Sylhet View 24 PRINT

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে তাকিয়ে সিলেটের ব্যবসায়ীরা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৭-১৬ ০০:০৪:৫৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :: অবশেষে মেঘালয়ের খনিগুলো থেকে কয়লা উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু এই অনুমতিতেও আশার আলো দেখছেন না বাংলাদেশের আমদানিকারকরা। কয়লা উত্তোলন ও রফতানির ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্তজুড়ে দিয়েছে সে দেশের আদালত। শর্তগুলো পূরণ করে মেঘালয় সরকারকে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি নিয়েই কয়লা উত্তোলন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এতে বাংলাদেশের আমদানিকারকদের আটকা পড়া প্রায় শত কোটি টাকার লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) নিয়ে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে আপাতত তার কোন সুরাহা হচ্ছে না। ফলে আমদানিকারকদের এখন তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের দিকেই।

চার মাস বন্ধ থাকার পর গত ১৭ মে ভারতীয় সুপ্রীম কোর্ট মেঘালয় রাজ্যের খনিগুলো থেকে শুধুমাত্র উত্তোলিত কয়লা ৩১ মে পর্যন্ত রপ্তানির অনুমতি দেয়। এই আদেশের প্রেক্ষিতে ২২ মে থেকে সুনামগঞ্জের বড়ছড়া ও বাগলী সীমান্ত দিয়ে কয়লা আমদানি শুরু হয়। ৩১ মে’র পর ফের বন্ধ হয়ে যায় আমদানি। এরপর পুণরায় কয়লা রফতানির অনুমতি চেয়ে ভারতের ব্যবসায়ীরা আবারও উচ্চ আদালতে আপিল করেন।

ভারতের ব্যবসায়ীদের বরাত দিয়ে সিলেট কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের সভাপতি চন্দন সাহা জানান, ওই আপিলের প্রেক্ষিতে শুনানী শেষে গত ২ জুলাই ভারতের সুপ্রিম কোর্ট শর্তসাপেক্ষে কয়লা উত্তোলন ও রফতানির অনুমতি প্রদান করেন। তবে এক্ষেত্রে বেঁধে দেয়া শর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কয়লা উত্তোলনের ক্ষেত্রে কোনভাবে পরিবেশের ক্ষতি সাধন করা যাবে না। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করেই কয়লা উত্তোলন ও রফতানি করতে হবে। এজন্য মেঘালয় সরকার ও ন্যাশনাল গ্রিণ ট্রাইব্যুনাল (এনজিটি) যৌথভাবে একটি প্রজেক্ট প্রোপোজাল তৈরি করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে উপস্থাপনের নির্দেশ দেন আদালত। এরপর কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি সাপেক্ষেই কয়লা উত্তোলনের নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট।

চন্দন সাহা জানান, ভারতের সুপ্রিম কোর্টের দেয়া শর্ত পূরণ করে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি পেতে অন্তত ৩-৪ মাস সময় লাগবে বলে তাদেরকে অবগত করেছেন সেদেশের রফতানিকারকরা। তাই আপাতত ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের।

সিলেট কয়লা আমদানীকারক গ্রুপ সূত্রে জানা গেছে, কয়লা আমদানির জন্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের প্রায় দেড় শত কোটি টাকার এলসি করা ছিল। গত ১৭ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত প্রায় ৫০ কোটি টাকার কয়লা আমদানি হয়েছে। বাকি একশত কোটি টাকার এলসি এখন আটকে আছে। অনেক ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এলসি করেছেন। কিন্তু কয়লা আমদানি করতে না পেরে ঋণের সুদের বোঝা তাদেরকে টানতে হচ্ছে। এছাড়া পুণরায় আমদানি শুরু না হলে এই ১০০ কোটি টাকার এলসির মধ্যে শুল্ক ও এআইটি বাবত প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যবসায়ীরা ফেরত পাবেন না। এতে তারা বড় ধরণের ক্ষতির সম্মুখিন হবেন।

আমদানিকারকরা জানান, বছরের এই সময়ে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা কয়লা আমদানি করে স্টক করে রাখেন। অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন ইটভাটায় মজুদকৃত এই কয়লা বিক্রি করা হয়। কিন্তু মেঘালয় থেকে আমদানি করা না গেলে এবার কয়লা মজুদ করা যাবে না। ফলে ইট পোড়ানোর মৌসুমে কয়লার দাম বৃদ্ধি পাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, মেঘালয়ের একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের মামলার প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে কয়লা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারতের ন্যাশনাল গ্রীণ ট্রাইব্যুনাল। এরপর সেদেশের রপ্তানিকারকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে কয়কদফা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য উত্তোলিত কয়লা রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে আদালত। এর আগে ২০১৮ সালের ১ জুন থেকে বন্ধ হয়ে যায় কয়লা আমদানি। পরে ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আমদানির অনুমতি দেয়া হলেও ১৫ জানুয়ারি থেকে আদালতের অপর একটি আদেশে আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৬ জুলাই ২০১৯/শাদিআচৌ/ডিজেএস

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.