আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কুলাউড়ায় ডেলিভারির সময় নবজাতকের হাত ভাঙলেন চিকিৎসক!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০১-১৪ ১৯:১৬:২৫

শাকির আহমদ, কুলাউড়া :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌর শহরের সেইফ ম্যাটারনিটি এন্ড সার্জিক্যাল ক্লিনিকে এক গর্ভবর্তীর ডেলিভারির সময় ডাক্তারের অসতর্কতায় নবজাতক শিশুর হাত ভাঙার ঘটনা ঘটেছে। এতে নবজাতকটির জীবন শঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আছে। ডেলিভারির ওই রোগীর অপারেশন করার দায়িত্বে ছিলেন ডা. আই ই রেমা। বিষয়টি ওই ডাক্তার নিজেই স্বীকার করেছেন এবং নবজাতকটির চিকিৎসার জন্য সিলেটের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে গেছেন।

জানা যায়, উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের দক্ষিণ রাউৎগাও (উজানপাড়া) গ্রামের বাসিন্দা আরব আমিরাত প্রবাসী সুজন মিয়ার স্ত্রী পান্না বেগম অন্ত¦ঃস্বত্তা অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন গত শনিবার (১৩ জানুয়ারি)। ওইদিন রাত ৮টার দিকে অপারেশনের জন্য তাঁকে থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। ক্লিনিকের ডাক্তার আর এ রেমা এই ডেলিভারি অপারেশনের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে নবজাতক শিশুটিকে তার নানী শেলী বেগমের কাছে হস্তান্তর করলে তিনি দেখতে পান নাতির হাত ভাঙ্গা। তাৎক্ষনিক তিনি ওই ডাক্তারকে বিষয়টি জানালে ডাক্তাররা নবজাতকের হাতে সাথে সাথে ব্যান্ডেজ করে দেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় শুধুমাত্র এমবিবিএস  চিকিৎসক দ্বারা সিজার অপারেশনের রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এজন্য জন্মের সময় নবজাতকের নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়, এমনকি মৃত্যুও হয়। কর্তৃপক্ষ কৌশলে এসব বিষয় ধামাচাপা দেয়।

খবরটি জানার পর রবিবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে শিশুটির আত্মীয়স্বজনরা ক্লিনিকে এসে জবাবদিহি চাইলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নিজেদের ভুল স্বীকার করে কাউকে না জানানোর শর্তে নবজাতকের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। পরে নবজাতক শিশু, তার মা ও নানীকে ডাক্তার রেমা নিজেই একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে সিলেটে নিয়ে যান।

শিশুটির নানী শেলী বেগমের সাথে রবিবার বেলা সোয়া ২টার দিকে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে অপারেশন করেন ডাক্তার রেমা। ডেলিভারির সময় বাচ্চার হাত ভেঙ্গেছে।

তিনি বলেন, ‘রেমা স্যার আমরারে (শিশু, মা ও নানী) তান (উনার) গাড়ি দিয়া সিলেট পাঠাইছইন।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ওই ডাক্তার আই ই রেমার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, নরমাল ডেলিভারি হইছে। এসময় হাতে টান লেগে ফ্র্যাকচার হয়েছে, হাড্ডি ফেটে গেছে।

তিনি বলেন, ‘ভুল আমাদের হয়ে গেছে। এজন্য আমরা নিজেরাই চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছি। আমি শিশুকে নিয়ে সিলেটের ক্রোমা হাসপাতালে আছি। ডাক্তার এসে সিদ্ধান্ত নিবেন।’

এবিষয়ে কুলাউড়া উপজেলা ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেন বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না। তবে শিশুটির স্বজনরা কেউ যদি অভিযোগ করে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করবো।’

এ বিষয়ে জেলা ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. বিলেন্দু ভৌমিক জানান, বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে জেনেছি। সিভিল সার্জন দেশের বাইরে রয়েছেন। তিনি আসার পর বিষয়টি তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এছাড়াও জেলার প্রতিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করে কাগজপত্রাদি এবং নিয়ম মেনে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখবো।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৪ জানুয়ারি ২০১৮/এসএ/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন