Sylhet View 24 PRINT

ভিক্ষা জীবন ছেড়ে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চায় তাঁরা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৬-১৯ ২১:০৭:৪৫

রাজনগর প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের সুনামপুর গ্রামের আফাজ উদ্দিন (৫০)। তার বয়স যখন ৩০ তখন জটিল এক রোগের কারণে বাঁ পা কেটে ফেলতে হয়। স্ক্রেচে ভর করে একপায়ে হাঁটতে হয় আফাজকে। স্ত্রী, ২ ছেলে ও ২ মেয়েকে নিয়ে তার সংসার। পা না থাকায় কোনো উপার্জন করতে পারছিলেন না তিনি। তাই বাধ্য হয়ে ১০-১২ বছর ধরে ভিক্ষা করেই সংসার চালাতে হয়েছে তাকে। ভিক্ষাবৃত্তি সবচেয়ে নিকৃষ্ট পেশা জেনেও জীবনের তাগিদে দীর্ঘদিন ভিক্ষার উপার্জন দিয়েই সংসার চালাতে হয়েছে তাকে।

উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের ৮০ বছরের বৃদ্ধ কামাল মিয়া ৮ বছর ধরে ভিক্ষা করে সংসার চালিয়েছেন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে শারীরিক শক্তিও কমে গেছে। তবুও বাধ্য হয়েই বেড়িয়ে পড়তে হয়েছে জীবন জীবিকারর তাগিদে। ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে মাথা উঁচু করে বাঁচার ইচ্ছা ছিল তাদের মনে। আর সেই ইচ্ছাকে বাস্তবায়ন করতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বেসরকারী সংস্থা টিএমএসএস। পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) অর্থায়নে রাজনগর উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ৮ জন ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আমতৈল ইউনিয়নের ২ জন ভিক্ষুককে ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়তে প্রত্যেককে ১ লক্ষ টাকা করে চেক দিয়ে পূনর্বাসন করা হয়েছে।

বুধবার (১৯ জুন) জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে ভিক্ষুকদের মাঝে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম। টিএমএসএস এর সমৃদ্ধি কর্মসূচীর প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর আব্দুল মালেক আকন্দের সঞ্চালনায় ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌসী আক্তার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুর রহমান মামুন, ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখত, দেওয়ান খয়রুল মজিদ ছালেক, মো. টিপু খান, সালেক মিয়া, নকুল চন্দ্র দাশ, শাহ শাহিদুজ্জামান ছালিক, টিএমএসএস- এর সমৃদ্ধি কর্মসূচীর পরিচালক রেজাউল করিম প্রমূখ।

পূনর্বাসিত আফাজ মিয়া বলেন, খুব ইচ্ছা ছিল ভিক্ষাবৃত্তির পেশা ছেড়ে নিজে সম্মান নিয়ে কিছু একটা করতে। কিন্তু আর্থিক অনটন ও পূঁজির অভাবে পারছিলাম না। টাকা নিয়ে কি করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দু’টি গাভী কিনে স্ত্রী ও নিজে মিলে পালন করবো। আর এই পেশায় ফিরতে চাই না।

টিএমএসএস সমৃদ্ধি কর্মসূচীর পরিচালক রেজউল করিম বলেন, ভিক্ষাবৃত্তি সমাজের একটি নিকৃষ্টতম পেশা। আমরা তাদেরকে এই পেশা ছেড়ে মাথা উঁচু করে বাঁচতে মোটিভেশন করেছি। তারাও এই পেশা ছেড়ে সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে চাইছে। তাই পিকেএসএফ সহায়তায় প্রত্যেককে ১ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে। তারা যাতে টাকাগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগায় সেদিকে আমরা খেয়াল রাখব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌসী আক্তার বলেন, ভিক্ষুকদের পূনর্বাসন করতে বর্তমান সরকারেরও একটি উদ্যোগ রয়েছে। খুব শিঘ্রই রাজনগর উপজেলায় পূনর্বাসনের কাজ শুরু হবে। পিকেএসএফ- এর সহযোগিতায় টিএমএসএস যে কার্যক্রম হাতে নিয়েছে তাতে আমাদের কাজ আরো সহজ হবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ১৯ জুন ২০১৯/ এআরএস/ শাদিআচৌ

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.