আজ বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সুনামগঞ্জের হাওরে ধান কাটার ধুম

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৪-২১ ১১:২৬:২৩

শহীদনুর আহমেদ, সুনামগঞ্জ :: সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে চলছে ধান কাটার ধুম। হাওরের কৃষক কৃষাণী, ধান কাটা, মারাই, শুকানো, প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যস্ত সময় পার করতেছেন। হাওরের বেশির ভাগ ফসল পেকে গেলেও শ্রমিক সংকটের কারণে ধান তুলতে বেগ পেতে হচ্ছে কৃষকদের। আদি বোরো, ব্রি-ধান ২৮সহ বিভিন্ন আগাম জাতের ধানের ফলন কম হওয়া ও শীলাবৃষ্টিতে ৩টি উপজেলায় ধানের ক্ষয়ক্ষতি হলেও জেলার সার্বিক ফললে প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রশারণ অধিদপ্তর।


সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রশারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ২ লাখ ২৪ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে। যার সম্ভাব্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ লাখ ৭৫ হাজার হেক্টর।  মোট আবাদের প্রায় ৫০ ভাগ জমির ধান পেকে গেছে জেলার বিভিন্ন হাওরে। কয়েকদিনের মধ্যে পেকে যাবে হাওরের বাকি ধান। শনিবার পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন হাওরের প্রায় ২৬ ভাগ জমির পাকা ধান কাটা হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিদিনই এর হার বাড়তে থাকবে বলে জানান তারা। শিলাবৃষ্টিতে জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, ছাতক ও দিরাই উপজেলার বিভিন্ন হাওরে পাকা ধানের ক্ষতি হয়েছে। তবে এর পরিমান ২ ভাগ অর্থাৎ ৫০০ হেক্টর জমি বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রশারণ অধিদপ্তর। এদিকে সামনে ভারীবৃষ্টিপাতের আশঙ্কা থাকায় কৃষকদের দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি সম্প্রশারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বশির আহমদ সরকার।


কৃষকরা জানিয়েছেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলার  প্রায় হাওরে ধান পাকা শুরু করলেও শ্রমিকের অভাবে কৃষকরা ধান কাটতে পারছেননা। পাকা ধান কাটতে না পারায় কৃষককুল পড়েছেন নতুন সংকটে। চলতি মাসের মাঝামাঝি টানা বৃষ্টিপাতের সর্তকবার্তা থাকায় সময় মতো ধান কাটতে না পারায় বিপর্যয়ে মুখোমুখী সংশ্লিষ্ট হাওরের কৃষকরা। তাই বাধ্য হয়ে পাকা ধানকাটতে হাওরে যাচ্ছেন কৃষককৃষাণীসহ পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের পুরুষ সদস্যরা ধান কাটলেও পাকা ধান বোঝাই ও সংগ্রহের কাজ করছেন নারী সদস্যরা। আগাম জাতের ফলন কম হওয়া ও শীলা বৃষ্টিতে ধানের ক্ষয়ক্ষতি হলেও উৎপাদন নিয়ে সন্তুষ্ট কৃষকরা। আরো ১৫ দিন সময় পরিবেশ অনুকুলে থাকলে হাওরের ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছন তারা।


দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের  পাকি মারা হাওরে কৃষক মহিবুর রহমান বলেন, শীলাবৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন হাওরে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ২৮ ও ৫৮ জাতের ধানের ফলন ভালো হয়নি। তবে উন্নত ফলনশীল জাতের ফসল ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে হাওরের প্রায় অর্ধেক জমির ধান পাকা শুরু করেছে। শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে পারছেন না কৃষকরা। ১৫ দিন সময় আবহাওয়ার অবস্থা অনুকুলে থাকলে ধান ঘরে তুলতে পারবে কৃষকরা বলে জানান তিনি।

এদিকে হাওরের শ্রমিক সংকট নিরসনে জেলার ধোপাজান, চলতি, খাশিয়ামার, চেলা নদীসহ বিভিন্ন পাহাড়ী ছরা বালু-পাথর কোয়ারি বন্ধ করে শ্রমিকদের হাওরের ধান কাটায় নিয়োগ করতে নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। শ্রমিকদের ধান কাটতে উদ্বুদ্ধ করতে আজ জেলা ব্যাপী ধান কাটা উৎসব পালন করবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। 


সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. বশির আহমদ সরকার বলেন, সুনামগঞ্জে এবার ফলন ভালো হয়েছে। প্রায় ৫০ ভাগ জমির ধান পেকে গেছে। কিছু দিনের মধ্যে বাকি জমির ধানও পেকে যাবে। ধান পাকা শরু করলেও শ্রমিক সংকটের কারনে ধান কাটতে পানছেন না কৃষকরা। বাড়তি লোকবল নিয়োগ করে পাকা ধান দ্রুত কেটে ফেলতে কৃষকদের আহ্বান জানান তিনি।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/২১ এপ্রিল ২০১৯/শআ/ইআ

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন