Sylhet View 24 PRINT

জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-সিলেট সড়ক এখন মরণ ফাঁদ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৬-১২ ১৯:৪৪:০৭

সানোয়ার হাসান সুনু, জগন্নাথপুর থেকে :: জগন্নাথপুর-বিশ^নাথ-সিলেট সড়কটি এখন মড়ণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সড়কে পুকুরের মতো গর্ত। ইতিমধ্যে ঝুকিঁপূর্ণ সড়কের কারণে ডজন খানেক যাত্রীবাহি বাস দুর্ঘটনার শিকার হয়ে বিপুল সংখ্যক লোক আহত হয়েছেন। জানমালেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়।

মঙ্গলবার বিকেলে এ সড়কের শাসনহবী এলাকায় ভাঙ্গা চোরা বড় গর্তে পড়ে একটি মিনিবাস (নং- ঢাকা-মেট্টো-২০২১৭) উল্টে খাদে পড়ে গেলে ১৫ যাত্রী আহত হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করা হয়। তাছাড়া গর্ভবতী মহিলাদের নিয়েও মারাত্মক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সম্প্রতি উপজেলার চিলউড়া গ্রামের এক গর্ভবতী মহিলাকে সিলেট নিয়ে যাওয়ার পথে ইসহাকপুর এলাকায় বড় গর্তের মধ্যে সিএনজি পড়লে গাড়ির মধ্যে সন্তান ভ‚মিষ্ট হয়।

বুধবার সিএনজি চালক রাজু মিয়া জানান, এ ঘটনায় আমরা বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ি। এ ধরনের বিপদজনক সড়ক বাংলাদেশের আর কোথায়ও আছে কিনা জানিনা। দীর্ঘ ২বছর ধরে এ অবস্থা চললে ও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার নেতারা তো পকেট নিয়ে ব্যস্ত এ দিকে কোনো খেয়াল নেই।।

বিভাগীয় শহর সিলেট এর সাথে যোগযোগ রক্ষাকারী একমাত্র সড়ক জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-সিলেট সড়কটি বর্তমানে যানচলাচল অনুপযোগি হয়ে পড়ায় জনসাধারন চরম দূর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। গত বছর  ইটের সুরকি দিয়ে নি¤œমানের কাজ করা সড়কটির পিচঢালাই উঠে বর্তমানে বড়বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়ক বর্তমানে যান চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জগন্নাথপুর উপজেলাবাসী নিরুপায় হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রয়োজনের তাগিদে সিলেট শহরে যাতায়াত করছেন। এ উপজেলার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ সিলেটে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন এবং একটি বড় অংশই সিলেট শহরে বসবাস করে। নিত্যদিনের অফিসিয়েল কাজতো রয়েছে। সেই সুবাদে জগন্নাথপুর উপজেলাবাসীকে প্রতিনিয়ত সিলেট শহরে যাতায়াত করতে হয়।

জগন্নাথপুরের হবিবপুর গ্রামের অধিবাসী সিলেট শহরের তালতলার হোটেল ইষ্টএন্ডের সত্ত¡াধিকারী আহমদ হোসেন বলেন, ব্যবসায়ীক কারণে আমাকে প্রতিদিনই সিলেট শহরে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু সড়কের বেহাল দশার কারণে চলাচল করতে ভয় লাগে। মানুষ যদি সড়ক দিয়ে চলাচল করতে না পারে তাহলে শুধু ডিজিটাল ডিজিটাল বলে চিৎকার দিয়ে লাভ কী?

জগন্নাথপুর সদর গ্রামের অধিবাসী সিলেট শহরের দরগাগেইট এলাকার বরুন ট্রাভেলসের স্বত্ত¡াধিকারী অরুন চৌধুরী বলেন, ব্যবসায়িক কারণে প্রতিদিনই সিলেট যেতে হয়। কিন্তু রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। রাস্তার করুন অবস্থা দেখলে মনে হয়না এ এলাকায়  কোন জনপ্রতিনিধি আছেন।

এদিকে ২০১৭ইং সনে জুনে জগন্নাথপুর হতে কেউনবাড়ী পর্যন্ত পৌণে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩ কিলোমিটার সড়কে ২নং ইটের সুরকি ও নি¤œমানের বিটুমিন ও অত্যান্ত নি¤œমানের নির্মান সামগ্রী দিয়ে সংস্কার কাজ করা হলে ৪ মাসের মাথায় সড়কটি ভেঙ্গে বড়বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। তখন থেকে সড়কটির বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। কিন্তু টিকাদার নুরু কন্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী আওয়ামী লীগ নেতা নাদের আহমদ, তৎকালীন প্রকৌশলী ও পাওয়ার পার্টির কতিপয় নেতাকে ম্যানেজ ও আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে পার  পেয়ে যান।

পর্যবেক্ষনে দেখা গেছে, রাস্তা-ঘাটের উন্নয়নে মোটা অংকের টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও দায়সারা কাজ কওে অধিকাংশ টাকাই লুটপাট হয়ে যায়। এলাকাবাসী উক্ত গুরুত্বপুর্ণ সড়কসহ উপজেলার সকল জরাজীর্ন সড়কগুলো পুণঃনির্মাণের জোর দাবী জানান। সেই সাথে সরকারি টাকা যাতে লুটপাট না হয় এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারী এবং কাজ যেন প্রাক্কলন অনুযায়ী উন্নতমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে সঠিকভাবে করা হয় এবং টেকসই হয় এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

বুধবার উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ারের সাথে আলাপ হলে  তিনি জানান, এই গুরুত্বপুর্ন সড়কটির পুণঃনির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে জানানোর পর সার্ভে শুরু করেছি  এবং জগন্নাথপুর ও  বিশ^নাথের অংশ মিলিয়ে ৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। আশা করছি ২/৩ মাসের মধ্যে সড়কটির  কাজ শুরু করতে পারব। আপাতত  বড়বড় গর্ত ভরাটসহ সংস্কার কাজের জন্য ১৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ১১ জুন ২০১৯/এসএইচ/এক


সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.