Sylhet View 24 PRINT

অবৈধ বালু উত্তোলন, শ্রীমঙ্গলে পানিবন্দী ৩০পরিবার

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৬-১১ ২০:৪৫:৫৪

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি :: পানি চলাচলের রাস্তায় বাঁধ দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে ভূনবীর ইউনিয়নের শাসন ইলামপাড়া গ্রামের ২৫-৩০টি  পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

বৃষ্টির পানি জমে বাড়িঘর, ফসলী জমি  এবং একমাত্র সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানিতে নিচু সড়ক ও ফসলী জমি কোমর পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় চলতি আমন চাষে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

এ গ্রামের রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করা মানুষজন, শাসন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দশরথ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে মারাত্মকভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সোমবার বিকেলে সরজমিনে গ্রামটি ঘুরে দেখা গেছে, জলাবদ্ধতার কারণে কোন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে যেতে পারেনি।

স্থানীয় শামসু মিয়া নামক এক ব্যক্তি অবৈধভাবে বালু তোলার সুবিধার জন্য তার জমিসহ সরকারি খাস জমি একত্রে বাঁধ দিয়ে রেখেছে। ৩ মাস পুর্বে এই বাঁধ নির্মাণ করে বালু উত্তোলন করে আসছেন। ফলে বৃষ্টির পানি প্রবাহিত হতে বাধাগ্রস্থ হওয়ায় আশপাশের ফসলী জমি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।

সামান্য বৃষ্টি হলেই বাড়িঘরে পানি জমে থাকে। জলাবদ্ধতার কারণে গ্রামের একটি কবরস্থানও পানির নিচে ডুবে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, শামসু মিয়া বর্ষার শুরুতেই বাঁধ অপসারণ করার কথা বললেও বাঁধ অপসারণ করেনি।

বিশেষ করে জলাবদ্ধতায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়ায় মারাত্মক সমস্যা হয়। কারণ এ সড়ক দিয়েই শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের ঢুকে এবং বের হয়। জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে চায়না। ইলামপাড়া গ্রামের স্কুলের পাশে প্রায় ২০টি পরিবার আছে। জলাবদ্ধতার কারণে তাদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

শিক্ষার্থীরা জানায়, বৃষ্টি হলে বিদ্যালয়ে আসতে তাদের ভালো লাগে না। কারণ, বিদ্যালয়ে প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক সময় তারা নিজেরা পানি সরানোর চেষ্টা করে। তাতেও কাজ হয়না। তারা বৃষ্টির পর দ্রুত পানি নিষ্কাশন চায়।

এদিকে, ২নং ভুনবীর ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী, আব্দুল হাসিম, আব্দুল মন্নাফ, আব্দুল মোমেন, নজরুল ইসলাম, মতি মিয়া, ইদ্রিছ আলী ও সোহাগ মিয়া গ্রামবাসীর পক্ষে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের জন্য নির্মিত বাঁধ অপসারণে ব্যবস্থা গ্রহন পূর্বক কৃষি জমি ও বসতবাড়ির জলাবদ্ধতা দূরীকরণের জন্য শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেছেন।

এর অনুলিপি মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক, চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সভাপতি/সম্পাদক শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে প্রদান করেন।

এতে অবৈধ বালু উত্তোলনের জন্য নির্মিত বাঁধ অপসারণে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করে কৃষি জমি ও বসতবাড়ি জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষার আবেদন জানানো হয়।

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে শামছু মিয়া বালু উত্তোলনের বিষয়টি এড়িয়ে বলেন, পুকুর তৈরীর জন্য বাঁধ দিয়েছিলাম। পুকুরে কিছু মাছও আছে। এখন গ্রামের মানুষের সমস্যা হলে মেম্বার চেয়ারম্যান মুরুব্বীদের নিয়ে আপাতত চলার জন্য একটি পাইপ দেবো।

৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রেহান উদ্দিন বলেন, শামসু মিয়া অবৈধ বালু তুলে তার জমির চারদিকে বাঁধ দিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করেছে। এতে কৃষি জমি ও ঘরবাড়ি নিমজ্জিত হওয়ায় ২৫ থেকে ৩০টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন,‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে’।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ১১ জুন ২০১৯/আইএ/এক

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.