আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

বড়লেখায় দাখিল পরীক্ষার্থীদের ওপর হামলা, বিচার চেয়ে আবেদন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০২-১৪ ০১:০৯:২৮

বড়লেখা প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় মুহাম্মদীয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার সামনে দাখিল পরীক্ষার্থীদের ওপর হামলার দুইদিন অতিবাহিত হলেও এর কোনো সমাধান হয়নি। গত রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও আহত পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা চেয়ে লিখিতভাবে আবেদন করা হয়। এরপরও এ ঘটনার কোনো সমাধান না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরীক্ষার্থীদের অভিভাকরা।

অভিযোগ ও মাদ্রাসা ও পরীক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলার গাংকুল মুনসুরিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নাহিদ আহমদ (২০), নোমান আহমদ (১৯) ও তাহের সাজের (১৯) সঙ্গে মুহাম্মদী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী জুমান আহমদের তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ঝগড়া হয়। পরে বিষয়টি তারা নিজেরাই সমাধান করে নেয়। 

এদিকে গত রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) নাহিদ আহমদ, নোমান আহমদ, তাহের সাজ এর ‘হাদিস শরীফ’ পরীক্ষা ছিলো। ঐদিন তারা তিনজন (মুহাম্মদীয়া মাদ্রাসা পরীক্ষা কেন্দ্রে) পরীক্ষায় অংশ নেয়। দুপুর ১টায় পরীক্ষা শেষ হয়। পরীক্ষা শেষে তারা মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলো। এসময় নাহিদ আহমদের মা রহিমা আক্তার (৪৫) তাকে নিতে আসেন।

তখনই পূর্ব ঘটনার জের ধরে পৌরশহরের পাখিয়ালা এলাকার জুমান আহমদ, রেহান আহমদ ও শাওন আহমদের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক লাটি-রড ও হকিস্ট্রিক নিয়ে নাহিদ আহমদ, নোমান আহমদ, তাহের সাজের ওপর হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীদের হাত থেকে তাদের বাঁচাতে এগিয়ে এলে নাহিদ আহমদের মা রহিমা আক্তার আহত হন। পরে স্থানীয়রা হামলাকারীদের হাত থেকে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে তারা প্রাথমকি চিকিৎসা নেন।

এদিকে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও হামলায় আহত পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা চেয়ে নাহিদের বড় ভাই মিজানুর রহমান গত সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেন। কিন্তু ঘটনার দুইদিন অতিবাহিত হলেও তারা এর কোনো সুবিচার পাননি।

মিজানুর রহমান মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ঘটনার দুইদিন অতিবাহিত হলেও আমরা এর কোনো সুবিচার পাইনি। আমরা পরীক্ষার্থীদের নিরপত্তা নিশ্চিত ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’

এ বিষয়ে উপজেলার গাংকুল মুনসুরিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ইউসুফ আলী বলেন, ‘শুনেছি আমার মাদ্রাসার ছাত্রদের সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তাদের (হামলাকারীদের) ঝগড়া হয়েছিল। বিষয়টি তারা সমাধান করে নিয়েছে। গত রবিবার তাদের ওপর কেন হামলা হয়েছে সেটা জানিনা। তবে ঘটনাটি শোনার পর আমি বিষয়টি আমি ইউএনও স্যার ও মুহাম্মদীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বসবো।’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ সুহেল আহমদ মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওসি বড়লেখা থানাকে বলা হয়েছে। এই ব্যাপারে দুই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আমার সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। গণ্যমান্য ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সমাধানের জন্য তাদের (দুই মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে) অনুরোধ করা হয়েছে। বিষয়টি প্রশাসনেরও নজরদারিতে রয়েছে। এরপর যদি কেউ পরীক্ষাগ্রহণ কার্যক্রম ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘœ ঘটানোর চেষ্টা করে, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/এসজেএল/ডিজেএস

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন