Sylhet View 24 PRINT

সাইফুর রহমান কখনো দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেননি : মির্জা ফখরুল

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৯-০৭ ০১:২৯:১৮

সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী সাইফুর রহমানের কথা স্বরন করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সাইফুর রহমানরা থাকলে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হতো না। সাইফুর রহমান সাহেবরা দেশ প্রেমিক ছিলেন, তারা দেশকে ভালবাসতেন। নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য তারা দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দেননি, দেশ বিক্রি করে দেননি। সাইফুর রহমান সাহেবরা থাকলে ব্যাঙের ছাতার মতো ব্যাংক গড়ে উঠতো না। দেশে লুটেরা অর্থনীতি চালু হতো না।

তিনি বলেন, সাইফুর রহমান থাকলে দেশের টাকা জমা দিয়ে ৩৭ লক্ষ টাকা দিয়ে পর্দা কেনা হতো না। পর্দার কাছে বালিশ তো হেরে গেছে।

সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য এম সাইফুর রহমানের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত স্মরণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এছাড়াও আরও বক্তব্য রাখেন-বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী কামাল ইবনে ইউসুফ, শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ন মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সিলেটের  মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রমুখ।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে যখন দুর্ভিক্ষ লেগে গিয়েছিল, যখন খাদ্য উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল,মানুষের অভাব এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে পরনের কাপড়ে ঠিকমতো পেত না। এখনো মনে আছে এই দুর্ভিক্ষের সময় কুড়িগ্রামে বাসন্তী তার লজ্জাস্থান ঢাকার জন্য একটি কাপর পাননি। সেই অর্থনীতিকে পাল্টে দিয়ে আজকে যে সম্ভাবনাময় অর্থনীতি বাংলাদেশে তৈরি করেছে এর ভিত্তি স্থাপন করেছে এই সাইফুর রহমান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে। এটা হল বাস্তবতা। এটা তারা অবলীলা অস্বীকার করছে। এটা আমার মনে আছে ওই সময় মাওলানা ভাসানী আওয়ামী লীগের নাম দিয়েছিলেন নীতির বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে পাল্টে দেয়া, বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রাকে পাল্টা দেয়া, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পাল্টে দেয়ার কাজ শুরু করেছিলেন আমাদের সাইফুর রহমান। মির্জা ফখরুল বলেন, এম সাইফুর রহমান একজন অত্যন্ত মেধাবী পেশাজীবী ছিলেন। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিণত হয়েছিলেন। মানুষের প্রয়োজন ও যুগের প্রয়োজনের ভিত্তিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমষ্টিগত শৃঙ্খলার মধ্যে উনি নিয়ে এসেছিলেন। একটা ডিসিপ্লিন ইকোনমিক তৈরি হয়ে হয়েছিলো। এখানে চুরি-চামারি ইচ্ছা করলেই করা যেত না। এখানে ইচ্ছা করলেই কেউ পুকুর চুরি চুরি করার সুযোগ পেত না। ১০ হাজার কোটি টাকার প্রোজেক্ট ৩০ হাজার কোটি টাকা করার কোনো সুযোগ ছিল না। তিনি এতটাই দেশপ্রেমিক ছিলেন যে অনেকেরই মনে আছে তখন সারপ্রাইজ ক্রেজি প্রজেক্ট তিনি বাতিল করে দিয়েছিলেন।

বিএনপি'র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এম সাইফুর রহমানের মত স্ট্যাটাসের একজন নেতা আন্দোলন সংগ্রামের সময় বাসায় থেকে নির্দেশনা দেবেন আর অন্যরা রাস্তায় আন্দোলন করবে, পুলিশ ফেস করবে এটাই স্বাভাবিক ছিল। তার মত রাজনীতিকের কাছ থেকে আমরা এমনটাই আশা করেছিলাম। কিন্তু এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় এমন কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই যেখানে তিনি সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না। ওনার স্ট্যাটাস থেকে উনি সাধারণ একজন কর্মী হিসেবে সব সময় রাজপথে ছিলেন এটা একটি বিরল ঘটনা।

স্বাধীনতার পরে মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য, বাণিজ্য উপদেষ্টা থেকে মন্ত্রী হয়ে আসা এম সাইফুর রহমান তিনি রাস্তায় নেমে রাজনীতি করবেন, পুলিশের টিয়ারশেলের সম্মুখীন হবেন এটা তার জন্য রাজনীতিবিদ হিসেবে একটি বিরল ঘটনা। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, অর্থমন্ত্রী হিসেবে সাইফুর রহমানকে নিয়ে বলতে গেলে বলে শেষ করা যাবে না। সাইফুর রহমান সাহেব যখন ভ্যাট প্রথা চালু করার কথা বললেন তখন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে ছিল। আওয়ালীগ তখন হরতাল করেছিল কিন্তু তখন অনেকেই বলেছিলেন যে একজন সাহসী অর্থমন্ত্রী হিসেবে তিনি ভ্যাট চালু করার সাহস করেছিলেন। আজকে ভালো করে চিন্তা করে দেখুন আজকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ওই ভ্যাটের উপর নির্ভর করে। আজকে যে বাজেট হয় সে বাজেটের টাকা তো জনগণের কাছ থেকে আসে। এম সাইফুর রহমান ও আমরা তো একটি নির্দিষ্ট কমিউনিটির উপর ভ্যাট আরোপ করেছিলাম। কিন্তু আজকে যারা সরকার চালাচ্ছে তারা বুঝতে পেরেছে বাজেটের পরিধি বৃদ্ধি করতে হলে ভ্যাটকে কিভাবে সম্প্রসারণ করা যায় যা বাংলাদেশের মানুষ হারে হারে টের পাচ্ছে। আজকে দেশের সর্বনিম্ন যে গরীব মানুষটি সেও ভ্যাটের আওতায় চলে গেছেন।

বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ২৯ তারিখে রাতে ভোট ডাকাতি করায় বিএনপির ভরাডুবি হয়নি আওয়ামী লীগের হয়েছে। আওয়ামী লীগ আর কখনো জনগণের কাছে যেতে পারবে না। তিনি বলেন, সরকার সব লুট করেছে এখন হাত বাড়িয়েছে আমানতের দিকে। দেখেন কয়দিন পর আপনাদের জমানো আমানতে সরকার হাত দেয় কিনা।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.