আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

ওসমানীনগরে কেয়ারটেকার হত্যার রহস্য উদঘাটন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৩-১৯ ১৮:৩২:০৯

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক :: সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় আনিছ উল্লাহ আনিক নামের এক কেয়ারটেকারকে হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। তিনজন মিলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। পুলিশ দাবি করেছে, আনিকের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা পাওয়া যাবে এই ধারণায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ওসমানীনগর উপজেলার সাদীপুর ইউনিয়নের ধরকা গ্রামের আনিছ উল্লাহ আনিক (৫০) গত রবিবার রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি। পরদিন সোমবার পার্শ্ববর্তী পূর্ব তাজপুর গ্রামের কানাডা প্রবাসী আলা উদ্দিনের বাসার পানির ট্যাঙ্ক থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। আনিক ওই বাসার কেয়ারটেকারের দায়িত্বে ছিলেন।

এ ঘটনায় আটককৃতরা হলেন- দক্ষিণ রাইকদ্বারা (দিগল গয়াছপুর) গ্রামের আজমল আলীর ছেলে সুমন রশিদ (৩০), মঙ্গলপুর গ্রামের মো. ইব্রাহিমের ছেলে শাওন মিয়া (৩৫) ও হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সোরাবই গ্রামের মৃত আবু মিয়ার ছেলে নানু মিয়া (২৪)।

আজ মঙ্গলবার পুলিশ জানায়, আনিছ উল্লাহ আনিককে গত রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে একজন লোক ডেকে নিয়ে যায়। রাতে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ পান স্ত্রী আফসা বেগম হাফসা। প্রবাসী আলা উদ্দিনের বাসায় সেটি বন্ধ দেখতে পান তিনি। পরে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন। কাল সোমবার ভোরে আলা উদ্দিনের দু’তলা বাড়ির ছাদের ট্যাঙ্ক থেকে হাত, পা ও মুখ বাঁধা ও গলায় রশি পেছানো অবস্থায় আনিকের লাশ উদ্ধার করা হয়।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মাহবুবুল আলম জানান, স্বামী হত্যার ঘটনায় মামলা করেন হাফসা। পুলিশ মঙ্গলপুর গ্রাম থেকে সুমন রশিদ ও শাওন মিয়াকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের তথ্যানুসারে নানু মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, সুমন রশিদ ঋণগ্রস্থ। মানুষের টাকা ফেরত দিতে না পারায় সে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আত্মগোপন করেছিল। এদিকে আনিছ উল্লাহ আনিক বিভিন্ন মসজিদ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে টাকা প্রদান করতেন। মূলত এ টাকা প্রবাসী আলা উদ্দিনেরই। এ থেকে সুমন ধারণা করে আনিককে ধরলে বড় অঙ্কের টাকা পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে সে শাওন ও নানুর সাথে পরামর্শ করে। তবে তাদের কাছে সুমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে বলে, পূর্ব তাজপুরের এক ব্যক্তির কাছে সে ১৫ লাখ টাকা ও ১৫ ভরি স্বর্ণ পায়। কিন্তু ওই ব্যক্তি এগুলো না দিয়ে টালবাহনা করছে। তাকে হত্যা করতে শাওন ও নানু সহযোগিতা করলে বড় অঙ্কের টাকা দেয়ার লোভ দেখায় সুমন।

পুলিশ কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম আরো জানান, গত রবিবার রাতে তারা তিনজন মিলে পূর্ব তাজপুরে প্রবাসী আলা উদ্দিনের বাসায় যায়। সুমন কেয়ারটেকার আনিককে বাড়ি থেকে বাসা ভাড়া নেয়ার কথা বলে ডেকে আনে। এরপর সুযোগ বুঝে গামছা দিয়ে আনিকের মুখ বেঁধে ফেলে সুমন, শাওন ও নানু রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপর রশি দিয়ে সুমন ও নানু আনিকের গলায় ফাঁস লাগিয়ে টানতে থাকে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর আনিকের মরদেহ ছাদের ওপর পানির ট্যাঙ্কে ফেলে রাখে তারা। ওই বাসায় ঘন্টাখানেক অবস্থান করে নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করে পালিয়ে যায় তারা।

এদিকে গ্রেফতারকৃতরা আজ আদালতে হত্যার স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসমানীনগর থানার ওসি আল মামুন।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৯ মার্চ ২০১৯/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন