আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় আইনিভাবে মোকাবিলা করবে ১৪ দল

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৮-১৩ ২০:০৬:১৯

নিউজ ডেস্ক :: ষোড়শ সংশোধনী  বাতিলের রায়কে অপ্রাসঙ্গিক, অগ্রহণযোগ্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যায়িত করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। ক্ষমতাসীন জোটটি এই রায়কে আইনি ও রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার ঘোষণা দিয়েছে। রবিবার বিকেলে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এক বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ১৪ দলের শীর্ষ নেতারা এ ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে ১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘বৈধ সংসদ, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু নিয়ে রায়ে যে পর্যবেক্ষণ রয়েছে, তা চৌদ্দ দলের পক্ষ থেকে প্রত্যাখ্যান করছি। একইসঙ্গে এই রায় বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। আমরা এটি আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করব।’ তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে দেশের মানুষ জানে। বঙ্গবন্ধু যে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তা চন্দ্র-সূর্যের মতোই সত্য। এটা নিয়ে রায়ে যা বলা হয়েছে, তা জনগণ মেনে নেবে না, ক্ষমা করবে না। ’

জাসদের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘সর্বোচ্চ আদালতের রায় হয়ে যাওয়ার পর তা জনগণের সম্পদ হয়ে যায়। সে সম্পদ নিয়ে আলোচনা সমালোচন হতে পারে। তা কোনোভাবেই আদালত অবমাননা নয়, অন্যায় নয়। যারা তা বলেন বালখিল্য আচরণ করেন। এ রায়ে জাতীয় সংসদকে কটাক্ষ করা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে খাটো করা হয়েছে। সুতরাং এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বিষয় বহির্ভূত ও অপ্রাসঙ্গিক। মুক্তিযুদ্ধ ও জনগণের শক্তিকে ম্লান করার জন্যই এ রায় দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী থাকলেও ক্ষতি ছিল না বরং বিচারপতিদের কেউ একে অন্যের প্রতি অবিচার করলে তার সঠিক বিচারের সুযোগ ছিল। সুতরাং এ রায় বাতিল হওয়া জরুরি।’

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, ‘এ রায়ে সংসদকে অবমাননা করা হয়েছে। আমি জানি না, মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রধান বিচারপতি কোথায় ছিলেন। আসলে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তিনি জানেন না বলেই দুঃসাহস দেখিয়েছেন।  বিএনপি-জামায়াত যেন চক্রান্ত করতে পারে, সে সুযোগ করে দিয়েছেন।’

ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি বলেছেন, এ রায় নিয়ে রাজনীতি করা অনুচিত। কিন্তু দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে রায়ে কথা বলা হয়েছে, তা উপেক্ষা করে  থাকা অনুচিত কিনা ভেবে দেখতে হবে। সুতরাং আমরা কোন বোধ নিয়ে এগুবো, তা নিয়ে ভাবতে হবে। আমরা মনে করি, আমাদের ইতিহাসের প্রকৃত ধারায় ফিরে আসতে হবে, রায়কে পুনর্বিবেচনা করতে হবে।’

জাতীয় পার্টি (মঞ্জু) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘এই রায়ে সারাদেশ সংক্ষুব্ধ। সুতরাং রায় বাতিল হোক।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘এই রায়ে জনগণের অধিকারকে হরণ করা হয়েছে। সংবিধানে আছে সব কিছুর মালিক জনগণ। সুতরাং জনগণের প্রতিনিধিদের হাতেই ক্ষমতা থাকবে—এটাই স্বাভাবিক। বলা যায়, এই রায় সংবিধান পরিপন্থী। আর ইতিহাসের মীমাংসিত বিষয় মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু নিয়ে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, এতে স্বাধীনতাবিরোধীদের উস্কানি দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে অমীমাংসিত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সুতরাং এই রায় প্রত্যাখ্যান করছি।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল প্রমুখ।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ১৩ আগস্ট ২০১৭/ ডেস্ক/ ইআ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন