Sylhet View 24 PRINT

খোয়াই’র চরে মিষ্টি কুমড়া চাষ, পচন রোগে লাভে ভাটা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৩-২৫ ১৮:৫২:৪০

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: হবিগঞ্জ শহরকে তিনদিক থেকে ঘিরে রেখেছে ‘খোয়াই নদী’। দূর্বল প্রতিরক্ষা বাধের কারণে বর্ষা মৌসুমে যে খোয়াই শহরবাসীর আতঙ্ক হয়ে দাড়ায়, শুষ্ক মৌসুমে সেই খোয়াই নদীই হাসি ফোঁটায় তীরবর্তী মানুষদের। শুষ্ক মৌসুমে খোয়াই নদীর চরে বিভিন্ন সবজি চাষ করে সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন অনেক পরিবার।

শীত মৌসুমে শীতকালিন সবজি আর গ্রীষ্মকালে গ্রাষ্মকালিন বিভিন্ন সবজি চাষ হয় খোয়াই নদীর চড়ে। তবে বালুচর হওয়ার কারণে গ্রীষ্মকালে সব চেয়ে বেশি চাষ হয় মিষ্টি কুমড়া। বালিমাটি মিষ্টি কুমড়ার জন্য সব চেয়ে বেশি উপযোগী হওয়ায় প্রতি বছরই খোয়াই নদীর চরে মিষ্টি কুমড়ার বাম্পা ফলন হয়।

তবে এ বছর কিছুটা ব্যথিক্রম। প্রথম অবস্থায় বাম্পার ফলন আসলেও গুটি আসার মাসখানেক পর দেখা দেয় পচন রোগ। অধিকাংশ মিষ্টি কুমড়ার গুটি পচে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের। তবে মিষ্টি কুমড়া চাষে খরচ কম হওয়ায় লোকসান না আসলেও ভালো লাভের আসা ছেড়ে দিয়েছেন তাঁরা।

কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, মিষ্টি কুমড়া উৎপাদন করতে খরচ ও পরিশ্রম কম লাগে। খোয়াই নদীর চরে বালু থাকায় সেখানে কোন ধরণের আঘাচা জন্মে না। প্রথমে মাটিতে গর্ত করে আবর্জনা ফেলে সেই গর্তে মিষ্টি কুমড়ার বীজ বপন করা হয়। এরপর প্রয়োজনমতো সেচ দিলে কিছুদিনের মধ্যেই বড় বড় মিষ্টি কুমড়া পাওয়া যায়। এভাবে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে অনেকেই ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। সংসারে অভাব কেটেছে অনেকের।

কিন্তু এ বছর মিষ্টি কুমড়া চাষ করে ভালো লাভের সম্ভাবনা দেখছেন না কৃষকরা। গুটি আসার মাসখানেক পর ‘গুটিপচা’ রোগ দেখা দেয়। এ সময় জমির অনেক গুটি নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকগুলো আবার বড় হওয়ার পরও পচে গেছে। ফলে এ বছর অন্য বছরের তুলনায় কম লাভ হবে বলে জানান কৃষকরা।

অভিযোগ রয়েছে- কৃষি অফিস থেকে তাদেরকে কোন সহযোগিতা করা হয় না। অভিযোগ নিয়ে গেলেও জেলা কৃষি সম্প্রচারণ অধিদপ্তরের লোকজন কোন কর্ণপাত করেন না।

এ ব্যপারে খোয়াই নদীর তেঘরিয়া এলাকার কৃষক আবু মিয়া বলেন- ‘প্রায় ২০ বছর ধরে আমরা খোয়াই নদীর চরে গ্রীষ্মকালে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে আসছি। খোয়াই নদীর চরে বালু থাকায় এখানে প্রতি বছরই মিষ্টি কুমড়ার ভালো ফলন হয়। কিন্তু এ বছর গুটি আসার সময় অনেক গুটি পচে গেছে। ফলে অন্য বছরের তুলনায় ফলম অনেক কম হয়েছে।’

একই এলাকার অন্য এক কৃষক আব্দুল মুতালিক বলেন- ‘যখন গুটি পচতে শুরু করে তখন আমরা জেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করি। কিন্তু কৃষি অফিসের লোকজন কোন কর্ণপাত করে না। যাব-যাচ্ছি বলেই দিনের দিন দিন কাটিয়ে নেয়।’

মাছুলিয়া এলাকার কৃষক অনুয়ার হোসেন বলেন- ‘দীঘ দিন ধরে খোয়াই নদীর চড়ে বিভিন্ন সবজি চাষ করে আসছি। তবে মিষ্টি কুমড়া সব চেয়ে বেশি ফলে। প্রতি বছর লাখ টাকার মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করতে পারি। তবে সরকারী কোন সহযোগিতা পাই না। যদি সরকার আমাদের প্রশিক্ষণ ও ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করত তাহলে আমাদের অনেক ভালো হত।’

এ ব্যপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ আলী বলেন- ‘খোয়াই নদীর তীরে যারা সবজি চাষ করেন তারা কখনও কোন কিছুর জন্য আমাদের কাছে আসে না। তার পরও আমাদের অফিস থেকে নিয়েমিত তাদের সাথে যোগাযোগ রাখা হয়।’



সিলেটভউ২৪ডটকম/২৫ মার্চ ২০১৯/কেএস/এসডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.