আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সিলেট বিভাগে বিদ্রোহে নৌকা কাত!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৩-২০ ০০:১৬:০৩

রফিকুল ইসলাম কামাল :: রাজনীতির মাঠের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপি ছিল না নির্বাচনে। ফাঁকা মাঠ, সহজেই জয় দেখছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। কিন্তু সেই ফাঁকা মাঠকে গরম করে তুললেন আওয়ামী লীগেরই কতিপয় নেতা, যারা দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে হন ‘বিদ্রোহী’। তাদের বিদ্রোহের কারণেই উপজেলা নির্বাচনে সিলেট বিভাগে একচেটিয়া জয় পাননি আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। দাপুটে অবস্থানে নৌকাকে পুরোপুরি ‘ডুবাতে’ না পারলেও ‘কাত’ করতে পেরেছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা।

সিলেট বিভাগের চারটি জেলায় দুই ধাপে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম ধাপে গেল ১১ মার্চ সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলায় এবং দ্বিতীয় ধাপে গেল ১৮ মার্চ সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার উপজেলাগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়েছে নির্বাচন।

প্রথম ধাপে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ এবং হবিগঞ্জ জেলার ১৭টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে সহিংসতার কারণে নির্বাচনের দিনই সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করে ইসি। বাকি ১৬টি উপজেলার মধ্যে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা জয় পান ৮টিতে। অন্য ৮টিতে জয় তুলে নেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তবে এই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন ৪ জন।

দ্বিতীয় ধাপে সিলেট এবং মৌলভীবাজার জেলার উপজেলাগুলোতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের অবস্থা হয় আরও করুণ। এ ধাপে সিলেটের ১২ উপজেলার মধ্যে ৫টিতেই জয় তুলে নেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা; বাকি ৭টিতে জয় পায় নৌকা।

অন্যদিকে মৌলভীবাজার জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। বাকি ৬টিতে হয় ভোটের লড়াই। এ লড়াইয়ে ধরাশায়ী হন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা, মাত্র ২টিতে জয়ের মুখ দেখেন তারা। বাকি ৪টিতেই জয় পান দলটির বিদ্রোহী প্রার্থীরা।

এ ধাপে দুটি জেলায় চেয়ারম্যান পদে ভোট হওয়া ১৮টি উপজেলার মধ্যে ৯টিতেই জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা।

সবমিলিয়ে সিলেট বিভাগে চেয়ারম্যান পদে ভোট হওয়া ৩৪টি উপজেলার মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন ১৭টিতে। দলটির বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন ১৩টিতে। বাকি ৪টি উপজেলায় বিএনপির তিন বহিষ্কৃত নেতা এবং এলডিপির এক নেতা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিএনপি ভোটের লড়াইয়ে না থাকা স্বত্ত্বেও ৩৪টি উপজেলার মধ্যে মাত্র অর্ধেকে আওয়ামী লীগের জয় পাওয়ার পেছনে দলটির অভ্যন্তরীণ কোন্দলই কাজ করেছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় সংসদ সদস্যরাও দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেননি বলে অভিযোগ ওঠেছে। উদাহরণ দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বলছেন, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী কয়েসের নিজের ভোটকেন্দ্রে নৌকা প্রতীক পেয়েছে মাত্র ২৭ ভোট। অথচ একই কেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ওহিদুজ্জামান ছফি পেয়েছেন ১০৩৩ ভোট। দলে কোন্দল না থাকলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরাই সিংহভাগ উপজেলায় জয় পেতেন বলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধারণা।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২০ মার্চ ২০১৯/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন