আজ মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কুলাউড়ায় বিয়ের এ কেমন নিমন্ত্রণপত্র!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০২-২১ ০১:৩৩:০৩

শাকির আহমদ, কুলাউড়া :: ‘কিতার অনুষ্ঠান- বিয়ার অনুষ্ঠান, কার বিয়া- আমার বিয়া..... তউ কিতা খরতাম- আমার লগে বিয়াত যাইতা’ এভাবে সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করে বিয়ের দাওয়াতপত্র লিখেছেন এক পাত্র। এই নিমন্ত্রণপত্র দেখে স্থানীয়দের মাঝে বেশে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, সিলেটের আঞ্চলিক বর্ণে এবং শুদ্ধ বাংলা শব্দের আলাদা আলাদা লেখনী সবার নজর কেড়েছে বলে স্থানীয়রা অবহিত করেন।

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল চা বাগানের গনেশ লাল কানু তাঁর নিজের বিয়ের নিমন্ত্রণপত্রে এই ভিন্ন আঙ্গিকে লেখা প্রকাশ করেন।

মঙ্গলবার দুপুরে এমন নিমন্ত্রণপত্রের খুঁজে কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল চা বাগানে গেলে গনেশ লাল কানু শাওনের সাথে দেখা হয়। এসময় তিনি বলেন, ‘সিলেটের আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে এড. মুমিনুল হকের গবেষনাধর্মী বিভিন্ন বই পড়ে আমার আগ্রহ বাড়ে। এরপর থেকে আমি চেষ্টা করেছি সিলেটের নাগরী ভাষা আয়ত্ত্বে আনার। সিলেটি নাগরী ভাষার ঐতিহ্য সংগ্রহের অন্যতম উদ্যোক্তা ড. মুমিনুল স্যার সুদূর সৌদি আরবে আমার বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র টাইপ করান। আমাদের দেশে সিলেটি নাগরী ভাষার কি-বোর্ডের প্রচলন তেমন নাই। যুক্তরাজ্য, সৌদিআরবসহ আর কয়েকটা দেশে এই কি-বোর্ড আছে।’

শাওন আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের এই মাসে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি আঞ্চলিক ভাষায় এই নিমন্ত্রণপত্র করিয়েছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ‘নাগরি বর্ণে ছিলটি ভাষা স্বীকৃতি পরিষদের’ প্রতিষ্ঠাতা ইতিহাসবিদ ড. মুমিনুল হক বলেন, ‘ছিলটি ভাষার মৌলিক শব্দগুলো নাগরী অক্ষর দিয়ে সাজানো। অতিপ্রাচীনকালের এই অক্ষরগুলো কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছিল। আমরা নাগরী বর্ণে ছিলটি ভাষা স্বীকৃতির জন্য আন্দোলন করছি। ইতিমধ্যে নাগরী অক্ষরে আমরা বিভিন্ন বই পুস্তক প্রকাশ করেছি। একটি পত্রিকা প্রকাশ করেছি। সিলেটের প্রতিটা ঘরে ঘরে নাগরি অক্ষরে ছিলটি ভাষা পৌঁছে দেয়ার জন্য আমাদের এই আন্দোলন।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/এসএ/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন