আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

হবিগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী মাছ মেলা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০১-১৪ ১৮:২২:৫২

কাজল সরকার, হবিগঞ্জ :: হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পইল গ্রামে প্রতিবছরের মতো এবারও ঐতিহাসিক মাছমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিবছর পৌষ সংক্রান্তিতে আয়োজিত এ মেলাটি প্রায় দুই শতাধিক বছর ধরে চলে আসছে।

রবিবার সকাল থেকেই মাছ মেলায় হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। শুধু হবিগঞ্জ জেলা নয়, সিলেট, মৌলভীবাজর, সুনামগঞ্জ, ব্রাক্ষণবাড়িয়াসহ অন্যান্য জেলা থেকেও প্রচুর লোক আসেন মেলায়। মেলায় বোয়াল, বাগাই, বড় আকৃতির আইড়, চিতল, গজার, রুই, কাতলসহ নানা প্রজাতির আকর্ষণীয় মাছ নিয়ে আসেন বিক্রেতার। এছাড়াও পুটি, চিংড়ি, কৈ, চাপিলা, চান্দা মাছ উঠে ব্যাপক হারে।

মেলার প্রধান আকর্ষণ মাছ হলেও এতে কৃষি উপকরণ, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য, ভোগপণ্য, আখ, শিশুদের খেলনাও ছিল উল্লেখযোগ্য। পইলসহ আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষ এ মেলাটিকে তাদের পূর্ব পুরুষের ঐতিহ্য বলে ধারণ করেন।

কয়েকশ’ বিক্রেতা অংশ নিয়েছেন পইল মাছের মেলায়। বড় বড় মাছের সঙ্গে অনেকে দেশীয় নানা প্রজাতির ছোট মাছও নিয়ে এসেছেন। বেচাকেনাও চলে ব্যাপক। প্রত্যেকটি দোকানের সামনে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। মানুষজন মাছের দাম হাকাচ্ছেন, কিনছেন, আবার কেউ কেউ সেলফি তুলতেও ব্যস্ত। মেলায় সব চেয়ে বড় ৪০ কেজি ওজনের মাছটির দাম উঠেছে ৮৫ হাজার টাকা।

মাছ বিক্রেতা এমরান মিয়া জানান, ‘বিভিন্ন নদী ও হাওর থেকে মাছ আসে এখানে। এ মেলাকে লক্ষ্য করে চলে মাছ ধরারও উৎসব। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিবছরই এ মেলায় মাছ নিয়ে আসি। বাজারের তুলনায় মেলায় মাছের দাম বেশি হলেও সবাই আনন্দের সঙ্গে মাছ কেনেন।’

অন্য আরেক বিক্রেতা আব্দুর রশীদ জানান, ‘আগে সিলেট অঞ্চলের তরতাজা মাছ দিয়ে মেলা বসত। আর এখন বেশিরভাগ মাছ আসে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে। যা বরফ দিয়ে রাখা হয়। কতগুলোতো বক্সে থাকতে থাকতে বেঁকে গেছে। দেখেই অনুমান করা যায় এই মাছগুলো দূর থেকে আনা হয়েছে।’

মেলায় ঘুরতে আসা অকাশ মিয়া জানান, ‘এখানে শুধু মাছ কেনাটাই বড় কথা নয়। বাপ-দাদার মুখে বড় বড় মাছের গল্প শোনা ছাড়া দেখা হয়নি। এখানে এসে বড় বড় মাছগুলো দেখে চোখ জুড়িয়ে নিলাম। মাঝে মধ্যে তাদের গল্পগুলো অবিশ্বাস্য মনে হত। কিন্তু এখানে এসে সেই ভুলও ভেঙে গেল।’

উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমদুল হক জানান, ‘ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বাগ্মী নেতা বিপিন চন্দ্র পালের জন্মভূমি পইল গ্রামে প্রতিবছরের মতো এ বছরও মেলা শান্তিপুর্ণভাবে মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সরকারীভাবে সহযোগিতার আহবান জানিয়েছেন আহবান জানান তিনি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৪ জানুয়ারি ২০১৮/কেএস/ডিজেএস

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন