আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সাস্ট ক্লাব নির্বাচন: ঐক্যের মডেল গড়তে চান সুজন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৭-১২ ১৮:৫৪:৪৬

শাবি প্রতিনিধি :: সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠান সাস্ট ক্লাবের নির্বাচন জমে উঠেছে। রাজধানীর নিকেতনে ক্লাব কার্যালয়ে বসছে প্রবীণ ও নবীন সাস্টিয়ানদের আড্ডা। প্রার্থীরা ক্লাবের উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ভোটাররাও চান যোগ্যরা নির্বাচিত হয়ে দেশের সেরা একটি ক্লাবে পরিণত করবেন সাস্ট ক্লাবকে।

ভোটাররা জানিয়েছেন, ক্লিন ইমেজধারী প্রার্থীদের হাতে সাস্ট ক্লাবের নেতৃত্ব তুলে দিবেন। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণায় বেশ সক্রিয় প্রার্থীরা।

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে সংক্ষেপে বলা হয় সাস্ট। আগামী ১৯ জুলাই সাস্ট ক্লাবের প্রথম কার্যকরী কমিটি নির্বাচন। নির্বাচনে ১১টি পদে ২৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সঞ্জিত কুমার বনিক ও মো. কামরুল ইসলাম । সহ-সভাপতি পদের প্রার্থী হলেন আশরাফ হোসেন আকন্দ ও মোহাম্মদ কায়সার তালুকদার । সাধারণ সম্পাদক পদে  মুস্তফা মনওয়ার হাশেম সুজন, মো. মাহাবুবুর রহমান ও মো. আক্তারুজ্জামান চৌধুরী  । যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন শাহ মো. হামজা আনোয়ার ও মোহাম্মদ আফজাল হোসেন আকন্দ রনি। কোষাধ্যক্ষ পদে প্রার্থী হলেন কাজী গোলাম কদর স্বপন ও খলিলুর রহমান সুহেল।

সদস্য প্রার্থীরা হলেন- শমসের রাসেল, সৈয়দ আব্দুল্লাহ যীশু,  নূর ই আলম সিদ্দিকী স্বপন, এইচ এম মামুন, মো. মাসুদুর রহমান, ফাতেমা জেরিন ফারহানা, মো. নূরে আলম মিল্টন, মোশাররফ হোসেন পলাশ, মো. বরকত উল্লাহ, মো. এ এস আরফিন খান নোবেল, মাহামুদ ফারুক ও আবুল হাসানাত রুম্মান। সদস্য পদে নির্বাচিত ৬ জন নির্বাচিত হবেন।

রাজধানী ঢাকায় জমজমাট এ নির্বাচনের বিষয়ে সিলেট ভিউ'র সাথে কথা হয় সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সাংবাদিক মুস্তফা মনওয়ার হাশেম সুজনের। তিনি জানান, সাস্ট ক্লাব সাস্টিয়ানদের ভালোবাসার সুতিকাগার এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্ল্যাটফর্ম।

তিনি দায়িত্বের বিশাল চাপ মাথায় নিয়ে ভালোবাসার ঋণ পরিশোধের সুযোগ পেলে কাজে লাগাতে চান। সাস্ট ক্লাবকে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নেয়াই তার প্রধান অঙ্গীকার বলে নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করেন। আর এক্ষেত্রে তিনি গণমাধ্যমে ১৯ বছরের পেশাগত ও সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা সর্বোতভাবে কাজে লাগানোর প্রতিশ্রুতি দেন। মুস্তফা মনওয়ার হাশেম সুজন সাস্টের ষষ্ঠ ব্যাচের ছাত্র। ১৯৯৫-৯৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে অনার্স-মাস্টার্স সনদ লাভ করেন।

তিনি শাবি প্রেসক্লাবের সভাপতি, চলচ্চিত্র বিষয়ক সংগঠন ‘চোখ ফিল্ম সোসাইটি’র সভাপতি, সাহিত্য পত্রিকা ‘আড্ডা’ ও সিনেমা পত্রিকা 'প্রক্ষেপণ'র সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়া, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক সিলেটের ডাক ও দৈনিক যুগান্তর এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। তিনি প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থেকে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষার আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শাবি শাখার জাকির-বাসিত কমিটিতে তিনি গ্রন্থণা ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৮ সালে তিনি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ-শাকসু নির্বাচনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (শা-পা) মনোনীত মকদ্দুস-নবারুন-বাবু প্যানেল থেকে সহ-সাহিত্য সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ছাত্ররাজনীতি থেকে সাংবাদিকতায় আসা সুজন বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করে দৈনিক যুগান্তরে সহ-সম্পাদক পদে যোগ দিয়ে পেশা জীবন শুরু করেন।

এছাড়া দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, ভোরের ডাক, অনলাইন সংবাদপত্র বাংলাটাইমস টুয়েন্টিফোর ডটকম, বিডিলাইভ টুয়েন্টিফোর ডটকম, বাংলাদেশ জার্নাল, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি পত্রিকা ও সংবাদ সংস্থায় বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। এরই মধ্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসিতে মিডিয়া কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এসএ টিভিতে সহকারী বার্তা সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছেন। এখনো তিনি পেশার মর্যাদা রক্ষা ও সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সক্রিয় রয়েছেন।

তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে এবং বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য। পেশাদার সাংবাদিক মুস্তফা মনওয়ার হাশেম সুজনের রয়েছে একাধিক গবেষণা গ্রন্থ। উৎস প্রকাশন থেকে প্রকাশিত 'বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক মতবাদ' তার অন্যতম গবেষণা গ্রন্থ। নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করার আগ পর্যন্ত তার শৈশব কেটেছে মাইজদি শহরে। প্রসঙ্গত, নোয়াখালীর আঞ্চলিক গানের সম্রাট খ্যাত অধ্যাপক মোহাম্মদ হাশেম তার বাবা। 

সাস্ট ক্লাব নির্বাচনের ইশতেহারে মুস্তফা মনওয়ার হাশেম সুজন ১১ দফা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হলে তার কর্মপরিকল্পনা-
১. সাস্ট ক্লাবের স্থায়ী কার্যালয়ের জন্য রাজউক থেকে প্লট বরাদ্দের উদ্যোগ গ্রহণ
২. ক্লাবের সদস্য সংখ্যা অন্তত দুই হাজারে উন্নীত করা
৩. সদস্যদের বার্ষিক চাঁদা ৫ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার টাকায় নামিয়ে আনা
৪. ক্লাবের মাসিক খরচ নির্বাহে জমা টাকার উপর চাপ কমানো
৫. অভিজাত ক্লাবের সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতে পদক্ষেপ এবং সাশ্রয়ী মূল্যে সেবা প্রদান
৬. সুবিধাজনক স্থানে সাস্ট ক্লাব কার্যালয় স্থানান্তর
৭. সাস্টের সদ্য পাস করা গ্র্যাজুয়েটদের জন্য প্রতিবছর জব ফেয়ার চালু
৮. সাস্ট স্কলারদের প্রতিবছর সম্মাননা এবং সদস্যদের সন্তানদের জন্য মেধাবৃত্তি চালু
৯. সদস্যদের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠন এবং গ্রুপ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থা করা
১০. সদস্যদের সুবিধার্থে অ্যাপস ও ওয়েবসাইট চালু
১১. সাস্টের সাবেক শিক্ষার্থীদের ডাটাবেজ ও ডিজিটাল ডিরেক্টরি তৈরি করা।

সাস্টিয়ানদের সমৃদ্ধি, সাম্য ও ঐক্য অটুট রাখতে এছাড়া আরো বহুমুখী পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান সাবেক এই ছাত্রনেতা। ঐক্য ও সাম্যের প্রতীক হিসেবে সাস্ট ক্লাবকে গড়ে তুলতে সর্বোচ্চ প্রয়াস চালাবেন বলে জানান সাংবাদিক সুজন।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েটদের সাস্ট ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ৪৯৭ জন। এর মধ্যে বিদেশে অবস্থান করছেন ১০৭ জন।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ১২ জুলাই ২০১৯/এএএম/এক


@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন