আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

আজ যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, জাতীয় কংগ্রেস ২৩ নভেম্বর

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১১-১১ ১১:০৯:০৫

সিলেটভিউ ডেস্ক :: আজ ১১ নভেম্বর বাংলাদেশের প্রথম যুব সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৭২ সালের এইদিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে শেখ ফজলুল হক মনির নেতৃত্বে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক যুব কনভেশনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা লাভ করে সংগঠনটি।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার ভোর ৬টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা, সকাল সাড়ে ৯টায় বনানী কবরস্থানে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মনিসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতেহা পাঠ এবং মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

সর্বশেষ ২০১২ সালের ১৪ জুলাই বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ষষ্ঠ জাতীয় কংগ্রেসে চেয়ারম্যান পদে ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক পদে মো. হারুনুর রশিদ নির্বাচিত হন। তবে সম্প্রতি ক্যাসিনো অভিযানে সবচেয়ে আলোচিত এই সংগঠনটির নতুন রূপ পেতে যাচ্ছে আগামী ২৩ নভেম্বর। এদিন আওয়ামী যুবলীগের জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠেয় এই কংগ্রেসে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত শুদ্ধি অভিযানে সবচেয়ে বড় ঝড়টা যাচ্ছে যুবলীগের ওপর দিয়ে। কয়েকদিন আগেও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী বিবেচিত সংগঠনটির এখন অনেকটা লণ্ডভণ্ড অবস্থা। চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার হয়েছেন তাদের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদকসহ আত্মগোপনে গেছেন বেশ কয়েকজন। খোদ সংগঠনটির চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীও সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে নিজেকে আড়ালে রেখেছেন।

এরই মধ্যে অনানুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনের প্রেসিডিয়াম বৈঠক ডাকেন সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ চৌধুরী। কিন্তু চেয়ারম্যানের আপত্তিতে তাও পরে স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনের প্রেসিডিয়ামের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবার সাধারণ সম্পাদক মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে প্রেসিডিয়াম সদস্যদের এ বিষয়ে অবহিত করেছিলেন।

কিন্তু সেই বৈঠক হয়নি। যুবলীগ সূত্র জানায়, মূলত চেয়ারম্যানের আপত্তির কারণেই বৈঠকটি বাতিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, মঙ্গলবার সাধারণ সম্পাদক বৈঠকের বিষয়ে আমাদের জানিয়েছিলেন।

কিন্তু পরে চেয়ারম্যানের নির্দেশে বৈঠক স্থগিত করার কথা আমাদের জানিয়েছেন। যুবলীগের জাতীয় কংগ্রেসের প্রস্তুতি বা পরবর্তী কার্যক্রম কী হবে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সাধারণ সম্পাদককে বলেছি, আমরা চাই নেত্রীর (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সঙ্গে দেখা করতে। ওনার দিকনির্দেশনা নিয়েই আমরা কংগ্রেসের প্রস্তুতি বা পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাই।

জানা যায়, যুবলীগের সর্বশেষ কমিটি হয় ২০১২ সালের ১৪ জুলাই। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান ওমর ফারুক চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক হন হারুন-অর-রশিদ। ১৪৯ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটিতে চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর অনেকটাই একচ্ছত্র অধিপত্য ছিল। সংগঠনে তার কথাই ছিল শেষকথা। আওয়ামী লীগের একমাত্র সংগঠন, যেখানে কর্মীরা তাদের সংগঠনের প্রধানকে ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করতে হয়।

এদিকে ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে অন্য সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি গঠন করা হলেও যুবলীগের আর সম্মেলন হয়নি। যুবলীগের দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, দীর্ঘদিন একক অধিপত্য থাকা যুবলীগ চেয়ারম্যানের ইন্ধনেই বেপরোয়া হয়ে উঠে সম্রাট-খালেদরা। এমন অবস্থায় যুবলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংগঠন নিয়ে চরম হতাশা সৃষ্টি হয়। তবে শুদ্ধি অভিযানের পর দৃশ্য বদলাতে শুরু করেছে। ওমর ফারুক চৌধুরী গত কয়েকদিনে একবারও যাননি ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে।

এদিকে এরই মধ্যে দলের সিনিয়র নেতাদের সামনে কেন্দ্রীয় কমিটির একজন নেতা হামলার শিকার হয়েছেন। তিনি হলেন নাজমুল হাসান জুয়েল। তার অভিযোগ- সম্প্রতি সরদার মোহাম্মদ আলী মিন্টুর নেতৃত্বে একদল ‘বহিরাগত’ তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। যুবলীগ নেতা নামধারী সরদার মোহাম্মদ আলী মিন্টুর দলীয় কোনো পদ-পদবি বর্তমানে নেই। তিনি চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে আটক জি কে শামীমের অন্যতম সহযোগী।

হামলার সময় যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান, ফারুক হোসেন ওরফে বোমা ফারুক, মাহবুবুর রহমান হিরন, বেলাল হোসেনসহ কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েকজন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উপস্থিত ছিলেন। নেতাদের কাছে বিচারের কোনো আশ্বাস পাননি বলেও দাবি তার।

জানা গেছে, গুরুতর আহত অবস্থায় রোববার জুয়েলকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন জুয়েল হাসপাতাল ছাড়েন। মঙ্গলবার জুয়েলের শরীরিক অবস্থার অবনতি হলে তিনি আবারও একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ বিষয়ে জুয়েল যুগান্তরকে বলেন, নেতাদের সামনে বহিরাগতদের হাতে মার খেলেও প্রতিবাদ বা বিচার দূরে থাক, কেউ তার খোঁজ নেননি।

তার আক্ষেপ- সবসময় রাজপথে থেকেছি, ভবিষ্যতেও থাকতে চাই; কিন্তু দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বহিরাগতদের হাতে মার খেয়ে বিচার পাব না তা মানতে কষ্ট হচ্ছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সরদার মোহাম্মদ আলী মিন্টু বুধবার সন্ধ্যায় যুগান্তরকে বলেন, ঘটনার সময় আমি অফিসের ভেতরে ছিলাম। বাইরে পোলাপান মরামারি করেছে। তখনই সিনিয়র নেতারা সবাইকে সতর্ক করেছিলেন।

সৌজন্যে :  যুগান্তর

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১১ নভেম্বর ২০১৯/মিআচৌ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন