আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং

বসন্ত বাতাসে সইগো : সিলেটে ঋতুরাজ বরণ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০২-১৪ ০০:০৫:৩৪

মো. এনামুল কবীর :: ঋতুরাজ বসন্ত নিয়ে বাংলা সাহিত্যের অনেক বড় বড় কবি লিখেছেন অমরসব কবিতা। এরমধ্যে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই সম্ভবত: সবচেয়ে এগিয়ে। শীতের জুবু থুবু অবস্থা কাটিয়ে বসন্তের আগমনে জেগে উঠে বাংলার প্রকৃতি। কাননে কাননে প্রস্ফুটিত কুসুমের মনোহারী রূপ, সাথে হাওয়ায় হাওয়ায় দোলে উঠা লতাগুল্মের মতোই দোলে উঠে মানুষের মন। আর কবিরাতো চিরকালই সুন্দরের পূজারি। তাই বসন্তের আগমনে সবচেয়ে বেশি দোলা দেয় তাদের মনেই।

তাই লেখা হয়ে যায়, ‘ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান...’ ‘আহা আজি এ বসন্তে, এত ফুল ফোটে...’, ‘বসন্তের এই মাতাল সমীরণে, আজ জোসনা রাতে সবাই গেছে বনে’র মতো অমর সব গান বা গীতিকাব্য।

বসন্ত বরণে প্রতিবছরই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সংস্কৃতিকর্মিদের মধ্যে শীতের শেষের দিক থেকে সাঁড়া পড়ে। কবিতা-গান-ফ্যাশন শো সহ নানা আয়োজনে ব্যস্ত থাকেন তারা। রাস্তায় রাস্তায় তরুণ-তরুণীদের ভীড় লেগে যায়। হলুদ পাঞ্জাবী ও শাড়িতে হাসির লহরি আর কিচির মিচিরে থমকে যায় পথচারি বা কর্মব্যস্ত প্রাণ। তারপর দোলে উঠে বসন্ত বাতাসে, অনেকটা বাউল শাহ আব্দুল করিমের গানের মতোই,‘বসন্ত বাতাসে সইগো বসন্ত বাতাসে...’।

মঙ্গলবার ছিল পহেলা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্তের শুরু। সিলেটে এবার বসন্তের প্রথম দিনটি কিছুটা ব্যতিক্রম ছিল। রাস্তায় রাস্তায় তরুণ-তরুণীর তেমন ভীড় দেখা যায়নি। কারণ মাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষা ছিল বিভিন্ন কলেজেও। তবে অনুষ্ঠানের কমতি ছিলনা সিলেটে।

বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মিরা বসন্ত উৎসবে মেতেছিলেন। এরমধ্যে প্রধান অনুষ্ঠান ছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে একটি জাতীয় দৈনিকের পাঠকদের সংগঠনের আয়োজনে চলছিল বইমেলা। এই মঞ্চেই বসন্তকে বরণ করে পরিবেশিত হয়েছে নৃত্য-গীত। রাত ৮টা পর্যন্ত সিলেটের সংস্কৃতিপ্রেমিরা দারুন উৎসাহে মেতে উঠেছিলেন এই আয়োজনে।

সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রীরাও নৃত্য-গীতে বসন্ত বরণ করেছেন। বরণ করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, লিডিং ইউনিভার্সিটি, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সংস্কৃতিকর্মিরা।

পরীক্ষা থাকায় সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজের মোহনা সংস্কৃতিক দলটি পহেলা ফাল্গুন কোন আয়োজন করেনি। তবে তারা বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিস্তারিত কর্মসূচির মাধ্যমে বরণ করবে ঋতুরাজ বসন্তকে। এসব কর্মসূচির মধ্যে আছে আবৃত্তি, গান-নাচ ও ফ্যাশন শো।

গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার, বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জসহ সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা সদর, এমনকি কোন কোন প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ব্যাপক কর্মসূচির মাধ্যমে বসন্তবরণ উৎসবে মেতেছিলেন সংস্কৃতিকর্মিরা।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/এক

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন