আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

‘বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কবর হয়েছে’

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৮-২৭ ১৫:০৮:২৫

সিলেটভিউ ডেস্ক ::    বাংলাদেশ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কবর হয়েছে। তাই এখানে কেউ হাত দিতে চাইলে তার হাত পুড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

রবিবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কাতারের রাষ্ট্রদূত আহমেদ মোহামেদ আল দেহিমী। সাক্ষাৎ শেষে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধান বিচারপতি ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করেছেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার রায় দিলে তা আবারও ফিরবে কিনা—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কবর হয়েছে। এখানে কেউ হাত দিতে চাইলে হাত পুড়ে যাবে।’

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করায় প্রধান বিচারপতিকে চাপ দেওয়া হচ্ছে কিনা—এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রায়ে প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণে অনেকে বিব্রত। ফলে রায় নিয়ে দেশে যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে তার সুরাহা তিনি নিজেই করতে পারেন। অপ্রাসঙ্গিক কথাগুলো তিনি নিজেই বাদ দিতে পারেন। আগামী অধিবেশনে এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরবো। এ বিষয়ে আমরা হোম ওয়ার্ক করছি।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল-হানিফ কম কথা বলার জন্য সম্প্রতি প্রধান বিচারপতিকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। এটা প্রধান বিচারপতির প্রতি সরকারের নমনীয়তা কিনা- জানতে চাইলে তোফায়েল আহমেদ বলেন,  ‘তার (মাহবুব-উল-আলম হানিফ) বক্তব্য প্রধান বিচারপতির প্রতি নমনীয়তার কোনও লক্ষণ নয়। প্রধান বিচারপতি বাস্তবতা উপলব্ধি করেছেন বেশি কথা বললে সমস্যা হয়। কেউ যদি নিজে থেকে ভুল বুঝতে পারেন তাহলে তাকে ধন্যবাদ দিতে হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘মওদুদ আহমেদ ও ফখরুল ইসলাম আলমগীররা একজনকে প্রধান উপদেষ্টা করবেন বলে বিচারপতিদের অবসরে যাওয়ার বয়স ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ বছর করেছিলেন। তারা মূলত সামরিক বাহিনীর পক্ষ নিয়েছেন। তাদের যদি লজ্জা থাকে তাহলে তারা বিএনপি করতেন না। তারা এ রায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতেন। কারণ এ রায়ের পর্যবেক্ষণে তাদের নেতা জিয়াউর রহমান অবৈধ দখলদার বলা হয়েছে। তারপরও তারা প্রধান বিচারপতির রায়ের পক্ষে। প্রধান বিচারপতি তার পর্যবেক্ষণে সংসদীয় গণতন্ত্রকে অপরিপক্ক বলায় আমরা ওই রায়ের পর্যবেক্ষণের বিরোধিতা করছি। কিন্তু মওদুদ আহমদরা সামরিক সরকারের তল্পিবাহক। তারা সব দল করেছেন। তাদের লজ্জা থাকলে এ মুহূর্তে পদত্যাগ করতেন।’

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘রায় নিয়ে আমরা প্রায় ১০দিন কোনও কথা বলিনি। কিন্তু বিএনপি নেতারা কথা বলেই যাচ্ছেন। তবে আমি নিশ্চিত মওদুদ আহমদ ও ফখরুল ইসলাম আলমগীররা এ রায় ও রায়ের পর্যবেক্ষণ পড়েননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দল ও প্রধানমন্ত্রী চাইলে জনগণের জন্য অনেক কিছুই করতে পারেন। আওয়ামী লীগ পোড় খাওয়া দল। এ দলের প্রধান সবকিছু হারিয়ে জনগণের জন্য কাজ করছেন।’

আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘কোনও বিষয়ে কথা বলার আগে জানতে হবে, আমি কে?’

খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘নিজের নামে বাড়ি বানিয়ে, ভাইয়ের নামে ট্যাক্স দেওয়া অপরাধ। এ অপরাধ কেউ করলে তার বিচার হবে এটাই স্বাভাবিক। পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশেই রাষ্ট্রপতি ছাড়া সবার অপরাধ তদন্ত করা হয়। তবে রাষ্ট্রপতির পদ ছাড়ার পর তার ‍বিরুদ্ধেও তদন্ত করা যায়।’

ড. কামাল হোসেনকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘‘আমি’ ও ‘আমরা’ বলার এখতিয়ার একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এবং তার পরিবর্তে এখন শেখ হাসিনার। এ কথা বলার মতো জায়গা তৈরি করতে হয়। কামাল হোসেনরা ‘আমি’ ও ‘আমরা’ নিয়ে কথা বলতে পারেন না।’’

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর্যবেক্ষণ থেকে কিছু বিষয় এক্সপাঞ্চ করার আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘এ বিষয়ে সরকারের মুখপাত্র আইনমন্ত্রী। তিনিই পদক্ষেপ নেবেন।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৭ আগস্ট ২০১৭/ডেস্ক/এসডি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন