আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

সিলেটে ৮৭ কোটি টাকায় যা হচ্ছে সেই ছাত্রাবাসস্থলে

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৩-১৫ ০০:৩৮:৪৬

রফিকুল ইসলাম কামাল :: সিলেট নগরীর ‘আবু সিনা ছাত্রাবাস’ নিয়ে চলছে নানামুখী আলোচনা। এই ছাত্রাবাসের একতলা ভবন ভেঙে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সিলেট জেলা হাসপাতাল নির্মাণ কাজ চলছে। ৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এই হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।

নগরীর চৌহাট্টা থেকে রিকাবিবাজার সড়কের প্রায় মধ্যবর্তী স্থানে হাতের বাঁ পাশে অবস্থান আবু সিনা ছাত্রাবাসের। প্রায় দেড় শ’ বছরের পুরনো এই ছাত্রাবাসের ভবন। এটির সাথে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিও জড়িয়ে আছে। এসব কারণে প্রতœতাত্ত্বিক সম্পদের আওতায় এনে ভবনটি সংরক্ষণ করে এখানে যাদুঘর প্রতিষ্ঠার দাবি জানাচ্ছেন ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা। এই দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখা। আর ছাত্রাবাস প্রাঙ্গনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সেভ দ্য হেরিটেজ এন্ড এনভায়রনমেন্ট নামক সংগঠনটি।

তবে নির্ধারিত স্থানেই সিলেট জেলা হাসপাতাল নির্মাণ কাজ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী, সিলেট-১ আসনের সাবেক সাংসদ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের বড় ভাই আবুল মাল আব্দুল মুহিত। তিনি বলেছেন, ‘১৯৩৬ সালে এ স্থানে হাসপাতাল ছিল। এখন নতুন করে এখানে হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে। কোনো বাধাই এ কাজ আটকাতে পারবে না।’

গণপূর্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গেল বছরের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘সিলেট জেলা হাসপাতাল’ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। এরপর গেল বছরের জুলাইয়ের ৯ তারিখ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিকেবিপিএল-পিএইএল (জেভি) কার্যাদেশ পায়। ৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২৪ মাস।

গেল প্রায় দুই মাস ধরে প্রকল্পের কাজ জোরেশোরেই চলছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আবু সিনা ছাত্রাবাসের খালি মাঠে কয়েক শ’ পিলার রাখা। পাইলিংয়ের কাজে ব্যবহার করতে এসব পিলার তৈরি করা হয়েছে।

রাজু আহমদ নামের এক শ্রমিক জানালেন, ইতিমধ্যেই প্রায় ৫শ’ পিলার তৈরি করা হয়েছে। আরো সাড়ে ৩শ’ পিলার তৈরি করা হবে।

প্রকল্পের কাজের জন্য ইট, বালু, পাথর, সিমেন্ট, রড প্রভৃতি স্ত’প করে রাখা হয়েছে। মাঠের কয়েকটি গাছও কাটা হয়েছে। আনা হয়েছে স্ক্যাভেটর, পাইলিং মেশিন।

প্রকল্প স্থানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাউকে পাওয়া যায়নি। কর্মরত শ্রমিক মোজাহার আলী জানান, প্রায় অর্ধশত শ্রমিক গত দুই মাস ধরে এখানে কাজ করছেন।

গণপূর্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১৫ তলা ভিতবিশিষ্ট সিলেট জেলা হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে বর্তমানে বেসমেন্টসহ হবে ৮ তলা ভবন। এর বেসমেন্টে থাকবে পাকিংয়ের ব্যবস্থা।

ভবনের প্রথম তলায় টিকেট কাউন্টার, ওয়েটিং রুম, রান্নাঘর প্রভৃতি থাকবে। দ্বিতীয় তলায় থাকবে আউটডোর, তৃতীয় তলায় রোগ নির্ণয় কেন্দ্র (ডায়াগনস্টিক), চতুর্থ তলায় কার্ডিয়াক, জেনারেল ওটি, আইসিইউ ও সিসিইউ, পঞ্চম তলায় গাইনি, অবথালমোলজি, অর্থোপেডিক বিভাগ ও ইএনটি থাকবে।

নির্মাণাধীন ভবনটির ষষ্ঠ তলায় ওয়ার্ড ব্লক এবং বার্ণ ইউনিট থাকবে, সপ্তম তলায় ওয়ার্ড ব্লক এবং অষ্টম তলায় থাকবে কেবিন ব্লক।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৫ মার্চ ২০১৯/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন