আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

খুলছে সেই আপন জুয়েলার্স

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৮-১১ ০০:২৮:৩৪

আশিক আহমেদ :: স্বর্ণালঙ্কারের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হওয়ার ঘটনায় চার মাস বন্ধ থাকার পর খুলতে শুরু করেছে আপন জুয়েলার্সের বিক্রয়কেন্দ্রগুলো। বন্ধ হয়ে যাওয়া পাঁচটি বিক্রয়কেন্দ্রের মধ্যে গুলশানের সুবাস্ত টাওয়ারের প্রধান বিক্রয়কেন্দ্র, ধানমন্ডির সীমান্ত সীমান্ত স্কয়ার এবং উত্তরায় অলঙ্কার কেনাবেচা আবার শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আর মৌচাক মার্কেট ও গুলশান ডিসিসি মার্কেটের বিক্রয়কেন্দ্রটিও খোলার প্রস্তুতি চলছে।

বুধবার সকালে আপন জুয়েলার্সের মৌচাক মার্কেট শাখার শোরুমে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে গোছগাছের কাজ চলছে। শুক্রবার থেকেই এটি আবার চালু করার প্রত্যাশায় কর্মীরা।

আপন জুয়েলার্সের মৌচাক শাখার ব্যবস্থাপক রিয়াজ বলেন, ‘আমরা এখন গোছগাছ করছি। আগামী শুক্রবার থেকে ইনশাল্লাহ দোকান খুলব।’

আপন জুয়েলার্সের একাধিক কর্মকর্তা জানান, প্রায় সপ্তাহখান ধরেই সীমান্ত স্কয়ার ও উত্তরার বিক্রয়কেন্দ্রটি খোলা হয়েছে। গুলশানের সুভাস্তু টাওয়ারের প্রধান বিক্রয়কেন্দ্রটি খুলেছে দুই-তিনদিন আগে। আর মৌচাকের মতই ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) মার্কেটের বিক্রয়কেন্দ্রটি খুলছে শুক্রবার।

সীমান্ত স্কয়ার শাখার শোরুমটির এক কর্মকর্তার নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘সপ্তাহখানেক আগেই আমাদের শোরুম খোলা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি তার মুঠোফোনটি রিসিভ করেননি।

গত ২৮ মার্চ রাতে রাজধানীর বনানীর 'দ্য রেইনট্রি' হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে দুই তরুণীর ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগে মামলার পর বিপাকে পড়ে আপন জুয়েলার্স। ৬ মে এই প্রতিষ্ঠানের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদকে প্রধান আসামি করে মামলার পর আপন জুয়েলার্সেও অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।

গত ১৪ ও ১৫ মে রাজধানীর গুলশান ডিসিসি মার্কেট, গুলশান এভিনিউ, উত্তরা, সীমান্ত স্কয়ার ও মৌচাকে আপন জুয়েলার্সের বিক্রয় কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে সবগুলোই সিলগালা করে দেয় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। জব্দ করা হয় সাড়ে ১৩ মণ সোনা ও ৪২৭ গ্রাম হীরা।

এরপর জব্দ করা এসব অলঙ্কারের বৈধ কাগজপত্র চেয়ে আপনের মালিকদেরকে একাধিকবার তলব করে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। কিন্তু আপন পরিবারের পক্ষ থেকে যেসব কাগজপত্র দেয়া হয়েছিল, সেগুলোকে স্বর্ণের বৈধতার প্রমাণ হিসেবে মেনে নিতে নারাজ ছিল শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। 

শুল্ক গোয়েন্দা দপ্তর জানায়, আপন জুয়েলার্সের দেওয়া ১৮২ জনের তালিকার মধ্যে ৮৫ জন গ্রাহককে ২ দশমিক ৩ কেজি স্বর্ণালংকার অক্ষত অবস্থায় ফেরত দেওয়া হয়েছে, যা ওই সব গ্রাহক অলংকার তৈরি ও মেরামতের জন্য দিয়েছিলেন। বাকি সোনার বিষয়ে আপন জুয়েলার্স কোনো বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি।

চলতি বাজার মূল্যে এসব স্বর্ণের দাম দাম প্রায় ১৭৯ কোটি টাকা বলে শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান। এসব স্বর্ণ গত ৪ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়।

জব্দ করা এসব অলঙ্কার ফেরত চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়েছে আপন জুয়েলার্সের পক্ষ থেকে। তারা বলছে, বাংলাদেশে স্বর্ণ আমদানির কোনো নীতিমালা নেই। অন্যরা যেভাবে ব্যবসা করে, আপনও সেভাবেই করে। কাজেই আপনের স্বর্ণ অবৈধ হলে অন্য ব্যবসায়ীদের স্বর্ণও অবৈধ।

আপন জুয়েলার্সের স্বর্ণালঙ্কার জব্দের পর বাংলাদেশে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। আর রাজস্ব বোর্ড এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক করে স্বর্ণ আমদানির নীতিমালা হওয়া আগে এই ধরনের অভিযান বন্ধের দাবি জানান হয়। পরে এনবিআর তাদের দাবি মেনে নেয়।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সহ সভাপতি সত্য রঞ্জন ব্রহ্ম বলেন, ‘আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুমের মধ্যে কিছু খুলে দিয়েছে আবার কিছু খোলার অপক্ষোয় রয়েছে।’
-ঢাকাটাইমস

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন