Sylhet View 24 PRINT

উদ্বোধনের আগেই জৈন্তাপুরের চিকারখাল ব্রিজে ফাটল, ভেসে গেছে গার্ডওয়াল

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৫-২০ ২১:০২:২০

মো. হানিফ, জৈন্তাপুর ::  এলজিইডি জৈন্তাপুর সিলেটের বাস্তবায়নে ২কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে চিকারখালের উপর ৫৪ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজে ফাটল দেখা দিয়েছে উদ্বোধনের আগেই। তাছাড়া বৃষ্টির পানিতে ব্রিজটির গার্ডওয়ালও ভেসে গেছে।

২০১৭ সালের ৩১ডিসেম্বর এই ব্রিজের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছিলেন বর্তমান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি।

জৈন্তাপুর উপজেলা সদরের সাথে সরসরি যোগাযোগের মাধ্যম তৈরীর লক্ষ্যে খারুবিল টু জৈন্তাপুর ইউনিয়ন ও জৈন্তাপুর বাজার সড়কের চিকার খাল নদীর উপর নব-নির্মিত চিকার খাল ব্রিজ চালুর আগেই পাইলে (পিলার) ফাটল দেখা দিয়েছে। নি¤œমানের বালু-পাথরের সাথে সিমেন্ট ও নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করার কারনে এমনটি হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সরজমিনে কয়েকজন ব্যক্তির সাথে আলাপকালে তারা জানান, নিয়ম অনুযায়ী স্থানীয় উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ঢালাই কাজের পূর্বে সার্বক্ষনিক উপস্থিতি থাকার কথা থাকলেও কাজ করার সময় কোন ইঞ্জিনিয়ারের উপস্থিতিতি তারা দেখতে পাননি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের মর্জি মত ব্রিজের ফাইলিং ৮০ফিটের স্থলে কোনকোন পিলারে ৩৫-৪০ ফুট গভীরে ফাইলিং করে ঢালাইর কাজ সম্পন্ন করে। ঢালাই কাজে কাদ মিশ্রিত বালু, নি¤œমানের পাথর ও মরা পাথর এবং সিঙ্গেল পাথর ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

বিষয়টি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিসে একাধিকবার মোবাইল ফোনে জানালেও তিনি কোন কর্ণপাত করেননি স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর জৈন্তাপুর। বৃষ্টি শুরুতেই পানিতে ব্রিজটির গার্ডওয়াল ধোঁয়ে নিয়ে যায় এবং মাটি সরে গিয়ে পাইলিং পিলারের ফাঁটল বেরিয়ে আসে।

এলাকাবাসীর আশংকা, বর্ষায় ব্রিজটি নদীতে তলিয়ে যেতে পারে। তাদের দাবি, প্রতিমন্ত্রী দ্রæত সরজমিন পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। তাদের আরো অভিযোগ, নানা সুযোগ কাজে লাগিয়ে উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী তানবীর আহমদ আঙ্গুল ফুলে কলা গাছে পরিনত হচ্ছে।

এর আগে সারী নদীর উৎসমূখে শুকসারী নামে পর্যটন উন্নয়ন করর্পোরেশনের প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি জলঘাট উদ্বোধনের ছয় মাসের মাথায় ভেঙ্গে পড়েছিল। এনিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর নয়ছয়ের মাধ্যমে পার পেয়ে যান তিনি। সম্প্রতি চিকারখাল ব্রিজের এমন অবস্থা দেখে সচেতন মহলে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

টিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘নূরুল হক এন্ড তৈয়বুর রহমান জেবি’ মোবাইল ফোনে পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে প্রতিবেদককে জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) জৈন্তাপুর নির্দেশনা মোতাবেক পুরো কাজ হয়েছে। পাইলিং কাজের সময় পশ্চিমপার্শ্বে কয়েকটি পিলার ৩৫ হতে ৪০ ফিটের মধ্যে ঢালাই কাজ করা হয়েছে। ফাইলিং যা গভীরে গিয়েছে ততটুকুর বিল আমাকে দেওয়া হবে। পূর্বপাশের মেইন ব্রিজের ফাইলিংয়ের উপর মূলব্রিজের ভারসাম্য রক্ষার জন্য ক্যাপ স্থাপনের স্থানে ফাটলের বিষয়টি শুনেছি। নদীতে পানি থাকায় আমি ঘটনাস্থলে যেতে পারিনি। এছাড়া ব্রিজের অন্যান্য কাজ যথা নিয়মে হয়েছে।

এবিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) জৈন্তাপুর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী তানভীর আহমদ বলেন, সঠিক নিয়মে কাজ হয়েছে। এবিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। পানির স্রোত বেশি হওয়ায় গার্ডার ভেঙ্গে যায়। এতে ব্রিজের কোন ক্ষতি হবে না।

এবিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) জৈন্তাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান, ৩০ থেকে ৩৫ ফুটের কথা অস্বীকার করে বলেন, প্রতিটি ফাইলিং কাজ ৮০ ফুট সম্পন্ন করে ঢালাই কাজ করা হয়েছে। ক্যাপে ফাটলের বিষয় তার জানা ছিলনা। বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, এটি প্লাষ্টারিং করলে সমাধান হয়ে যাবে। তবে এবিষয়ে লেখা লেখি করে লাভ নেই।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ২০ মে ২০১৯/এমএইচ/এক

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.