Sylhet View 24 PRINT

পুলিশের সহায়তায় সংখ্যালঘু পরিবারকে ভিটেমাটি ছাড়া করার অভিযোগ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৪-০৭-২১ ২০:২৯:৩১

সিলেট, সোমবার, ২১ জুলাই ২০১৪ :: সিলেটের জৈন্তাপুর থানা পুলিশের সহায়তায় ভূমিখেকো সন্ত্রাসীরা একটি সংখ্যালঘু পরিবারকে ভিটেমাটি ছাড়া করতে উঠে পড়ে লেগেছে। নির্যাতন করে জোপূর্বক দস্তখত নেওয়া ও তাদের জান-মালের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্যে ঘরবাড়ি ছেড়ে ছেলে মেয়েদের নিয়ে বিভিন্নস্থানে দিনযাপন করার অভিযোগ করেছেন জিতেন্দ্র কুমার দত্ত। জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত সরুফৌদ গ্রামের মৃত পুলিন বিহারী দত্তের ছেলে জিতেন্দ্র কুমার দত্ত সোমবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তোলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জিতেন্দ্র কুমার দত্ত জানান,‘ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে নিজ গ্রামে ভিটেবাড়িসহ ৭৪শতক ভুমির উপর কোনমতে দিনাতিপাত করছেন। মেয়ে বিয়ের সময় কিছু টাকা ঋন করেন। আর এ ঋন জমি বিক্রি করে পরিশোধের কথা বলে জৈন্তাপুর থানার রণিফৌদ গ্রামের মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে নূরুল ইসলাম ও একই থানার নয়াখেল টিকর গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে তাজুল ইসলামের কাছ থেকে ৪টি চেকের বিপরীতে ৯ লাখ টাকা ঋন গ্রহন করেন। পরবর্তীতে ওই ঋন পরিশোধের করতে ৯লাখ টাকার বিনিময়ে স্বত্বদখলণীয় ৭শতক জমি বিক্রি করেন। তাজুল ইসলামসহ ১৭জন মিলে ৯লাখ টাকায় ৭শতক জমি কিনেন।

জমি ক্রেতারা টাকা আমার হাতে না দিয়ে আমার পাওনাদার নূরুল ইসলাম ও তাজুল ইসলামের ঋন পরিশোধ করে তাদের কাছে আমার গচ্ছিত ৪টি চেক ফেরত এনে দেবেন বলে কথা বলেন । আমি সরল বিশ্বাসে তাদের নামে স স্বত্বদখলীয় ৭শতক জমি বিক্রি করে দেই। কিন্তু ঋনের টাকা পরিশোধের বিপরীতে আমার দেয়া ৪টি চেক ফেরত দেন নি। এটা না করেই তারা জমির দখল নিতে চাইলে আমি দখল দিতে অসম্মতি জানাই এবং  চেক ফেরত দেয়ার শর্তে বিক্রিত জায়গার দখল দেওয়া হবে। কিন্তু তারা আমার জায়গার দলিল নিয়ে দূরভিসন্দ্বি করে চেকগুলো আটকিয়ে রাখে।

পরবর্তীতে বর্নিত ১৭জন ভূমিখেকো ও তাদের সহযোগীরা বিক্রিত ৭শতক জমির পরিবর্তে আমার ভিটেমাটিসহ পুরো ৪৭শতক ভুমি আত্মসাতে মেতে উঠে। তারা আমার দেয়া চেকগুলো ফেরত না দিয়ে নূরুল ইসলাম ও তাজুল ইসলামকে দিয়ে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ২য় আদালতে আমার বিরুদ্ধে ২টি চেক ডিজ অনার মামলা (নং ৮৮/২০১৩ ও ২৫/২০১৪) করায়। ওই দুই মামলায় আমি জামিনে থাকায় ভূমিখেকোরা তাদের হীন উদ্দেশ্য হাসিল করতে না পেরে পুলিশের সহায়তায় কাবু করে  ভিটে ছাড়া করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।

গত ১৫ জুন ২০১৪ তারিখে তারা আমাকে ও আমার ভাই রঞ্জিত কুমার দত্তকে  আটক ও হাতকড়া পরিয়ে জৈন্তাপুর থানায় নিয়ে যায়। পরে থানার ওসি হারুণ অর রশিদ চৌধুরী, এসআই মশিউর রহমান ও এসআই ফরহাদ আমাদেরকে স্বপরিবারে দেশ ত্যাগ করে ভারতে চলে যাওয়ার জন্য চাপ  দিতে থাকেন। আমি ও আমার ভাই তাতে রাজি না হওয়ায় আমাদের উপর চালানো হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এর পর ওসি হারুণ অর রশিদ চৌধুরী ও এসআই মশিউর রহমান নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে জোরপূর্বক আমাদের স্বাক্ষর গ্রহন করেন।

এ ব্যাপারে আদালত কিংবা কোথাও অভিযোগ করলে আমাদেরকে স্বপরিবারে হত্যা ও গুম করা হবে বলে হুমকি দেন। এর পর থানা থেকে আমাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনার পর থেকে অপহরন খুন ও গুমের ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে আমি আমার ছেলে মেয়েদের নিয়ে বিভিন্নস্থানে দিনযাপন করছেন।

জমি ক্রয়কারী ১৭জন ভূমি খেকো হলেন সিলেটের জৈন্তাপুর থানার দরবস্ত সরুফৌদ গ্রামের সিদ্দেক আলীর ছেলে আব্দুর রহমান,আব্দুল হান্নানের ছেলে আব্দুস সুবহান, মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে মকবুল হোসেন, ডৌডিগ গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে মুহিবুর রহমান, একই গ্রামের আব্দুল¬াহর ছেলে তোফায়েল আহমদ, নয়াখেল গ্রামের মুত আজিজুর রহমানের ছেলে ফয়জুল হক, ঢুপি গ্রামের মৃত ছিদ্দেক আলীর ছেলে নূর উদ্দিন, হেলিরাই গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে মতিউর রহমান কফিল ও একই গ্রামের মৃত সুলতান মিয়ার ছেলে ইমতাজুল হক, ছৈয়া গ্রামের মৃত ইফজাজুল হকের ছেলে মহবুব আহমদ,বাউরবাগ দক্ষিন গ্রামের মৃত চন্দ্রময় বিশ্বাসের ছেলে যাদব ময় বিশ্বাস,বাউরবাগ কাটাখালের রািফকুল হকের ছেলে আব্দুল খালিক, ভিত্রিখেলের মৃত নূর উদ্দিনের ছেলে সাইদুর রহমান, নয়াখেল বানই গ্রামের মৃত জরিব আলীর ছেলে আব্দুল মালিক, থানার নয়াখেল টিকর গ্রামের ফযজুল হকের ছেলে ফখরুল ইসলাম, একই গ্রামের মৃত নূরুল হকের ছেলে শাহিন আহমদ ও একই গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে তাজুল ইসলাম এই ১৭জন মিলে আমার কাছ থেকে ৯ লাখ টাকায় ৭ শতক জমি কিনেন।

জৈন্তাপুর থানার ওসি হারুন অর রশিদ চৌধুরীর সহায়তায় ভূমিখেকো সন্ত্রাসীরা আমাদের উপর নির্যাতন ও জোপূর্বক দস্তখত নেয়ার পর থেকে আমরা আমাদের জান-মালের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করছি। আমাদের দস্তখতি কাগজ দিয়ে ভূমিখেকোদের অনুকুলে জায়গা জমি ও মামলা মোকদ্দমার কোন ডকুমেন্ট সৃষ্টিসহ হত্যা ও গুম করে ভূমিদস্যুরা আমাদের ভিটেমাটি জবরদখলে নিয়ে যেতে পারে। তাই  সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা বর্তমান সরকার কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.