আজ মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ইং

দয়ামীরে মাটি খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধার: বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় খুন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১১-০৮ ১২:৪১:৪৯

গ্রেফতার হওয়া আসামীরা। ইনসেটে নিহত তিশা।

রনিক পাল, ওসমানীনগর :: সিলেটের ওসমানীনগরের দয়ামীরে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা লাশের সঠিক পরিচয় পাওয়া না গেলেও এ ঘটনায় মামলা দায়ের করে ৪ জনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ। আদালতে তারা ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামীদের জবানবন্দি থেকে খুন হওয়া মহিলা তিশা বেগম বলে জানা গেছে। তবে তার ওই নারীর সম্পূর্ণ পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

৬ নভেম্বর এস আই সাইফুল মোল্লা বাদি হয়ে এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৩। বুধবার বিকাল ৪টার দিকে সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১ এর বিচারক কানন দেব আসামীদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়া আসামিরা হলেন- উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের খালপাড় গ্রামের মৃত হরমুজ আলীর ছেলে আব্দুল বারিক, তার কথিত স্ত্রী জামালপুর জেলার ভাটি গজারিয়া এলাকার ওয়াহিদ আলীর মেয়ে নাসরিন বেগম পাখি, তার ভাগ্নে একই গ্রামের মইন উদ্দিনের ছেলে মাসুম মিয়া।

এছাড়া একই আদালতে হত্যাকান্ডের মূল হোতা ও মামলার প্রধান আসামি আবুল বারীকের মেয়ে ময়না বেগম, মোনালিসা, আব্দুল বারিকের বোন নেহার বেগম ও দয়ামীর বাজারের পাহারাদার আব্দুল গনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

আদালতের বরাত দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম জানান, ৪ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে তিশা বেগমকে নিয়ে আসামি সেলিম মিয়া দয়ামীরের খালপাড় গ্রামের আব্দুল বারিকের বাড়ি যায়। আব্দুল বারিককে দিয়ে মদ আনিয়ে সেলিম মিয়া ও তিশা বেগম দু’জনে পান করেন। মদপানকালে তিশাকে সেলিম মিয়া বিয়ের প্রস্তাব দিলে তিশা বিয়েতে রাজি না হলে উভয়ের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়।

জবানবন্দিতে আসামীরা বলেছে, ‘রাত আনুমানিক ৩টার দিকে আব্দুল বারিকের শোয়ার ঘরে তিশার গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে সেলিম মিয়া ও আব্দুল বারিক তিশাকে হত্যা করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর রাতেই আব্দুর বারিকের কথিত স্ত্রী নাসরিন বেগম পাখি, তার ভাগ্নে মাসুম এবং আরও ৩/৪ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি রিকশা চালকের সহায়তায় দয়ামীর বাজারের কনাইশা (রহ.) মাজারের পশ্চিমে খালি জায়গায় লাশ মাটিচাপা দিয়ে রাখে।

ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আল মামুন তিন আসামির আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অন্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিরা নিহত নারীর যে নাম পরিচয় দিয়েছিল তাতে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, গত ৫ নভেম্বর সকাল ১১টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দয়ামীর বাজারের কনাইশা (রহ.) মাজারের পশ্চিমে একটি খালি জায়গা থেকে মাটিচাপা দেয়া এক অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮ জনকে আটক করে পুলিশ। এর মধ্যে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ৪ জন হত্যাকান্ডর সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৮নভেম্বর২০১৮/আরপি/এমইউএ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন