Sylhet View 24 PRINT

ডলার আয়ের নেশা, প্রবাসে সুনাম ক্ষুণ্ন করছে লাইকি-টিকটকাররা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২১-০৩-০৩ ২০:৪০:৩০

সিলেটভিউ ডেস্ক :: টিকটক স্মার্টফোনের অ্যাপ। চীনের খ্যাতনামা সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স ২০১৪ সালে সাংহাই থেকে মিউজিক্যাল.লি নামে অ্যাপ তৈরি করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। ২০১৬ সালে চীনে ডুইন নামের অ্যাপ ছাড়ে বাইটড্যান্স। টিকটক ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় বিশ্বব্যাপী।

টিকটকের তুলনায় নতুন লাইকি। সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিগো টেকনোলজি তৈরি করেছে এটি। বিগো ২০১৭ সালের জুলাই মাসে এটি বাজারে ছাড়ে। বিগোর মূল প্রতিষ্ঠান চীনভিত্তিক জয়। বর্তমানে প্রতি মাসে লাইকির সক্রিয় ব্যবহারকারী সাড়ে ১১ কোটি। ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ অ্যাপ ইমো ব্যবহারকারীরা সরাসরি লাইকি ব্যবহার করতে পারেন। আগে এর নাম ছিল লাইক। এখন হয়েছে লাইকি।

শুধু বিনোদনের জন্য বাজারে আসে জনপ্রিয় অ্যাপ টিকটক ও লাইকি। এসব অ্যাপ ব্যবহার করে খুব সহজেই তৈরি করা যায় ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপ, যা মানুষকে হাসাতে পারে, পারে কাঁদাতেও। রাতারাতি সেলিব্রেটি বনে যান একেকজন লাইকার, টিকটকার।

সেসব ভিডিও নিজেদের ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউবে ব্যবহার করে আয় করে নেন শত শত ডলার। শুধু এটুকুতেই সীমাবদ্ধ থাকলে ঠিক ছিল। জনপ্রিয়তা আর ডলার আয়ের লোভে একশ্রেণির তরুণ যেন ক্ষ্যাপা হয়ে উঠেছে। কুরুচিপূর্ণ ভিডিও তৈরি করে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের প্রতিযোগিতায় নেমেছে তারা।

এইতো ক’দিন আগেই বাংলাদেশি চার যুবকের বাংলা গানের তালে কুয়েতি দিনার ছিটিয়ে অশ্লীল নাচের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে কুয়েতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে মনে করছে দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাস।

তাদের সন্ধান চেয়ে কুয়েতে একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে দূতাবাস। ওই চার প্রবাসী বাংলাদেশির নাম-ঠিকানা কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাসে জানানোর জন্য প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে।

এছাড়াও বিদেশে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন হয় এমন কর্মকাণ্ড থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিরত থাকতে এবং কুয়েতের স্থানীয় আইন মেনে চলতে দূতাবাস থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

একটা সময় বিনোদনের আশায় পরিবারের কয়েকজন সদস্য মিলে টিকটক-লাইকি ভিডিও দেখত। কিন্তু বর্তমানে এমন সব অঙ্গভঙ্গি আর অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করে ভিডিও তৈরি করা হয়, যা পরিবারের এক সদস্যের পক্ষে অপর সদস্যের সামনে দেখা সম্ভব নয়।

কুয়েতে বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতারা বলছেন, কুয়েত, সৌদি, দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে মানসিক রোগীর সংখ্যা দিনে দিনে বেড়েই চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে ভাইরাল হতে নিজেকে পরিচিতি করার আশায় বিভিন্ন ধরনের গান, অভিনয় নিয়ে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে ভিডিও তৈরি করে।

তারা বলছেন, শপিংমল, রাস্তা, পার্কসহ বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন দেশের প্রবাসীদের টিকটক ও লাইকি ভিডিও করতে দেখা যায়। তাদের এমন কর্মকাণ্ড দেখে আশপাশের লোকজন বিব্রতবোধ করেন। আবার অনেকেই দেখা যায় দেশের রাজনৈতিক একদলের কর্মীরা অন্যদলের কর্মী নেতানেত্রীদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি ভিডিও করে।

নেতারা আরও বলছেন, ধর্মীয় রীতিনীতি বিকৃত করে ভিডিও তৈরি করতে দেখা যায় অনেককে। টিকটক, লাইকে অ্যাপের মাধ্যমে দেশকে উপস্থাপন করার কিছুই নেই। বরং তারা দেশের শিল্প ও সংস্কৃতি বিকৃত করছে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করছে। মাদকাসক্তদের মতো টিকটক লাইকি ব্যবহারকারীরা ভাইরাল হওয়ার নেশায় কোথায় কী করছে? সেটা বোঝার বিবেক-বুদ্ধিটুকুও হ্রাস পেয়েছে তাদের।



সিলেটভিউ২৪ডটকম/ জাগো নিউজ /জিএসি-১৭

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.