Sylhet View 24 PRINT

জকিগঞ্জে বরাক মোহনায় বালুচর, খোঁজ নিবেন বিজন বাবু

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৩-১৬ ০০:৩৩:৪৩

এনামুল কবীর, জকিগঞ্জ থেকে ফিরে :: সুরমা-কুশিয়ারার বিভিন্ন স্থানে বিশাল বিশাল চর জেগে উঠছে। বিশেষ করে সুরমার কোন কোন স্থানেতো বৈশাখ নয়, মাঘ-ফাল্গুনেই ‘হাঁটু জল’ অবস্থা! শুকিয়ে মৃতপ্রায়! অথচ সরকারের টনক নড়ছেইনা। পরিবেশবাদীসহ সচেতন নাগরিকরা যতই চেঁচামেচি করছেন ড্রেজিংয়ের জন্য, কুম্ভকর্ণের নিদ্রা যেন ততই গাঢ় হচ্ছে। এদিকে সিলেট অঞ্চলের প্রধান দুটি নদী সুরমা-কুশিয়ারার উৎসস্থল জকিগঞ্জের তে-গাঙ্গায় বরাক মোহনাও ধুধু বালুচর! যথারীতি কর্তারা উদাসীন। যেনো কারো কিছু করার নেই।

সম্প্রতি সরজমিনে দেখা যায়, বরাকের মোহনাটিতে বালি আর বালি। ছোট একটি খালের মতো পানি প্রবাহ। অবস্থা এমন যে, সুরমাকে আর নদী বলে মনেই হয়না। যেটুকু পানি আছে তাতে কোন স্রোত নেই। অনেকটা পুকুর বা বিল-জলাশয়ের মতোই স্থির।

বরাক মোহনায় যে বিশাল চর দেখা দিয়েছে তা মোটেও নতুন নয়। অন্তত গত ১৫/১৬ বছর থেকেই তা হচ্ছে। মাঝে মাঝে জকিগঞ্জের বিভিন্ন সংগঠন পত্র-পত্রিকায় বিবৃতি বা ঘরোয়া সভা-সমাবেশের মাধ্যমে ড্রেজিংয়ের জন্য সরকারের নিকট দাবি জানালেও কে শুনে কার কথা!

জকিগঞ্জের সমীন্তবর্তী গ্রাম আমলশীদ। এখানে এসে প্রকৃতির বিচিত্র খেয়ালে বরাক জন্ম দিয়েছে সুরমা ও কুশিয়ারা নামে তার দুটি শাখা। তিন নদীর মিলনস্থল বলে স্থানীয়ভাবে জায়গাটি তে-গাঙ্গা নামে পরিচিত।

বরাকের উৎপত্তি ভারতে মনিপুর রাজ্যের পাহাড়ে। তবে তে-গাঙ্গায় সুরমা কুশিয়ারা জন্ম দেওয়ার আগে বাংলাদেশে তার শেষাংশটিও বরাক নামে পরিচিত। সেই হিসাবে নদীটির মালিকানা আমাদেরও। তে-গাঙ্গায় বরাকের বাংলাদেশের অংশটি এখন বিশাল বালুচর! নদীর পানি প্রবাহ এতটাই সরু যে, তা বড়জোর একটা খালের মতো। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার দেশের মিঠা পানির প্রধান উৎস, নদ-নদীগুলো রক্ষায় বরাবর উদাসীন।

উদাসীন সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার ব্যাপারেও। বিভিন্ন স্থানে নদী দুটি ড্রেজিংয়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে বহু বছর আগে। মাঝে মাঝে দু’একজন সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মুখে তা করা হবে বলে শোনা গেলেও তা কেবল বলা ও শোনার মধ্যেই আবারো যথারীতি গায়েব হয়ে যায়। বাস্তব কোন উদ্যোগই দেখা যায়না। বরাক মোহনার ক্ষেত্রেও তাই বাস্তবতা। কেউ তা গুরুত্বই দিচ্ছেন না।

এখানে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে শুকনো মওসুমে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে পারলে সুরমা-কুশিয়ারায় অনেক বেশি পানি থাকতো। এতে যেমন নাব্যতা বজায় থাকতো, তেমনি স্বাভাবিকভাবে নৌযানও চলাচল করতে পারত। আর দুটি নদীর সুস্বাদু মাছের সাধও আরো বেশি পেতেন সিলেটবাসী। সুরমা-কুশিয়ারার মৎস্য সম্পদ যে আশংকাজনহারে কমছে, বরাক মোহানা ড্রেজিং না করানোও তার অন্যতম প্রধান একটি কারণ।

অথচ গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টির দিকে সরকারি কর্মকর্তাদের নজর দেওয়ার যেন সময়ই নেই! সম্প্রতি জকিগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজন কুমার সিংহ এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে জানান, বরাক মোহনা ড্রেজিংয়ের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।

পরে আবার বলেন, আগের ইউএনও এ ব্যাপারে একটি প্রস্তাব জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর এর আর কোন খোঁজ-খবর তিনি জানেন না!

তবে বিজন বাবু আশ্বাস দিয়েছেন, তিনি খোঁজ খবর নিবেন।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ১৬ মার্চ ২০১৯/এক

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.