Sylhet View 24 PRINT

সিলেটে ২২৯ বছর পর ‘তাদের’ নতুন ঠিকানা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০১-১১ ০০:১৭:২৭

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক :: অপেক্ষার অবসান ঘটছে অবশেষে। দীর্ঘ ২২৯ বছর পর মিলছে নতুন ঠিকানা। জরাজীর্ণ ভবন ছেড়ে স্থান হচ্ছে আধুনিক ভবনে।

সিলেট নগরীর ধোপাদিঘীরপাড়স্থ পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে শহরতলির বাদাঘাটস্থ নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারে আজ শুক্রবার থেকে স্থানান্তর করা হচ্ছে বন্দিদের। বন্দি স্থানান্তর কার্যক্রম চলবে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত।

এ বিষয়ে ‘নিরাপত্তাজনিত কারণে’ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন সিলেটের জেল সুপার আব্দুল জলিল।

তবে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এমনকি বন্দি স্থানান্তর কার্যক্রমের জন্য বন্দিদের সাথে স্বজনদের সাক্ষাৎ বন্ধ রাখা হয়েছে।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত বন্দিদের সাথে স্বজনদের সাক্ষাৎ কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্দিদের নতুন কারাগারে স্থানান্তরের জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

নগরীর ধোপাদিঘীরপাড় এলাকায় রয়েছে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার। ১৭৮৯ সালে এলাকায় আসামের তৎকালীন কালেক্টর জন উইলিয়াম প্রায় ১ লাখ ভারতীয় রুপি ব্যয়ে ২৪.৬৭ একর জমির ওপর ‘সিলেট কারাগার’ নামে এটি নির্মাণ করেন। তৎকালীন আসাম রাজ্যের একমাত্র টিবি হাসপাতাল ছিল এ কারাগারেই। ১৯৯৭ সালে এ কারাগারকে কেন্দ্রীয় কারাগারে উন্নীত করা হয়। কারাগারের ধারণক্ষমতা ১২১০ জন হলে এখানে দ্বিগুণেরও বেশি বন্দি আছেন। এছাড়া ২শ’ বছরের পুরনো হওয়ায় কারাগারটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এসব বিবেচনায় শহরতলির বাদাঘাটে নতুন কারাগার নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। ২০১০ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (একনেক) সিলেট কারাগার স্থানান্তর প্রকল্প পাস হয়। পরে প্রকল্পের লে-আউট প্ল্যান প্রণয়ন করে সিলেট গণপূর্ত বিভাগ। তাদের অধীনেই শুরু হয় নির্মাণ কাজ।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্প হিসেবে শুরু হয় নতুন কারাগারের নির্মাণ কাজ। ২০১১ সালের ১১ আগস্ট তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনকে সাথে নিয়ে এটির নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী।

চেঙ্গেরখাল নদীর তীরে ৩০ একর জমির ওপর নির্মিত কারাগারের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৫ সালের জুনে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাবিব কনস্ট্রাকশন, কৈশলী কনস্ট্রাকশন, জেড কনস্ট্রাকশন, ঢালি কনস্ট্রাকশন ও জেবি কনস্ট্রাকশন নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি। তাদের আবেদনে তিন দফায় বাড়ানো হয় নির্মাণ কাজের সময়। সময় বাড়ার সাথে সাথে বেড়ে যায় ব্যয়ও। প্রথমে নির্ধারিত ১৯৭ কোটি টাকার ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২২৬ কোটি টাকায়।

গত ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে নতুন কারগারটি উদ্বোধন করেন। কিন্তু এর পরও কিছু কাজ বাকি থাকায় এবং নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে সেখানে বন্দি স্থানান্তর করা হয়নি।

সিলেট গণপূর্ত অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, নতুন কারাগারে পুরুষ কয়েদিদের জন্য ছয়তলা বিশিষ্ট ৪টি ভবন, মহিলা কয়েদিদের জন্য দ্বিতল বিশিষ্ট দুটি ও চারতলা বিশিষ্ট একটি ভবন রয়েছে। আছে ১শ’ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, চারতলা বিশিষ্ট ডে কেয়ার সেন্টার, কয়েকদিরে সাথে সাক্ষাতের কক্ষ, মসজিদ, লাইব্রেরি, ক্যান্টিন, প্রশাসনিক কার্যালয়, তিনটি ওয়াচ টাওয়ার, কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসনের জন্য ১৩০টি ফ্ল্যাট, প্রহরী কক্ষ, গ্যারেজ, খাদ্য ও জ্বালানি গুদাম প্রভৃতি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১১ জানুয়ারি ২০১৯/আরআই-কে

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.