আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সিলেট চেম্বারের সাথে আসামের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রীর মতবিনিময় অনুষ্ঠিত

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৬-২৭ ১৮:০৯:৫৩

সিলেট :: সিলেট সফররত ভারতের আসাম সরকারের প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং আসামের এইপিএ, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী চন্দ্র মোহন পাটোয়ারি বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারত আমরা একসাথে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবো। আমাদের দুদেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের আন্তরিক সুসম্পর্ক রয়েছে।

তিনি বলেন, সিলেট ও আসামের অর্থনৈতিক উন্নয়নে একসাথে কাজ করার এখনই সময়।  ‘সম্পর্কযাত্রা’র নতুন উদ্যোমকে কাজে লাগিয়ে আমরা আবার ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা ও পর্যটন খাতে পারস্পরিক বিনিয়োগের মাধ্যমে একসাথে এগিয়ে যাবো।

বৃহস্পতিবার সিলেট চেম্বার অব কমার্সের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সিলেট নগরীর দরগাহ্ গেইটস্থ হোটেল স্টার প্যাসিফিকে সফররত ২০ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সাথে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের প্রশাসক আসাদ উদ্দিন আহমদ।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- গৌহাটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার ড. মোহাম্মদ তানভির মনসুর, সিলেটে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার এল. কৃষ্ণমূর্তি, আসামের সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার বিভাগের এডিশনাল চীফ সেক্রেটারী যীষ্ণু বড়ূয়া, সিলেটের কাস্টম্স কমিশনার গোলাম মো. মুনীর, এফবিসিসিআই’র পরিচালক খন্দকার সিপার আহমদ, নুরজাহান হসপিটালের চেয়ারম্যান ডা. নাসিম আহমদ, সিলেট চেম্বারের প্রাক্তন সহ সভাপতি মো. এমদাদ হোসেন, প্রাক্তন পরিচালক ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ।

আসামের মন্ত্রী বলেন, কানেক্টিভিটি হচ্ছে বিজনেসের জন্য সবচেয়ে জরুরী বিষয়। কানেক্টিভিটি উন্নয়নে বিশেষ করে আসাম রাজ্যের সাথে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য স্থলপথ ও জলপথের উন্নয়ন করা হলেও আকাশপথে যোগাযোগ এতদিন ছিল না। আগামী ১লা জুলাই থেকে গৌহাটি-ঢাকা স্পাইস জেট এয়ারওয়েজের ফ্লাইট চালুর মাধ্যমে আকাশপথে যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এর ফলে ব্যবসায়ীরা যেমন লাভবান হবেন তেমনিভাবে পর্যটন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগাযোগ সহজতর হবে। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার ভূঁয়সী প্রশংসা করে বলেন, ৮% জিডিপি অর্জনসহ বাংলাদেশ গার্মেন্ট্স, প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি ও ফুড প্রসেসিং সেক্টরে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে।

বাংলাদেশে ১০০টি ইকোনমিক জোন স্থাপন খুবই ভালো উদ্যোগ বলে তিনি মন্তব্য করেন।

মন্ত্রী চন্দ্র মোহন পাটোয়ারি বলেন, সিলেটে যেমন বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে তেমনিভাবে আসামেও বিনিয়োগের উপযোগী ক্ষেত্র রয়েছে। সিমেন্ট উৎপাদনের সকল কাঁচামাল আসামেই রয়েছে।

আসামের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আজকের আলোচনায় আমাদের দুদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধিতে যেসব বিষয় উত্থাপিত হলো এগুলো নিয়ে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে আলোচনা করবো। দুদেশেই চিকিৎসা, শিক্ষা ও পর্যটন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি মতবিনিময় সভাটি আয়োজনের জন্য সিলেট চেম্বার ও সিলেটের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের প্রতি ধন্যবাদ জানান এবং আসাম সফরের আমন্ত্রণ জানান।

সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের প্রশাসক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সম্পর্কযাত্রা’ ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মুক্ত করবে। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে খুবই হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তিনি আসামের

প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আজকের দিনটি সিলেটের ব্যবসায়ীদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন।

তিনি বলেন, সিলেট বিনিয়োগের জন্য খুবই সম্ভাবনাময় স্থান। তিনি সিলেটের ট্যুরিজম ও আইটি সেক্টর বিশেষ করে কোম্পানীগঞ্জে ১৬৫ একর জায়গার উপর নির্মাণাধীন সিলেট হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগের জন্য ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের আহবান জানান। তামাবিল শুল্ক স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে রূপান্তর করা হলেও এর বিপরীতে ভারতীয় স্টেশনকে আধুনিকয়ান করা হয়নি। তিনি ডাউকিতে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর স্থাপনের অনুরোধ জানান। তিনি পারস্পরিক ব্যবসায়ীক অসুবিধাগুলো দূরীকরণে তিনি আসাম সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

আসামের সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার বিভাগের এডিশনাল চীফ সেক্রেটারী যীষ্ণু বড়ূয়া তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের সাথে আমাদের শতাব্দী প্রাচীন সম্পর্ক রয়েছে। ভারতের বর্তমান সরকার প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সাথে গোল্ডেন চ্যাপ্টারের সূচনা করেছে। আমরা শুধু বাংলাদেশের সাথে নয়, পাশ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলোর সাথেও ইকো-কালচারাল সম্পর্ক স্থাপনে কাজ করছি। সিলেটে এই সফরকে তিনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বলেন, এর মাধ্যমে আসাম ও সিলেটের মধ্যে ব্যবসায়ীক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরো বৃদ্ধি পাবে।

এফবিসিসিআই’র পরিচালক খন্দকার সিপার আহমদ প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এই সফরের মাধ্যমে দুদেশের বিশেষ করে ভারত এবং সিলেটের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে।

তিনি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি এই দুই অঞ্চলের ভাষা ও সংস্কৃতি প্রায় অভিন্ন। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভালো উল্লেখ করে তিনি কিভাবে ব্যবসার উন্নতি করা যায় সে বিষয়টি নিয়ে আরো মতবিনিময়ের আহবান জানান। তিনি গৌহাটিতে পর্যটকদের জন্য হোটেলের অপ্রতুলতার বিষয়টি উল্লেখ করে তা সমাধানের আহবান জানান।

সভায় উপস্থিত ছিলেন- ভারতীয় প্রতিনিধিদলের সদস্য আসাম রাজ্যের এমএলএ দিলিপ কুমার পাল, আমিনুল হক লস্কর, জয়রাম এংলেং, দীপক কুমার রাভা, সুমান হারিপ্রিয়া, মৃণাল সাইকিয়া, কুশাল দোয়ারি, দেবানন্দ হাজারিকা ও রানোজ পেগু, আসাম সরকারের কর্মকর্তা অবিনাশ পুরুষত্তম, এস.এস. মীনাক্ষি সুন্দারাম, এম.এস. মানিভান্নান, উমানন্দ ডলে, রুবি শর্মা, ধ্রুবজ্যোতি দাস, নাজরিন আহমেদ, দেবা কুমার মিশ্রা, রনজিৎ মজুমদার।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারী নবনীতা চক্রবর্তী, বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. শহিদুল ইসলাম পিএসসি, বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেটের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ তারিকুজ্জামান, মহাব্যবস্থাপক জীবন কৃষ্ণ রায়, সিলেট চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমদ, সালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, প্রাক্তন সিনিয়র সহ সভাপতি শাহ্ আলম, জিয়াউল হক, প্রাক্তন পরিচালক কলন্দর আলী, মো. সাহিদুর রহমান, পিন্টু চক্রবর্তী, এহতেশামুল হক চৌধুরী, মো. আব্দুর রহমান (জামিল), মুজিবুর রহমান মিন্টু,  নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সদস্য এডভোকেট মো. জুনেল আহমদ, এডভোকেট সৈয়দ শামীম আহমদ, আপীল বোর্ডের সদস্য এডভোকেট মো. রাজ উদ্দিন, সাংবাদিক ইকরামুল কবির, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট উইমেন্স চেম্বারের সভাপতি স্বর্ণলতা রায়, বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সরকারী-বেসরকারী উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ ও সিলেট চেম্বারের সদস্যবৃন্দ।  




সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৭ জুন ২০১৯/প্রেবি/এসডি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন