আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কানাইঘাটে মেয়ের বাড়িতে ইফতারি প্রথার আতংক..

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৫-২২ ২১:৩০:০৬

মাহবুবুর রশিদ, কানাইঘাট প্রতিনিধি :: পঞ্চাশোর্ধ মনির উদ্দিন (ছদ্মনাম) পেশায় একজন কৃষক। অভাব-অনটনের সংসার। রমজানের মাসখানেক আগে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে প্রথম মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন তিনি। এখনও সেই ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। এর মধ্যেই চলে এসেছে পবিত্র রমজান মাস।
মনিরের স্ত্রীর আবদার মেয়ের বাড়িতে ‘পয়লা ইফতার’ ঘটা করে পাঠাতে হবে। তা না হলে শশুর বাড়িতে মেয়ের মুখ রক্ষা হবেনা। মেয়েও বাবাকে ইফতার পাঠানোর জন্য বার বার ফোন করে চাপ দিচ্ছে।

এমনিতেই মেয়ে বিয়ে দিয়ে মনির উদ্দিনের হাতে নেই কোন টাকা-পয়সা। তার উপর মেয়ের বাড়িতে পাঠাতে হবে অনেক টাকার ইফতার। এ যেন “মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা”। তবুও অনেক কষ্ট করে আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে টাকা-পয়সা ধার করে মেয়ের বাড়িতে ইফতার দেওয়ার প্রথা রক্ষা করেছেন মনির উদ্দিন। মনির উদ্দিনের মতো মেয়ের বাড়িতে ইফতার পাঠানোর প্রথা রক্ষা করতে গিয়ে কানাইঘাটের মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোকে নানাভাবে হিমশিম খেতে হয়।

কানাইঘাটের অনেক পরিবারের কাছে ইফতার দেওয়ার প্রথা ঐতিহ্য মনে হলেও মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে এ যেন এক আতংকের নাম।

রমজানের ১০ম দিন কানাইঘাট বাজারে ইফতার কিনতে এসেছিলেন মড়া মিয়া। বড় মেয়ের বাড়িতে ইফতার পাঠাবেন তিনি। বাজারের তালিকা অনুযায়ী ইফতার সামগ্রী কিনতে গিয়ে শেষ হয়ে যায় তার পকেটের টাকা। অনেকটা রাগত স্বরে তিনি বলেন “কোন পাগলে বার করছে ইফতার দেওয়া? ইসলামও (ইসলাম ধর্মে) আছেনি রমজান মাসে ইফতার পাঠানির কথা।’’

প্রতি বছর রমজান মাসে কানাইঘাটে শুরু হয়ে যায় মেয়ের বাড়িতে ইফতার পাঠানোর ধুম। বিত্তবানদের কাছে মেয়ের বাড়িতে ইফতার পাঠানো অনেকটা আনন্দের মনে হলেও চরম বিপাকে পড়তে হয় মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোকে। ফলে কানাইঘাটের দরিদ্র পরিবারগুলোর কাছে ইফতার পাঠানোর প্রথা এখন আতঙ্কের আরেক নাম।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২২ মে ২০১৯/এমআর/পিডি

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন