আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

নেপুর মিয়া একজন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী: সিলেটে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৫-২২ ২০:১৫:৩৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট সদর উপজেলার খাদিমপাড়া ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামের আজমল আলী নেপুর মিয়া একজন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী। রাতের আঁধারে অসহায় নারীর উপর হামলা, ঘরদোর ভাঙচুর ও শ্লীলতাহানীর অভিযোগে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছেন একই গ্রামের মৃত মন্তাজ আলীর কন্যা রাছনা বেগম (৩৫)।

বুধবার বিকেল ৩টার দিকে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,  ২১ মে জেলা প্রেসক্লাবে সন্ত্রাসী আজমল আলী নেপুর মিয়ার স্ত্রী হারুন বেগম আমাকে ও চেয়ারম্যান আফসর আহমদ এবং শাহপরাণ থানার ওসি আখতার হোসেনকে জড়িয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আসলে নেপুর মিয়া একজন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী। তিনি আমার উপর হামলা করেছেন,  শ্লীলতাহানীর পাশাপাশি ঘরদোর ভাঙচুর করেছেন। আমার দায়েরকৃত নারী নির্যাতন মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মুরাদপুর গ্রামের শাবাজ আলীর পুত্র ইলিয়াস ওরফে বতাই আমার দেবর। আমার পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত জায়গা জমি নিয়ে তার সাথে বিরোধ রয়েছে। সে আমার স্বামীর মুরাদপুরস্থ বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে। এ ব্যাপারে তাকে আসামী করে একাধিক মামলাদায়ের করা হয়েছে। তার ঘর থেকে চুরির মালামাল উদ্ধারও করেছে পুলিশ। ২০১৮ সালে সে ৭ দিন জেল খেটেছে। এই বতাই মিয়ার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হচ্ছে তার চাচা নেপুর মিয়া। তিনি ইলিয়াছ ওরফে বতাইর সাথে বিরোধ নিষ্পত্তির নামে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তিনি আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। ১৬ মে নেপুর মিয়া তার ভাতিজা ইলিয়াছ ওরফে বতাই, রুবেল, হিফজুর, তুরুত মিয়াসহ তার সন্ত্রাসীদের নিয়ে আমার গাছপালা কেটে ফেলেন। আমি প্রতিবাদ করলে রুবেল হিফজুর তুরুত ও বতাই আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে। ঐদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঘরের বাইরে গেলে বতাই, নেপুর মিয়া, রুবেল মিয়া, হোসেন আহমদ, তুরুত মিয়াসহ আরো অচেনা ৫/৬ জন আমার উপর হামলা করে। তারা আমার শ্লীলতাহানী করে।

নেপুর মিয়ার রডের আঘাতে আমার হাত ভেঙে যায়। তাদের হামলা থেকে বাঁচাতে আসা আমার চাচাত ননদ, জা সোনারুন বেগম ও চাচাত দেবর আব্দুল মন্নান ও গুরুতর আহত হন।  আমরা হাসপাতালে ভর্তি হই এবং ছাড়া পেয়ে ১৮ মে দুপুরে শাহপরাণ থানায় নারী নির্যাতন আইনে অভিযোগ (নং ১৮/১৮/৫/২০১৯) দাখিল করি। পরে নেপুর মিয়াও থানায় যান। এসময় পুলিশ তাকে আটক করে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি খাদিমপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আফসর আহমদের সাথে তার ঘনিষ্ট সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে বলেন, একজন নির্যাতিত মানুষ হিসাবে তার সাহায্য প্রার্থী আমি। এর বাইরে তার সাথে আর কোন সম্পর্ক নেই। তিনি শাহপরাণ থানার ওসি আখতার হোসেন জমিজমা নয়, নারী নির্যাতন মামলায় নেপুর মিয়াকে গ্রেফতার করেছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, নেপুর মিয়া ও ইলিয়াস ওরফে বতাইদের কারণে পবিত্র রোজার মাসেও আমি শান্তিতে থাকতে পারিনা, ঈদ করতে পারিনা। তাদের পক্ষ হয়ে খাদিমপাড়ার সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বিলাল ও চোরাকারবারী হাসনাতের নেতৃত্বে যে মানববন্ধন হয়েছে সেখানে কেবল নেপুর মিয়ার সুবিধাভোগিরাই অংশ নিয়েছে। তিনি গ্রেফতার হলেও এখনো তার ভাতিজা ইলিয়াছ ওরফে বতাই, রুবেল ওরফে হেরোইন রুবেল, হোসেন মিয়া ও তরুত মিয়াসহ গয়রহ আসামীরা গ্রেফতার হয়নি। তারা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। যখন তখন আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি করতে পারে তারা। তাই অবিলম্বে তিনি অন্য আসামীদের গ্রেফতার ও ইলিয়াসের দখলে থাকার মরাদপুর বাজারের তার পৈতৃক ভূমিটুকু উদ্ধারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনসহ সিলেটের প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন রাছনা বেগমের স্বামী শায়েস্তা মিয়া, আহত দেবর আব্দুল মন্নান, জা সোনারুন বেগম, ননদ আছিয়া বেগম, প্রতিবেশী নুনু মিয়া, আব্দুর হান্নান, ইসলাম মিয়া, সুরমান আলী, নুরুল আম্বিয়া, ফয়েজ মিয়া, আখলাকুল আম্বিয়া, জদন মিয়া প্রমুখ।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ২২ মে ২০১৯/এক

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন