পুরণের একটি নাম শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এক সাথে ১৬ জন স্বজনকে হারিয়েছিলেন। তিনি বিদেশে থেকে বাবা, মা, ভাই-বোন হারানোর খবর পেয়েছিলেন। আজকে যারা গণতন্ত্রের সবক দেন, সেইদিন গণতন্ত্র কোথায় ছিল ? আইন করে একটি পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করার পরও বিচার করার পথ বন্ধ করে দিয়েছেলো। অনেক সময় দেখা যায় ক্ষমতা পালাবদনের সময় দুই একটা নিহতের ঘটনা ঘটে। কিন্তু পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যার নজির পৃথীবির কোথাও নেই। এটা ছিলো ৭১ সালের প্রতিশোধ। তার প্রমাণ পরবর্তীতে ক্ষমতায় এসে খুনি জিয়াউর রহমান রেখেছিলেন। 

আওয়ামী লীগের ওই নেতা আরো বলেন, শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে আসতে দেয়নি জিয়াউর রহমান। কিন্তু ১৯৮১ সালে আন্তর্জাতিক চাপের কারণে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে আসতে দিতে বাধ্য হয়েছিল। এক পর্যায়ে স্বজন হারানো ব্যথা নিয়ে বাংলাদেশে আসলেন শেখ হাসিনা। সেই দিন তিনি বলেছিলেন, আমি এসেছি এদেশে আমার বাবা হত্যার বিচার চাইতে।

তিনি বলেন, কোনো বাঁধাই শেখ হাসিনাকে থামাতে পারেনি। তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার করেছেন। বাকিদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। একইভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কোনো বাঁধাই ঠেকাতে পারে নি। বিচার হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের অনেকেরই ফাঁসি হয়েছে। এখনো বিচার কার্যক্রম চলছে। বাকিদেরও বিচার হচ্ছে। শেখ হাসিনা যত দিন বেঁচে থাকবেন ততদিন এ দেশে কোনো যুদ্ধাপরাধীদের ঠাঁই হবে না।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার দেশটাকে ধ্বংসের দিকে দিয়ে গিয়েছিল। ওই রাষ্ট্রকে শেখ হাসিনা উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের কাছে রোল মডেল হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। করোনার মধ্যে শেখ হাসিনা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুযোর্গ মোকাবেলা করেছেন। আজকে বাংলাদেশকে ডিজিটাল আধুনিক দেশ গড়ে তুলেছেন। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে  নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস এমপি বলেন, আজ একটি ঐতিহাসিক মূহুর্তে আমরা সবাই এখানে উপস্থিত হয়েছি। আজ এক অপরাজেয় নেত্রীর শুভ জন্মদিন। তিনি ইতিহাসের মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা। বাংলার বীর কন্যা। তাঁর আজ ৭৪ তম জন্মদিন। আজকে এই দিনে চলনবিলের ৫০ লাখ মানুষের পক্ষ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। 

তিনি বলেন, আজকে এই দিনে প্রধানমন্ত্রীর যে ছবিগুলো নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে ; সেগুলোতে জননেত্রী শেখ হাসিনার শিশুকাল থেকে এ পর্যন্ত জীবনের প্রতিটি ধাপের চিত্র ফুটে উঠেছে। 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সানজিদা খানম বলেন, একজন সৎ ও দক্ষ মানুষের আজকের এই দিনে জন্ম হয়েছিল। সেই মানুষটি হলেন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে যেমন আমাদের দেশ স্বাধীন হতো না, তেমনি শেখ হাসিনার জন্ম না হলে আজকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সেই সোনার বাংলাদেশ আমরা পেতাম না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, আমি অনেক গর্বিত। কারণ প্রধানমন্ত্রী আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। দেশে ফিরে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে গিয়ে যা যা করতে হয় তিনি তা করেছিলেন। এছাড়াও শিক্ষার বিষয়টিও তিনি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখেছেন। নারীর ক্ষমতায়ন সহ ‌অনেক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত তাঁর হাত ধরে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক বলেন, বহু গুনের অধিকারী বঙ্গবন্ধুর কন্যা। উনার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি আমরা দেখতে পাই। বঙ্গবন্ধুর অনেক গুন উনার মধ্যে রয়েছে এবং সেইভাবেই তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। রাজনৈতিক প্রজ্ঞা থাকার কারণে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই দেশ এগিয়ে গেছে। 

গৌরব ৭১কে ধন্যবাদ জানিয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, গৌরব’৭১ প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে যে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে, সেটা শুধু একটি প্রদর্শনীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এই ছবিগুলো আরো শত বছর পরেও আর্কাইভ হিসেবে থাকবে। শুধু তাই নয়, সেই সময় ছবিগুলো বর্তমানকে তুল ধরবে ।

ঢাকা অঞ্চলের কর কমিশনার আসাদুজ্জামান বলেন,  শেখ হাসিনা সম্পর্কে বেশি কিছু না বলে শুধু এটুকু বললেই হবে যে,  উনার সুখ্যাতি আজকে দেশ ছেড়ে দেশের বাইরেও পৌছে গেছে। পৃথিবীর সকল রাস্ট্রনায়করা উনার দেশ পরিচালনার দক্ষতায় অভিভূত। আগামী বিশ্বের অর্থনীতিতে যে সকল দেশ নেতৃত্ব দিবে বাংলাদেশ তাদের মধ্যে অন্যতম,  এটা আমার কথা না,  বিভিন্ন দেশি বিদেশি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কথা।  এই অগ্রগতি ধরে রাখতে শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নাই। 

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইকবাল মাহমুদ বাবলু বলেন, শেখ হাসিনা হচ্ছেন মানবতার নেত্রী। একজন প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কলে প্রতিবন্ধী কিশোরীর সাথে কথা বলে, গ্রামের অসহায় মানুষকে নিজের তত্ত্বাবধানে জমি ও বাড়ী নির্মাণ করে দেন। এটা শুধু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দ্বারাই সম্ভব।

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জসিম উদ্দিন ভুইয়া বলেন, দেশের কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষ দুর্নীতি করেন না। যারা চেয়ারে বসে চাটুকারিতা করেন তারাই দুর্নীতি করেন। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সকল দুর্নীতিবাজদের নিশ্চিহ্ন করার শপথ গ্রহণ করেছেন।

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদ সালাউদ্দিন চৌধুরি বলেন,  ১৯৮১ সালে নেত্রী যখন দেশে আসেন তখন তাকে বাসা ভাড়া পর্যন্ত দেয়া হয়নি,  উনার ছেলে মেয়েদের কোন স্কুলে ভর্তি নিতে চায়নি।  সেই জায়গা থেকে আজকে তিনি ৪ বারের প্রধানমন্ত্রী। গভীরভাবে দেখলে এটা সমগ্র জাতির জন্য ঘুরে দাড়ানোর একটি অনুপ্রেরণা।  আজকে তিনি যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সেটাই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা। 
 গৌরব’৭১ আয়োজিত ‘প্রজন্মের প্রার্থনা, শতায়ু হোক শেখ হাসিনা’ স্লোগানে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি এসএম মনিরুল ইসলাম মনি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

এছাড়াও রাতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাত সাড়ে এগারটায় বাংলাদেশ সরকারের ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং গৌরব’৭১ এর যৌথ উদ্যোগে ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে যাত্রা শুরু করেন এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীটি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০/ কেআরএস

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.