আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

হামলার পর সংবাদ সম্মেলনে যা বললেন মির্জা ফখরুল

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৬-১৮ ১৫:৫১:৩০

সিলেটভিউ ডেস্ক :: পাহাড় ধসের দুর্গতদের দেখতে রাঙামাটি যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় হামলার শিকার হওয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে রবিবার বেলা ১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী রক্তাক্ত হয়েছেন। আমি আঘাত পেয়েছি, আরও কয়েকজন আঘাত পেয়েছেন। কে কতটুকু আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন তা বড় কথা নয়। আসল কথা হচ্ছে এই আঘাত গণতন্ত্রের প্রতি আঘাত। জাতীয়বাদী রাজনীতির প্রতি আঘাত, মুক্তবুদ্ধি ও সুস্থ চিন্তার প্রতি আঘাত। এ আঘাত যারা সরকারের খারাপ কাজের প্রতিবাদ করেন তাদের প্রতিও আঘাত। এই আক্রমণের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের চরিত্র আরও বেশি করে উম্মোচিত হয়েছে।’

ঘটনার বর্ণনায় বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘পাহাড় ধসে নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের নির্দেশে আমরা ঢাকা থেকে চার জনের একটি দল চট্টগ্রামে এসেছি। চট্টগ্রাম বিমান বন্দর থেকে আমরা রাঙামাটির উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছিলাম। রাস্তায় জানতে পারলাম রাঙামাটির যে রাস্তায় ভাঙন শুরু হয়েছিল সেটি ভেঙে গেছে। ওই রাস্তা হয়ে রাঙামাটি যাওয়া সম্ভব নয়। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম কাপ্তাই লেক হয়ে নদী পথে রাঙামাটি পৌঁছাবো। যে কারণে বিমানবন্দর থেকে সরাসরি কাপ্তাই যাওয়ার জন্য বের হয়েছি। ইছাখালী বাজারে যেতে না যেতেই মুশলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টি ঠেলে কিছুদূর যেতেই হঠাৎ ৩০-৪০ যুবক লাঠিসোটা, হকস্টিক, রামদা ও বড় বড় পাথর নিয়ে আমাদের গাড়িতে আক্রমণ করলো। প্রথমেই তারা গাড়ি সামনের গ্লাসে পাথর ছুঁড়ে মারে। এরপর অনবরত তারা হকস্টিক, লাঠিসোটা দিয়ে ভাঙচুর চালায়। এতে আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী রক্তাক্ত হয়েছেন, মেজর জেনারেল (অব) রহুল আলম চৌধুরী আহত হয়েছেন, আমি নিজেও আহত হয়েছি।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবসময় দাবি করে তারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে। আসলে তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, ভিন্নমতেও তাদের বিশ্বাস নেই। সহনশীলতা বলতে তাদের কিছুই নেই। এভাবে আক্রমণ আমাদের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো এবং অবিশ্বাস্য। আমাদের পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের ওপর যদি এ ধরনের হামলা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা তা সহজেই অনুমেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তো সেখানে জনসভা অথবা পার্টির মিটিং করতে যাচ্ছিলাম না। আমরা দুর্গত ও পাহাড় ধসে নিহতদের পরিবারকে পার্টির পক্ষ থেকে সমবেদনা জানাতে যাচ্ছিলাম। এই আক্রমণের একমাত্র প্রতিবাদ তখনই হবে যখন আমরা জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করে এই ফ্যাসিস্ট, অপশক্তিকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকের এ সুনির্দিষ্ট আক্রমণ কোথা থেকে আসতে পারে আপনারা তদন্ত করে দেখবেন। আওয়ামী লীগের লোকেরা এটা করেছে। এটা কোথা থেকে আসতে পারে আপনারা সেটা ভালো করে বলতে পারবেন।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটি একটি অবিশ্বাস্য ঘটনা। কোনও সভ্য দেশে এ ধরনের আক্রমণ হতে পারে না। আমাদের রাজনীতি করতে দেবেন, এখন ত্রাণও দিতে পারবো না।’

তিনি বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের মহাসচিব ও জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দের ওপর যদি আক্রমণ হয় তাহলে আর বাকি থাকে কী? এর পরে কি আর রাজনীতি থাকে? রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে এ সরকার ক্ষমতায় টিকে রয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন  দলের ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) রহুল আলম চৌধুরী, কেন্দ্রীয়  সাংগঠনিক সম্পাদক মাহববুর রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করসহ নেতাকর্মীরা।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন