আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং

দল চাইলে সিলেট-২ আসনে চ্যালেঞ্জ নেবেন আমেরিকার সালাম

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৯-১৯ ০০:০৪:৩৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-২ আসনে নৌকার টিকেট নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চান যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম। এই এলাকার আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করতে নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহন করতে চান তিনি। তবে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশের বাইরে কখনোই নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন এম এ সালাম।

সিলেট জেলার ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের খাসিপাড়া গ্রাম নিবাসী এম এ সালাম যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান ১৯৭৭ সালে। সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান সালাম পড়াশোনায় বেশ ভালো ছিলেন। ভালো ছাত্র হিসেবে এলাকার লোকজন অনেক স্নেহ করতেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে সক্রিয় ভূমিকা পালনকালে নানা দুঃশাসনের শিকার হন। পরবর্তীতে এম.সি. কলেজে বিএসসিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় দেশ ছেড়ে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে গিয়েই বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দাবিতে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সামনে কর্মসূচি পালন করেছেন। কুখ্যাত ইনডেমনিটি আইন বাতিলেও তিনি যুক্তরাষ্ট্রে জনমত গড়ে তোলেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে লালন করে ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন এম এ সালাম। প্রবাসে জননেত্রী শেখ হাসিনার সাহচর্যে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দাবিতে আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে তুলতে কাজ করেছেন তিনি। বঙ্গবন্ধু কন্যার বিশ্ব শান্তি কর্মসূচির বিস্তারেও তিনি বেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। বিশ্ব শান্তি কর্মসূচি ছড়িয়ে দিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। এ কর্মসূচি বিস্তারে তিনি আন্তরিকভাবে কাজ করে গেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠিত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এম এ সালাম। ১৯৭৭ সালে সেখানে গিয়েই আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে কাজে নেমে পড়েন। পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে শেখ ওয়াহিদুর রহমানকে সভাপতি ও তাকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে স্বীকৃতি দেয় কেন্দ্র। এরপর ১৯৮৯ সালেও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে নুরুল ইসলাম অনু সভাপতি এবং এম এ সালাম পুনরায় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব লাভ করেন। ২০০২ সালেও টানা তৃতীয়বারের সাধারণ সম্পাদকের পদে বহাল থাকেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগের আস্থার অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হন সালাম। দেশে ছাত্রাবস্থায় এম.সি. কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সাকু-সুলতান পরিষদের হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়াও বালাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের শীর্ষস্থানীয় পদের দায়িত্ব পালন করেছেন। সেখান থেকে রাজনীতির পথচলা শুরু করা সালাম সুদূর যুক্তরাষ্ট্রেও আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগ্রহের ব্যাপারে সিলেটভিউকে তিনি জানান, ‘আমি আজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজনীতি করে আসছি। আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে কোন কালিমা নেই। আওয়ামী লীগের হয়ে দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলায় আমি অনেক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। ১৯৭০ সাল থেকে ২০১৪ পর্যন্ত দেশে অনুষ্ঠিত প্রতিটি নির্বাচনে আমি সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রত্যেক প্রার্থীর হয়ে সক্রিয় প্রচারণা চালিয়েছি। আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমি আমার সততা, মেধা ও অর্জিত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চাই।’

এছাড়াও এম এ সালাম উল্লেখ করেন- ‘আমি একজন সৎ নাগরিক। জন্মস্থানের প্রতি আমি অফুরন্ত কৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ। বেঁচে থাকতে আমি আমার এলাকার উন্নয়ন ও মানুষের সেবা করে যেতে চাই।’ একজন জনপ্রতিনিধি হলে মানুষের সেবা করা ও উন্নয়নের দাবি পূরণ করা সহজ হয় বলেই তিনি নির্বাচন করতে চান বলে জানান।

এম এ সালাম প্রতিবেদককে জানান, আওয়ামী লীগ মহাসমুদ্রের মতো একটি রাজনৈতিক দল। এখানে যোগ্য যে কেউ প্রার্থী হিসেবে দলের মনোনয়ন চাইতে পারেন। আমিও একজন খাঁটি মুজিব সৈনিক হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে দলের মনোনয়ন চাইব। তবে কখনোই তার মতের বাইরে যাবনা।

দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে থাকা এম এ সালাম বর্তমানে আমেরিকা-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ অ্যালায়েন্সের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও রাজনীতি ও সামাজিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত থাকার পাশাপাশি নিজের ব্যবসা দেখাশোনা করছেন।

সিলেটভিউ/১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮/পিডি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন