আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং
সিলেটভিউ ডেস্ক :: চিকিৎসকদের স্পষ্ট অক্ষরে বড় হরফে ‘পড়ার উপযোগী করে’ ব্যবস্থাপত্র লেখার বা ছাপা ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ৩০ দিনের মধ্যে সার্কুলার জারির নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
সেই সঙ্গে রোগীর ব্যবস্থাপত্রে ওষুধের জেনেরিক নাম লিখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি হয়েছে।
স্বাস্থ্যসচিব, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সেক্রেটারিসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে হবে।
আর সার্কুলার জারি হয়েছে কিনা তা জানিয়ে আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিএমডিসির রেজিস্ট্রারকে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলেছে আদালত।
এক রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেয়।
‘দুর্বোধ্য ব্যবস্থাপত্র: ভুল ওষুধ গ্রহণের ঝুঁকিতে রোগীরা’ শিরোনামে গত ১৭ ডিসেম্বর বণিক বার্তায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ গত সপ্তাহে হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করে।
সোমবার এই আবেদনের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যবস্থাপত্রে চিকিৎসকের দুর্বোধ্য হাতের লেখার কারণে একদিকে রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে, অন্যদিকে লেখা পড়তে না পেরে ফার্মেসি থেকে প্রায়ই ভুল ওষুধ গছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে রোগীরা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন।
অভিযোগ রয়েছে, অনেক চিকিৎসক ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার বিনিময়ে ব্যবস্থাপত্রে ওই নির্দিষ্ট কোম্পানির তৈরি ওষুধের নাম লেখেন। এতে করে রোগীরা কখনও বেশি দামে আবার কখনও মানসম্মত নয়- এমন ওষুধ কিনতে বাধ্য হন।
এ কারণে পাশের দেশ ভারতে রোগীর প্রেসক্রিপশনে বড় হরফে ওষুধের জেনেরিক নাম (একটি ওষুধের মূল কেমিকেল কম্পোজিশনের নাম) লেখার নিয়ম থাকলেও বাংলাদেশে তেমন কোনো আইন নেই।
এ বিষয়ে হাই কোর্ট গতবছর ফেব্রুয়ারিতেও একটি রুল জারি করেছিল। ব্যবস্থাপত্রে ওষুধের জেনেরিক নাম স্পষ্ট করে লিখতে বিধি তৈরির নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছিল ওই রুলে।
ওই রিটকারীর বক্তব্য ছিল, চিকিৎসকরা ব্যবস্থাপত্রে জেনেরিক নাম না লিখে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের দেওয়া ব্র্যান্ড নাম লেখায় রোগীরা সেই কোম্পানির ওষুধ কিনতে বাধ্য হন। প্রেসক্রিপশনে জেনেরিক নাম থাকলে রোগী ফার্মেসিতে ওই নাম দেখিয়ে নিজের পছন্দ অনুযায়ী যে কোনো কোম্পানির ওষুধ কিনতে পারবে।