আজ মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ইং

ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ: সিলেটে সাজ সাজ রব

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১০-২৩ ০০:০৭:৩৫

রফিকুল ইসলাম কামাল :: সমাবেশের অনুমতি নিয়ে জল অনেক ঘোলা হয়েছে। বিষয়টি গড়িয়েছে হাইকোর্ট পর্যন্তও। তবে সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পর ছাপিয়ে গেছে সেসব বিতর্ক। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এখন সিলেটে সমাবেশ সফল করতেই তৎপর। ‘জনতার ঢলে’ সমাবেশ করে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বার্তা দেয়ার লক্ষ্যেই কাজ করছেন ঐক্যফ্রন্টভুক্ত দলগুলোর সিলেটের নেতারা। এজন্য চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। বিশেষ করে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে সাজ সাজ রব।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৩ অক্টোবর বিএনপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, গণফোরাম ও নাগরিক ঐক্য মিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তি, বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসহ ৭ দফা দাবিতে এই ফ্রন্ট গঠিত হওয়ার পর তাদের প্রথম মাঠের কর্মসূচি সিলেটের এই সমাবেশ। এর মাধ্যমে চূড়ান্ত আন্দোলনের আগে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিশেষ বার্তা দিতে চায় ঐক্যফ্রন্ট। এজন্য সিলেটে সমাবেশে সর্বস্তরের জনতার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তৎপর ঐক্যফ্রন্টভুক্ত দলগুলো।

সংশ্লিষ্ট দলগুলোর সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার সিলেটে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়ে উজ্জীবিত ও তৎপর হয়ে ওঠেন দলীয় নেতাকর্মীরা। বিএনপি, গণফোরাম, নাগরিক ঐক্যের নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি সভা ও সমন্বয় সভা করেছেন। রবিবার রাতেই ঐক্যফ্রন্টভুক্ত সব দলগুলোর নেতাদের অংশগ্রহণে সমাবেশের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। কাল সোমবার গণফোরাম ও বিএনপি পৃথকভাবে সভা করেছে।

সূত্র জানায়, সমাবেশে ‘জনতার ঢল’ নামাতে জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছেন। জেলা বিএনপি তাদের আওতাভুক্ত ১৩টি উপজেলা ইউনিটকে নিজ নিজ শাখার ব্যানারসহ সমাবেশে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। একই নির্দেশনা মহানগর বিএনপি তাদের আওতাধীন ২৭টি ওয়ার্ড বিএনপিকে দিয়েছে। এদিকে, গণফোরাম ও নাগরিক ঐক্য তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে জেএসডির তেমন তৎপরতা দৃশ্যমান নয়। দলীয় নেতাকর্মীদের বাইরে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ বাড়াতেও তৎপর বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলো।

এদিকে, সমাবেশ সফল করতে কাল সোমবার দুপুর থেকে মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণা শুরু হয়েছে সিলেটজুড়ে। এছাড়া চলছে লিফলেট বিতরণও।

এ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম সিলেটভিউকে বলেন, ‘শেষমুহুর্তে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছি আমরা। কিন্তু বিশাল সমাবেশ করার সকল প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। আমরা দফায় দফায় সভায় বসছি। মাইকিং হচ্ছে, লিফলেট বিতরণও করা হচ্ছে। পূণ্যভূমি থেকে ঐক্যফ্রন্টের যে যাত্রা শুরু হচ্ছে, তা শুভ ও সফল হবে।’

সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ সিলেটভিউকে বলেন, ‘সমাবেশ সফল করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। আমরা সমাবেশের জন্য অল্প সময় পেয়েছি। এই সময়ের মধ্যেই সর্বোচ্চ সংখ্যক জনতার অংশগ্রহণের চেষ্টা আমরা করছি।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রথমে ২৩ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সিলেটে সমাবেশ করতে চেয়েছিল। তবে পুলিশ সমাবেশের অনুমতি দেয়নি। পরে ২৪ অক্টোবর (বুধবার) সমাবেশের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এ দফায়ও সমাবেশের অনুমতি নিয়ে চলে নানা বিতর্ক। প্রথমে পুলিশ অনুমতি দেয়নি। ফলে ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুব্রত চৌধুরী স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজিপি ও সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আইনি নোটিশ পাঠান। রবিবার বিএনপি নেতা আলী আহমদ হাইকোর্টে রিট করেন। তবে আইনি সুরাহা হওয়ার আগেই, রবিবার সন্ধ্যায় ঐক্যফ্রন্টকে সমাবেশের অনুমতি দেয় পুলিশ।

সমাবেশের বিষয়ে সিলেট জেলা নাগরিক ঐক্যের সদস্যসচিব তৌফিক পাশা সিলেটভিউকে বলেন, ‘সমাবেশকে কেন্দ্র করে আমরা নেতাকর্মীদের একত্রিত করার চেষ্টা করছি, সভাও করেছি। সর্বস্তরের নেতাকর্মী যাতে সমাবেশে উপস্থিত থাকে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।’

সিলেট মহানগর গণফোরামের সভাপতি এডভোকেট আনসার খান সিলেটভিউকে বলেন, ‘আমরা সমাবেশের জন্য জনগণের সাথে যোগাযোগ রাখছি, কর্মীদের সাথে কথা বলছি। ঘরোয়া বৈঠকও করছি। তবে পুলিশের বাধার কারণে বড় ধরনের কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও আমরা নেতাকর্মীদের মানুষের ঘরে ঘরে যেতে নির্দেশ দিয়েছি।’

এদিকে, সিলেটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই সমাবেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন গতি পাবে বলে মনে করছে বিএনপি।

সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকি সিলেটভিউকে বলেন, ‘এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের দিকেই যাত্রা শুরু করছি। আমাদের মূল লক্ষ্য খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৩ অক্টোবর ২০১৮/আরআই-কে

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন