আজ বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কানাইঘাটের তহশীল অফিসের দালাল ইসমাইলে অতিষ্ঠ জনসাধারণ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৫-২৩ ০০:০০:৪৯

এনামুল কবীর :: তিনি সরকারি কোন চাকরি করেন না। তবু হাবেভাবে বড় কোন কেউকেটা। চেক জালিয়াতি মামলার আসামী হলেও ইউনিয়ন তহশিল অফিসে তার দাপটের কারণে সাধারণ মানুষের টেকা দায়। নয়ছয়তো চলছেই, সহজ-সরল গ্রামবাসীর কাছ থেক নানা কায়দায় প্রতারণার মাধ্যমে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি।

নাম তার ইসমাইল আলী হলেও এখন তিনি তহশিল অফিসের দালাল হিসাবে ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করেছেন। ফাজিল পাশ কওে কামিল পড়ছেন কানাইঘাটের ৭নং বানীগ্রাম ইউনিয়নের বানীগ্রাম গ্রামের ফয়জুর রহমান কালা মিয়ার পুত্র ইসমাইল। কোন চাকরি না করলেও সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রায় সারাদিন থেকে পড়ে থাকেন বানীগ্রাম ইউনিয়নের তহশিল অফিসে।

সেখানে বসে কার কত খাজনা এসেছে তাকে নানা ছলছুতায় কখনো দ্বিগুণ কখনোবা তিনগুণ বাড়িয়ে বলে টাকা আদায় করেন। অতিরিক্ত টাকা নিজের এবং উর্ধ্বতন কয়েকজন অফিসারের পকেটে পুরে দেওয়াই তার কাজ।

কয়েকজন ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, নানাভাবে তিনি সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছেন। তার কথামতো কাজ না করলেও কৃত্রিম সমস্যা সৃষ্টি করে ঘরবাড়ি নিলামের হুমকি দিয়ে বাধ্য করছেন টাকা দিতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ এলাকার বিশ্বস্ত কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, কারো খাজ ৫০ হাজার টাকা হলে ইসমাইল ঐ লোকটাকে নানাভাবে ভূল বুঝিয়ে লাখ টাকা আদায় করে। তারপর তহশীল অফিস থেকে নির্ধারিত টাকার রিসিট দিলেও অতিরিক্ত টাকার ব্যাপারে কোন সদুত্তর দিতে পারেন না। এভাবেই চলছে তার প্রতারণা।

তহশীল অফিসে জায়গাজমি সংক্রান্ত যেকোন কাজে কেউ গেলে ইসমাইলের খপ্পরে পড়তেই হয়। তাছাড়াও পরো ইউনিয়নে তিনি তার জাল বিস্তার করে রেখেছেন। নানা বাড়িঘর নিলাম সংক্রান্ত নানা গুজব ছড়িয়েও তিনি টাকা আদায় করেন।

এ ব্যাপারে কয়েকজন ভুক্তভোগী এই প্রতিবেদককে মোবাইলে জানান, বানীগ্রাম ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষ তার হয়রানি যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ। সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য বানিয়ে উর্ধ্বতন মহলের সহযোগিতায় ইসমাইল সাধারণ মানুষের পকেট কাটছেন। বানীগ্রামের সাব্বির আহমদ, মেহেদি হাসান নাসির বলেন, কোনভাবেই তাকে ইউনিয়ন অফিস থেকে সরানো যাচ্ছেনা। তহশীলদার নুরুল আমীনের ছত্রচ্ছায়ায় থেকেই তিনি একের পর এক অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।

তাছাড়াও এই ইসমাইল চেক ডিজঅনার মামলার আসামী। ঐ এলাকার রহিম উদ্দিন জানিয়েছেন বছর দেড়েক আগে তার কাছ থেকে ব্যবসার কথা বলে ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন ইসমাইল। সেই টাকা নানা টালবাহানায় আর পরিশোধ করেন নি। কয়েকমাস পর তাকে লাখ টাকার একটি চেক দিলেও ব্যাংকে গিয়ে দেখেন টাকা নেই। পরে তিনি আদালতে চেক ডিজঅনার মামলাদায়ের করেন (নং সিআর ২৪৪/১৮)। মামলাটি এখনো বিচারাধীন।

চাকরি না করেও তহশীল অফিসে সারাদিন থাকা ও জনগনকে হয়রানি বিষয়ে জানতে বানীগ্রাম ইউনিয়নের তহশীলদার নুরুল আমীনের মোবাইলে কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেন নি।

এদিকে তার উপর উঠা অভিযোগগুলোর জবাব জানতে ইসমাইলের মোবাইলে কল দিলে তিনি পরিচয় জেনে ও প্রশ্ন শোনার পর লাইন কেটে দেন। বারবার চেষ্টা করলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।

ইসমাইলের গ্রামেরই প্রবাসী ফখর উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনিও স্বীকার করেন, তার কারণে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। সে একজন প্রতারক। নানাভাবে প্রতারণা করে মানুষের টাকা হাতিয়ে নেয়াই তার একমাত্র কাজ।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ২৩ মে ২০১৯/এক

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন