আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

বর্ণাঢ্য আয়োজন আর দৃপ্ত-শপথে নতুন বছর শুরু সিলেটবাসীর

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৪-১৫ ০১:২১:৩১

এনামুল কবীর :: বর্ষবিদায়ের মতোই সিলেটবাসী বর্ণাঢ্য আয়োজনে বরণ করলেন বাংলা নতুন বছরকে। ১৪২৫ সালের সাফল্যে অনুপ্রাণিত ও ব্যর্থতার ক্ষেত্রগুলো থেকে বেরিয়ে আসার দৃপ্ত শপথ নিয়ে শনিবারই বিদায় জানানো হয় বছরটিকে। সিলেটে এ উপলক্ষ্যে অনেকগুলো সংগঠন নানা আয়োজনে শ্রোতা-দর্শকসহ সংস্কৃতিপ্রেমীদের মাতিয়ে রেখেছিলেন।

আর রবিবারতো গোটা সিলেটে উৎসব হয়েছে। বর্ষবরণ উৎসব বলে কথা! ছেলেবুড়ো তরুণ-তরুণী বা যুবক-যুবতীর উচ্ছাসে যেন উচ্ছসিত হয়ে উঠেছিল সিলেট মহানগরী।

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়তো বটে, বর্ষবরণ উৎসবে মুখর হয়ে উঠেছিল পাড়া-মহল্লাগুলোও। সকালে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও তার সহধর্মীনি শামা হকের নেতৃত্বে নগরভবন থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রায় সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা কর্মচারী ও তাদের সন্তানরা অংশগ্রহন করে।

বৈশাখ এলেই বাংলাদেশে মেলার প্রসঙ্গটি আসাও একেবারে অনিবার্য। এটি অনেকটা বাঙালি সংস্কৃতির অপরিহার্য অংশে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর শহর বা গ্রামাঞ্চলে মেলা বসবেই। বসছে এবারো।

রোববার সকালে নগরীর ঐতিহ্যবাহী কিনব্রিজ মোড়ে ও সারদা হলের সামনে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত দুই সপ্তাহব্যাপী বৈশাখী মেলার উদ্বোধন করেছেন। সিলেট মহানগরীতে এবার এটিই সবচেয়ে বড় বৈশাখী মেলা।

এছাড়াও একদিনের সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রুতির আয়োজনে মেলা হয়েছে সিলেটের ব্লু-বার্ড স্কুলের ছোট ক্যাম্পাসে। ১ বৈশাখ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মেলায় অংশগ্রহন করে প্রায় ৩৫টির বেশী ষ্টল। বইপত্রসহ বিভিন্ন ধরণের পণ্যের ষ্টল থাকলেও বেশী ছিল খাবারের। এসব খাবারের মধ্যে ছিল বিভিন্ন ধরণের পিঠাপুুলী ও পায়েশ।

ষ্টলগুলোর নামও ছিল খুব আকর্ষনীয়। যেমন-বাঙালিয়ানা, আমুস কিচেন, স্বাদবাহারী, বাতিঘর, জসিম বুক হাউস, প্রাণ তেল ও দুধ, শাহী খাবার, বিসমিল্লাহ পিঠাবাড়ি ইত্যাদি।

স্বাদবাহারী ষ্টলে তৎপর দুই কর্মকর্তা বা কর্মচারী জনালেন, বিক্রি বেশ ভালোই। সন্তুষ্ট কি-না তা মুখের হাসিই বলে দেয়, তাই আর তার প্রয়োজন হয়নি।

এছাড়াও মঞ্চে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যায় মেলা শেষ হওয়ার পূর্বপর্যন্ত নিয়মিত বিরতীতে চলেছে নৃত্য ও গান। সিলেটের নগরনাট, রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ, সুরের ভূবনে, কৃষ্ঞচুড়াসহ সিলেটের প্রায় সবগুলো সাংস্কৃতিক সংগঠন এই আয়োজনে অংশগ্রহন করে।

রবীন্দ্র সঙ্গীত শেখার প্রতিষ্ঠান আনন্দলোক অন্যান্য বছরের মতো এবারও বর্ষবরণ করেছে। এ উপলক্ষে তাদের অনুষ্ঠান সূচি শুরু হয় সকাল ৮টা থেকে।

আনন্দলোকের আজকের আয়োজনে অংশগ্রহন করেন ভারতের প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী পারমিতা মৈত্র, সুলগ্না বর্মণ বিশ্বাস, সিলেটের প্রখ্যাত শিল্পী জামাল উদ্দিন হাসান বান্না প্রমুখ।

তাছাড়াও অংশগ্রহন করে মুক্তাক্ষর, নজরুল সংগীত সম্মিলন পরিষদ, সিলেট আর্ট অ্যান্ড কালচারাল ইন্সটিটিউট, সারাগামাপা, মৃত্তিকায় মহাকাল নামক সাংস্কৃতিক সংগঠন।
আনন্দলোকের এ আয়োজনে সার্বিক সহায়তা করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন, আইসিসিআর ও ঢাকার ইন্দিরাগান্ধী কালচারাল সেন্টার।

এছাড়াও এমসি কলেজ, মদনমোহন কলেজ, সিলেট সরকারী মহিলা কলেজ, সিলেট সরকারি অগ্রগামী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, মেট্টোপলিটন, লিডিং, ইন্টারন্যাশনাল, নর্থইস্ট ইউনিভার্সিটি, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ, পার্কভিউ মেডিকেল কলেজ ও সিলেট উইমেন্স কলেজেও সারাদিন বিভিন্ন সংগঠন বর্ষবরণ উপলক্ষে নাচ-গান ও কবিতা পাঠের আয়োজন করে।

মোটমাুটি মঙ্গলশোভাযাত্রা, মেলা, নাচ ও গানের মধ্যদিয়ে বাংলা নতুন বছরটাকে বরণ করলেন সিলেটের সর্বস্তরের সচেতন মানুষ। উচ্চারিত হয়েছে, পুরানো বছরে ব্যর্থতাগুলো নতুন বছরে সাফল্যের সোনার কাঠিতে নতুন করে রাঙিয়ে নেয়ার দৃপ্ত অঙ্গীকার।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ১৫ এপ্রিল ২০১৯/এক

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন