আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

বালাগঞ্জ-ওসমানীনগরে বর্ষা মৌসুমেও মিলছে না দেশীয় মাছ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৭-১২ ১৭:৪০:৩৯

রনিক পাল, ওসমানীনগর :: সিলেটের এক সময়ের মৎস্য ভান্ডার হিসাবে পরিচিত বালাগঞ্জ-ওসমানীনগরে এবার বর্ষা মৌসুমেও মাছের অকাল পড়েছে। দুই উপজেলার নদ-নদী, খাল বিলসহ হাওরগুলো পানিতে ভরপুর থাকলেও মাছের সংখ্যা খুবই কম। ফলে স্থানীয় বাজার গুলোতে মাছের সংকট থাকায় চড়া দামে মাছ বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে।

খাল-বিল-নদী-নালা আর হাওরগুলোই মাছের একমাত্র উৎস হলেও বর্তমানে মাছের অধিকাংশ উৎস ভরাট হয়ে যাওয়ায় বালাগঞ্জ-ওসমানীনগরের বাসিন্দারা দেশীয় সুস্বাদু মাছ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

উপজেলার মরুয়া, বানাইয়া, দয়ালং, কালাসারা, চেগা বিল, কাগবিল, কাটাগাং, মোকতারপুর, মাউচ্ছাখালী, সুন্দিখলা, চাতল বিল, নিরাইয়া, বারো হাওর, ধরংবিল, নাটকিলা, সাদিপুরের ভরাং, দয়াল খাল, সাউনিয়া, বড় চাতল, মাইজাল, করচা বিল, গালচাবরি বিল, বড়ভাগা, রড়চক্র,রত্না,আর্মিদিং নদী একসময় ছিলো মাছের জন্য প্রসিদ্ধ।

এক সময় এ সব হাওর, বিল ও জলাশয়ের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ স্থানীয় বাজারগুলোতে দেখা যেত। এবং এলাকার চাহিদা মিটিয়ে এসব মাছ দেশের অন্যত্র রপ্তানি করা হতো। কিন্তু বর্তমানে তা কল্প-কাহিনীতে রূপ নিয়েছে। হাওর ও জলাশয়ের মাছের আকাল এ এলাকার মানুষকে করেছে হতবাক। এ অঞ্চলের বাজার গুলোতে বর্তমানে মৎস্য খামারের উৎপাদিত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ব্যতিত অন্য কোন দেশীয় প্রজাতির সুস্বাদু মাছ পাওয়া যাচ্ছে না।

স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই এ অঞ্চলের মানুষের বিভিন্ন রকম জাল কেনার হিড়িক পড়ত। কিন্তু বর্তমানে হাওরাঞ্চলের মাছগুলোর বিলুপ্তির কারণে সেই ব্যস্ততা কিংবা আগ্রহ এখন আর নেই। খামারের মাছগুলোতে বিভিন্ন রকম ঔষধ ব্যবহার করা হয় যা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। এধরনের মাছ বেশি দিন খাওয়ার কারনে মানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগের জীবানু সৃষ্টি হচ্ছে।

মৎস্য বিশেষজ্ঞরা জানান, হাওরের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কমে যাওয়ার জন্য কৃষি জমিতে সার কীটনাশকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারকে দায়ী। এ ছাড়াও জলাশয় গুলোর নব্যতা কমে যাওয়া এবং নির্বিচারে মাছ ধরার কারণে বর্ষা মৌসুমেও বিভিন্ন্ দেশীয় প্রজাতীর মাছ এখন বিলুপ্ত হচ্ছে। এছাড়া জলাশয় ভরাট, অধিক জনসংখ্যা, নদীতে বাধ, মাছের প্রজননের জন্য নির্দিষ্ট জায়গার অভাব, ডিমওয়ালা মাছ শিকার, কারেন্ট জালের ব্যবহার, বিভিন্ন রাসায়নিক সার ও কীটনাশক সহ কৃষি বর্জ্য পদার্থ হাওরে মিশে যাওয়া এসব কারনেই অধিকাংশ দেশীয় প্রজাতির মাছ হারিয়ে যচ্ছে।

এক সময় যারা মাছ বিক্রি করতেন জয় নমঃসূত্র ও বিকাশ নমঃসূত্র বর্তমানে তারা বিভিন্ন পেশায় নিয়েজিত রয়েছেন।

মাছ বিক্রি ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় জড়ানোর ব্যাপারে এমন মৎস্য জীবীরা জানান, এলাকার জলাশয় গুলোতে দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরতে পাওয়া যায় না। ফিসারির মাছ ওজনে কিনে এতে বিক্রি করে যে লাভ হয় তা দিয়ে সংসার চলেনা। তাই বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় জড়িয়েছি।



সিলেটভিউ২৪ডটকম/১২ জুলাই ২০১৯/আরপি/এসডি

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন