আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সিলেটের এনামসহ ৩ দালাল আটকের পর যা জানালো র‍্যাব

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৫-১৭ ২১:০৩:৫৮

সিলেটভিউ ডেস্ক :: অবৈধভাবে সাগর পথে ইতালি পাঠানোর নামে জড়িত দালাল চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে র‍্যাব। এদের মধ্যে রয়েছে সিলেটের রাজা ম্যানশনের নিউ ইয়াহিয়া ওভারসিজের এনামুল হক।

অল্প খরচে উন্নত দেশে স্বল্প আয়ের মানুষদের পাঠানোর নামে প্রতারণা করে আসছিলো মানব পাচারকারী চক্রের কয়েকটি এজেন্সি। যাদের এজেন্টরা প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে ঘুরে, উচ্চ বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে আট লাখ টাকায় ইউরোপে পাঠানোর নামে প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করছে।

অবৈধভাবে সাগর পথে লিবিয়া থেকে ইটালি যাওয়ার পথে গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) প্রাণ হারিয়েছেন বহু বাংলাদেশী।  এ ঘটনায় দালাল চক্রের আটক তিন সদস্য সম্পর্কে শুক্রবার (১৭ মে) বর্ণনা দিতে গিয়ে এসব তথ্য দেন র‍্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান।

মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘এ ঘটনায়  আটককৃত তিন মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে উচ্চ বেতনে বিদেশে কর্মসংস্থানের লোভ দেখিয়ে, দীর্ঘদিন যাবত এ ধরনের অপরাধ করে আসছে। চক্রটি বিদেশি যোগসাজশে অবৈধভাবে ইউরোপে লোক পাঠানোর চেষ্টা করে আসছে।

এই মানব পাচারকারী চক্রটির বিদেশে ভ্রমণের জন্য আট লাখ টাকা করে নেয়। যার পাঁচ লাখ টাকা লিবিয়া গমনের পূর্বে এবং বাকি তিন লাখ টাকা লিবিয়া গমনের পর ভিকটিমের আত্মীয়-স্বজনের নিকট থেকে নিচ্ছে।

র‍্যাবের এই মুখপাত্র বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে পাঠানো মানব পাচারকারী এ ধরনের ৫-৬টি এজেন্সি রয়েছে। যার দুটি এজেন্সির তিন সদস্যকে আমরা আটক করতে সক্ষম হয়েছি।’

তাদের বরাত দিয়ে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গত (৯ মে) অবৈধভাবে ইউরোপে গমনকালে ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়ায় উপকূলে নৌকাডুবিতে প্রায় ৮০-৯০ জন নিখোঁজ হয়। যার অধিকাংশ ছিল বাংলাদেশি ৩৯ জন। যার মধ্যে ১৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এই ৩৯ জন বাংলাদেশের মধ্যে, গ্রেফতার হওয়া দুই এজেন্সির তিন সদস্যের পাঠানো বাংলাদেশি ছিল।’

অন্যদিকে ইউরোপে মানব পাচারকারী চক্রের রুট সম্পর্কে র‍্যাব জানান, প্রথমে বাংলাদেশ থেকে লিবিয়াতে পাঠানো হয়। এজন্য তারা তিনটি রুট ব্যবহার করে। সর্বপ্রথম বাসযোগে কলকাতা। কলকাতা বিমানবন্দর যোগে দিল্লিতে। দিল্লি থেকে শ্রীলঙ্কায় প্রেরণ করা হয়।

ভিকটিমরা শ্রীলঙ্কায় এজেন্টদের তত্ত্বাবধানে বেশ কয়েকদিন অবস্থান করেন। তারপর বিমানযোগে ইস্তাম্বুল তুরস্কের ট্রানজিট হয়ে লিবিয়া পাঠানোর ব্যবস্থা করে।

র‍্যাব জানান, ভিকটিমরা ত্রিপলিতে পৌঁছানোর পর, সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশি কথিত ‘গুড লাক ভাই’ সহ আরও কয়েকজন এজেন্ট তাদের গ্রহণ করে থাকে। ত্রিপলিতে আরও কয়েকদিন অবস্থানের পর ভিকটিমদের আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে বাকি অর্থ আদায় করে সমুদ্রপথে ইউরোপে প্রেরণ করা হয়।

আর এভাবেই ঝুঁকিপূর্ণ পথে গমনকালে ভিকটিমরা ভূমধ্যসাগরের মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনার শিকার হয়।

এর আগে গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে, মানবপাচারকারী চক্রের তিন সদস্যকে আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সিলেটের এনামুল হক তালুকদার, রাজধানীর মোহাম্মদ আক্কাস মাতুব্বর ও আব্দুর রাজ্জাক ভূঁইয়া।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৭ মে ২০১৯/শাদিআচৌ/পিডি

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন