আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

‘কর্মসংস্থানে পিছিয়ে সিলেটের নারীরা’

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-১২-০৭ ১২:২৯:৫৪

সিলেটভিউ ডেস্ক :: কর্মসংস্থানের  ক্ষেত্রে সিলেট ও বরিশালের নারীরা পিছিয়ে রয়েছে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের নারীদের তুলনায় এই দুই বিভাগের নারীদের শ্রমবাজারে প্রবেশের সম্ভাবনা কম। বয়স, শিক্ষা  এবং বৈবাহিক অবস্থা শ্রম বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে নারীর সিদ্ধান্ত গ্রহণকে প্রভাবিত করে। গ্রাম ও শহর উভয় ক্ষেত্রেই এই বিষয়গুলো সমানভাবে প্রভাবিত করে। তবে গ্রামের তুলনায় শহরের নারীদের শ্রমবাজারে প্রবেশের সুযোগ বেশি। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণায় আরও বলা হয়েছে,  আত্মকর্মসংস্থানের চেয়ে নির্ধারিত বেতনের চাকরির প্রতি যুবশক্তি বেশি আগ্রহী।  এ ছাড়া ২০০৬ থেকে ২০১৬ এই সময়ে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগহণ বেড়েছে। নারীর অংশগ্রহণ এখন ৩৬ শতাংশ। ২০০৬ সালে ছিল ২৯ শতাংশ।

বুধবার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী বিআইডিএস বার্ষিক গবেষণা  সম্মেলনে ‘লেবার সাপ্লাই এন্ড ইটস চেঞ্জেস ডিউরিং ২০০৬ টু ২০১৬: ফোকাস অন জেন্ডার এন্ড রিজিওনাল ডিফারেন্স’ নামের এ গবেষণা পত্র প্রকাশ করা হয়।  ওই গবেষণা পত্র ছাড়াও প্রথম দিনে তিনটি অধিবেশনে কৃষি, শ্রমবাজার এবং আর্থিক অন্তর্ভূক্তি বিষয়ে মোট ১১টি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন গবেষকরা।

মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ক এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের যেসব এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ পৌঁছেনি ও সোলার প্যানেল যাদের অবলম্বন, ওই এলাকায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে একটি পরিবারের ব্যবসা বেড়েছে ১০ শতাংশের মতো। কৃষির বাইরে অকৃষি খাতে যারা ব্যবসা করছে, তাদের ব্যবসা বেশি হচ্ছে মোবাইল ফোন ব্যবহারের কল্যাণে। এ ছাড়া মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে মৎস্য খাতের সঙ্গে সম্পৃক্তদের আয় বেড়েছে ৭ থেকে ১০ শতাংশ। মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে তৃণমূলে নারীর ক্ষমতায়নও বেড়েছে।

গবেষণাটি করা হয়েছে যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ নেই; কিন্তু সোলার প্যানেল আছে, চর, উপকূলীয় এলাকা, সমুদ্রের পারের মানুষ এবং নদীর পারের মানুষ এমন প্রত্যন্ত অঞ্চলের দৈবচয়নের ভিত্তিতে ৫৪০ পরিবারের ওপর জরিপ পরিচালনা করে প্রতিবেদনটি করা হয়েছে।

রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে পণ্যের ওপর কী প্রভাব পড়ে, তা নিয়ে অপর গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১০ থেকে ২০১৫ এই সময়ে যত হরতাল ও অবরোধ হয়েছে, তার মধ্যে মাত্র ৪ শতাংশ হয়েছে অর্থনৈতিক কারণে। হরতালের ডাক দিলেই মোটা চালের দাম গড়ে ৪৩ পয়সা বেড়ে যায়। হরতালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয় গরিব মানুষ। তাদের আয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। হরতালে ঢাকার তুলনায় জেলা পর্যায়ে চালের দাম বেশি বাড়ে।

অপর গবেষণায় দেখা গেছে,আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং সেবা ও দারিদ্র্য বিমোচনের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক রয়েছে। ব্যাংকিং সুবিধার আওতায় আসা দারিদ্র্য বিমোচনের দ্বার খুলে দেয়। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ব্যাংকিং সেবা বিশেষ করে বলা হয়েছে, একটি ব্যাংক এ্যাকাউন্ট থাকা মানে আয় ও সঞ্চয়কে উৎসাহিত করা। কার্যকর দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য এ সংক্রান্ত যেকোনো কর্মসূচিতে ব্যাংকিং তথা আর্থিক সেবা অন্তর্ভূতি নিশ্চিত করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

কৃষি জমির ব্যবহার নিয়ে পরিচালিত গবেষণায় বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী কৃষিতে জমির ব্যবহার বাড়ছে। কিন্তু বাংলাদেশে কৃষি জমির পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব নয়। তাই বর্ধিত চাহিদা পূরণের জন্য বিদ্যমান কৃষি জমির আরও নিবিড় ব্যবহার এবং উচ্চফলনশীল জাতের উদ্বোবনের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

শস্য বৈচিত্র্যকরণ বিষয়ক গবেষণায় বলা হয়েছে,দেশে কৃষিনির্ভর পরিবারগুলোতে শস্য বৈচিত্র্যকরণ ও খাদ্যভাস বৈচিত্র্যকরণ বেড়েছে।  বলা হচ্ছে, খাদ্যভাসের বৈচিত্র্যতার  সঙ্গে আয় ও সম্পদের ইতিবাচক সম্পর্ক আছে।

সরকারের রুরাল সোস্যাল সার্ভিস প্রোগ্রামের মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সার্ভিসের আওতায় যে ঋণ দেওয়া হয় তা পর্যাপ্ত নয়। ২০১১-২০১৭ সাল পর্যন্ত ঋণ গ্রহীতারা গড়ে মাত্র ১১ হাজার ২৭৩ টাকা ঋণ পেয়েছে। কর্মসূচির মূল্যায়ন করতে গিয়ে বলা হয়েছে, ঋণের সদ্ব্যবহার ও আদায় নিশ্চিত করতে অপেক্ষাকৃত কম গরিবদের ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রকৃত গরিবরা ঋণ বঞ্চিত হচ্ছেন। যদিও কর্মসূচির আওতায় থাকা ঋণ গ্রহীতা পরিবারগুলোর মাসিক গড় আয়-ব্যয় ও সঞ্চয়ের পরিমাণ অন্যদের তুলনায় বেশি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৭ ডিসেম্বর ২০১৭/ডেস্ক/এমকে-এম

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন