আজ বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ইং

সিলেটে রাজু হত্যা: আইও’র হার্টে রিং, আসামিরা সক্রিয়

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১০-১২ ০০:১৭:৩৮

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক :: সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সহ-প্রচার সম্পাদক ফয়জুল হক রাজু হত্যাকা-ের দুই মাস পেরিয়ে গেছে। এই দীর্ঘ সময়েও হত্যার ঘটনায় মামলার কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার একদিন পর ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হলেও পুলিশ গ্রেফতার করতে পেরেছে মাত্র তিনজনকে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় বর্তমানে থমকে আছে তদন্ত কার্যক্রমও।

এরকম অবস্থায় রাজুর চাচা দবির আলী মামলার তদন্ত কার্যক্রমে গতি আনতে আবেদন করেছেন মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে।

অভ্যন্তরীণ বিরোধের জের গত ১১ আগস্ট রাতে সদ্য নির্বাচিত সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বাসা থেকে ফেরার পথে কুমারপাড়ায় প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হন ফয়জুল হক রাজু। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় রাজুর চাচা দবির আলী বাদী হয়ে ১৩ আগস্ট কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রকিবকে প্রধান আসামি করে আরো ২২ জনের নামোল্লেখ করা হয়।

বাকি আসামিরা হলেন- জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনারকে, ছাত্রদল নেতা এনামুল হক, একরামুল হক, মোস্তাফিজুর রহমান, শেখ নয়ন, সলিড, ফরহাদ, সাদ্দাম, মুজিবুর রহমান খান রাসেল, রাসেল, আরাফাত, মোফাজ্জল চৌধুরী মুর্শেদ, শাহিন, সুফিয়ান, নজরুল, তোহা, আফজল, সাহেদ, রুবেল মিয়া, মামুন ও জুমেল। এছাড়া অজ্ঞাত আরো ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয় মামলায়।

পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি সাদ্দাম ও রুবেল এবং সন্দেহভাজন হিসেবে আলফু নামের আরেকজনকে গ্রেফতার করে। এ তিনজনকে রিমান্ডেও নেয় পুলিশ। কিন্তু কেন এই হত্যাকা-, কারা কারা জড়িত এসব তথ্য উদঘাটন করতে পারেনি তারা। এদেরকে গ্রেফতার করেই পুলিশ নিরব হয়ে গেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

রাজুর চাচা ও মামলার বাদী দবির আলী সিলেটভিউকে বলেন, ‘ঘটনার পর এক মাসের মধ্যে পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে। কিন্তু এর পর মামলার কার্যক্রম গতিহীন হয়ে পড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফয়েজ উদ্দিন হৃদরোগে আক্রান্ত। তার হার্টে রিং বসানো হয়েছে। এরকম অবস্থায় গত মঙ্গলবার মামলার তদন্ত যাতে সচল থাকে, সেজন্য আমরা পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন জানিয়েছি।’

ঘটনার দুই মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও মামলার প্রধান আসামিসহ এজাহারভুক্ত বাকিদের গ্রেফতার করতে না পারায় ক্ষুব্ধ রাজুর পরিবার। প্রধান আসামি আব্দুর রকিব এবং দেলোয়ার হোসেন দিনার রাজনৈতিক কার্যক্রমে সক্রিয় থাকলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না বলেও অভিযোগ ওঠছে।

জেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক দবির আলী বলেন, ‘রকিব, দিনার এরা মিছিল, মিটিং করছে। তারা ফেসবুকেও সক্রিয়। কিন্তু তারা ধরা পড়ছে না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। শুধু রাজু কোনোভাবে ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িয়ে গিয়েছিল। আমরা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তাদের সহযোগিতান যেন সবসময় থাকে, এমনটাই প্রত্যাশা করি আমরা।’

মামলার তদন্তের অগ্রগতি কতোটুকু এবং তদন্ত কার্যক্রম কোন পর্যায়ে আছে- এমন প্রশ্নে নগরীর কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ সেলিম মিঞা বলেন, ‘মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অসুস্থ। এর মধ্যেও তিনি কাজ করছেন।’

তিনি বলেন, ‘বাদী যদি লিখিত আবেদন দেন, তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বদল করা হবে।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১২ অক্টোবর ২০১৮/আরআই-কে

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন