Sylhet View 24 PRINT

শাবিতে অসামাজিক কাজে বাধা, গার্ডকে মারধর করলেন ছাত্রলীগ নেতা!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১২-০৬ ১৮:০৮:৩২

শাবি প্রতিনিধি :: বন্ধুর অসামাজিক কাজে বাধা দেয়ায় এক গার্ডকে (প্রহরী) মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসিফ হোসেন রনির বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার শহীদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগসূত্রে জানা গেছে।
বিষয়টি রনি অস্বীকার করলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার ও প্রক্টর বরাবর প্রেরিত এক অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী ওই গার্ড আসিফ হোসেন রনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।

তিনি উল্লেখ করেন, ‘‘গত ৪ ডিসেম্বর গাজী কালুর টিলায় ডিউটিরত অবস্থায় এক যুগলকে আপত্তিকর অবস্থায় পেলে তিনি প্রক্টর অফিসে জানান এবং নির্দেশ অনুসারে তাদেরকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ওই যুগল ওসমানী মেডিকেলের শিক্ষার্থী বলে নিজেদেরকে পরিচয় দেয় এবং ক্যাম্পাসে রনি তাদের পরিচিত বলে জানায়। এমতাবস্থায় রনি ওই গার্ডকে ফোনে তাদেরকে ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন। প্রক্টর অফিসে নেয়ার পথে শহীদ মিনারের টিলার পাদদেশে এলে রনির সাথে তাদের দেখা হয়। এসময় প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়ার কথা শুনে রনি ‘প্রক্টরের গুষ্ঠি মারি’ বলেই তার উপর হামলা চালান। রনি তার কানে জোরে জোরে চড় দেন, মাথায় আঘাত ও বুকে ঘুষি মারেন। পরে মারধরের কথা প্রক্টরকে জানালে ওই গার্ডের চাকরি ‘খেয়ে ফেলবেন’ বলে হুমকিও প্রদান করেন রনি। এরপর ওই যুগলকে অটোরিকশায় তুলে দেন রনি।’’
পরে ওই গার্ড বিষয়টি প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদকে অবহিত করেন এবং ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেন।

অভিযোগকারী ওই গার্ড জানিয়েছেন, কানে আঘাত পাওয়ার ফলে এখন তার কান থেকে পানি পড়ছে এবং বাম কানে শুনতে পাচ্ছেন না। অন্যদিকে বুকে এলোপাথাড়ি ঘুষির ফলে তিনি এখন বুকে ব্যথা পান।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করে উল্টো গার্ডের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেছেন আসিফ হোসেন রনি। তিনি বলেন, ‘ওই গার্ডের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে যা প্রক্টরের কাছে জানালে গার্ডের চাকরি চলে যাবে।’

তবে চড় মারার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ওই মেয়ের সাথে বাজে ব্যবহার করার কারণে তিনি তাকে চড় মারেন।

‘গার্ডের দায়িত্ব ছিনতাই প্রতিরোধ করা, ছেলে মেয়ে হাত ধরে বসে থাকলে সেটা দেখার দায়িত্ব তার না’ বলেও মন্তব্য করেন রনি।
প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ ওই গার্ডের বিষয়ে বলেন, ‘ওই গার্ড যথেষ্ট নিষ্ঠা ও দায়িত্ব নিয়ে গাজী কালুর টিলা এলাকায় অনেকদিন যাবত ডিউটি করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর দ্বারা একজন গার্ডকে মারধরের বিষয়টি অত্যন্ত নিন্দাজনক। আমি এ বিষয়টি ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ স্যারকে জানিয়েছি। উনি দ্রুত তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।’

এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সহকারী প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক সামিউল ইসলামকে প্রধান করে কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন সহকারী প্রক্টর আবু হেনা পহিল ও মো. শাকিল ভ’ঁইয়া। কমিটিকে অতিদ্রুত তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আসিফ হোসেন রনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রনি-সাখাওয়াত গ্রুপের অন্যতম প্রধান নেতা। এর আগে ২০১৫ সালে ফুটবল খেলা নিয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগ ও আইপিই বিভাগের সংঘর্ষে এক সহকারী প্রক্টরকে লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। ওই সময় তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/৬ ডিসেম্বর ২০১৮/মেক/আরআই-কে

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.