Sylhet View 24 PRINT

সবার মুখে মুখে রিয়াদের নেতৃত্ব আর নাইম-সৌম্যের প্রশংসা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১১-০৪ ১৮:২২:৩৩

সিলেটভিউ ডেস্ক :: খেলা যেহেতু শেষ ওভার পর্যন্ত গড়িয়েছে, তাই জয়ের নায়ক, স্বার্থক রূপকার ও স্থপতি ভাবা হচ্ছে মুশফিকুর রহীমকেই; কিন্তু আসলে কি তাই?

কাল ৩ নভেম্বর রোববার দিল্লিতে ভারত বধের স্বার্থক রূপকার কি মুশফিক একা? পাশাপাশি তরুণ নাইম শেখ, সৌম্য সরকার আর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নামও চলে আসছে। অনেকেরই মত তারাও এই ঐতিহাসিক জয়ের অন্যতম রূপকার।

শুরু করা যাক নাইম শেখকে দিয়ে। ফরিদপুরের ২০ বছরের নাইম শেখ কাল যে আহামরি কিছু খেলেছেন, তা নয়। রান ২৮ বলে ২৬। স্ট্রাইকরেট ৯২.৮৫। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বেশ কম। তাও পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভার পুরো ব্যাটিং করার পরও এমন স্ট্রাইকরেট রীতিমত বেমানান।

কিন্তু এরপরও কালকের জয়ে এ তরুণ ওপেনারের ভুমিকার প্রশংসাও হচ্ছে। কারণ, ভারতীয় বোলারদের বিপক্ষে প্রথম সাহসী শট খেলতে শুরু করেছিলেন তিনিই।

ভারতীয় পেসার দিপক চাহারের লেগ স্টাম্পে পিচ পড়া ওভার পিচ ধরনের ডেলিভারিকে পায়ের পাতার ওপর ভর করে ডিপ মিডউইকেটের ওপর দিয়ে শূন্যে ভাসিয়ে বিশাল ছক্কা আর পেসার চাহারের অফ-স্ট্যাস্পের বাইরে আরেকটি ওভার পিচ ধরনের ডেলিভারিকে কভার- এক্সটা কভার দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ভারতীয় বোলিংকে নাড়া দিয়েছেন নাইম।

তামিম নেই। কাকে খেলানো যায় ওপেনার হিসেবে? তামিমের সাহস আর তেজী-খুনে মানসিকতা নেই কারো। কাছাকাছি সাহস আর তেজ আছে নাইম শেখের। তাই তাকেই নেয়া। অন্যতম নির্বাচক হাবিবুল বাশারের চোখে বর্তমান প্রজন্মের টপ অর্ডারদের মধ্যে নাইমই সবচেয়ে সাহসী।

সামর্থ্য যেমনই থাকুক মাঠে ভয়-ডর কম নাইমের। আলগা বল পেলেই ব্যাস। নাইম শেখ তেড়েফুঁড়ে শটস খেলার চেষ্টা করেন। কাল টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের শুরুতে কিছু সাহসী শট খেলে নাইম শেখ সে সত্যই জানান দিয়েছেন। বলে দিলেন, শুধু ঘরেরর ক্রিকেটে নয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও বড় শর্টস খেলার আমার সাহস আর সামর্থ্য আছে আমার।

শেষ পর্যন্ত লেগস্পিনার চাহালের বলে তুলে মারতে গিয়ে আউট হলেও নাইম আর সৌম্য সরকারের দ্বিতীয় উইকেটের জুড়ে দেয়া ৪৬ রানের পার্টনারশিপটি দিল্লি ম্যাচের আলোকে অনেক বড়। নাইমের সাথে সৌম্য সরকারও রোববার সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন নিজেকে মেলে ধরতে। দলের সাফল্যে অবদান রাখতে।

নিজেকে একদমই খুঁজে পাচ্ছিলেন না সৌম্য। গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে টি-টোয়েন্টি ম্যাচের পারফরমেন্স চরম খারাপ তার। তাকে আর ২০ ওভারের ম্যাচে খেলানো হবে কি না? সে চিন্তাও চলে এসেছিল। ২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার শেরে বাংলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩২ বলে ৫১ রানের ইনিংসটিই শেষ।

এরপর রোববারের আগে সর্বশেষ ১৬ ম্যাচে রান নেই। রীতিমত রান খরা সৌম্যর ব্যাটে। ওই ইনিংসগুলোয় একবারের জন্য মাত্র তিরিশের ঘরে পৌঁছাতে পেরেছেন। বাকি ১৫ ম্যাচে ১০ বার দুই অংকেই পৌঁছাতে পারেননি সৌম্য। সর্বশেষ ১৬ ম্যাচে তার রান ছিল : ০, ৪, ৯, ৩২, ৫, ৫, ১৪, ০, ১৫, ৩, ১, ১০, ১, ২৪, ১৪, ০।

অবশেষে রোববারের ম্যাচে প্রয়োজনের সময় সৌম্যর ব্যাট কথা বলেছে। স্বভাবসূলভ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং না করে উইকেটে থাকার চেষ্টা ছিল। তেড়েফুঁড়ে চার ও ছক্কায় মাঠ গরম করেননি। দায়িত্ব নিয়ে খেলার চেষ্টা করেছেন। দুটি ভাল ও কার্যকর জুটি গড়ায় ভূমিকা ছিল বড়। প্রথমে নাইম শেখের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ৪৬ আর মুশফিকুর রহীমের সাথে তৃতীয় উইকেটে ৬০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে লক্ষ্যের খুব কাছে নিয়ে যেতে কার্যকর অবদান রেখেছেন সৌম্য।

অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কথা না বললেই নয়। সাকিবের বদলে ভারতের মাটিতে ভারতীয়দের বিপক্ষে নেতৃত্ব দিতে গিয়েও অসীম সাহস আর অবিচল আস্থা এবং আত্মবিশ্বাসে বলিয়ান ছিলেন রিয়াদ। এতটুকু না ঘাবড়ে বুক ভরা সাহস নিয়ে খেলেছেন।

বোলার ব্যবহারে রেখেছেন দুরদর্শিতার ছাপ। দল পরিচালনায়ও ছিল সাহস-আস্থার ছাপ। শেষ দিকে যেন পণ করেই উইকেটে নেমেছিলেন একদম সাহসী নাবিকের মত দলকে জয়ের বন্দরে ভিড়িয়ে তবেই ফিরবো। উইনিং শটে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে সে সত্যেরই জানান দিয়েছেন। দেশ ছাড়ার আগে বলেছিলেন, ‘কে নেই, তা না ভেবে আমাদের কাজগুলো ঠিকমত করাই হবে আসল কাজ।'

সেটা শতভাগ করে দেখিয়েছে রিয়াদ বাহিনী। তাই ধরা দিয়েছে এমন এক স্মরণীয় জয়। সবার একটাই কথা, পুরো দলের ভাল খেলার ইচ্ছে, আকাঙ্খা ছিল প্রবল। সামর্থ্যের সেরাটা উপহারের দৃঢ় সংকল্পও ছিল। আর টিম পারফরমেন্সও হয়েছে খুব উজ্জ্বল। যার দ্যুতির কাছে ম্লান হয়েছে রোহিত শর্মার ভারত।

সৌজন্যে : জাগোনিউজ২৪
সিলেটভিউ২৪ডটকম/৪ নভেম্বর ২০১৯/জিএসি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.