Sylhet View 24 PRINT

আবারও শাবির নিরাপত্তা কর্মীদের বেতন মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৭-১৭ ২২:০০:৪৩

শাবি প্রতিনিধি :: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তাকর্মী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘যমুনা স্টার সেভ গার্ড সার্ভিস লিমিটেড’ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কর্মীদের বেতন থেকে কমিশন চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কোম্পানির সুপারভাইজার রাজা মিয়ার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করে তারা।

বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী ব্যাংক থেকে বেতনের টাকা উত্তোলনের সময় রাজা মিয়া কমিশন দাবি করে বলে জানান একাধিক কর্মী। এর আগেও বেতন কম দেওয়া কারণে কোম্পানির ম্যানেজারের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর অভিযোগ করেছিল ৬৬ জন নিরাপত্তা কর্মী।

ভুক্তভোগী কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘যমুনা স্টার সেভ গার্ড সার্ভিস লিমিটেড’ এর অধীনে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত রয়েছেন ৯৬ জন নিরাপত্তাকর্মী। চাকরিতে প্রবেশের সময় ১৪৪৫০ টাকা বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও বেশির ভাগ কর্মীকে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের বেতন হিসেবে ৮০০০ টাকা করে দিয়েছে। প্রথম দিকে নিরাপত্তাকর্মীদেরকে কাছ থেকে ৫০০ টাকা নিয়ে যমুনা ব্যাংকে একাউন্ট খুলে দেয় কোম্পানি। পরবর্তীতে দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোম্পানীকে যমুনা ব্যাংকের পরিবর্তে সোনালী ব্যাংকে টাকা দেওয়ার কথা বলে।

তারা আরো জানায়, সোনালী ব্যাংকে তাদের অ্যাকাউন্টে এপ্রিল ও মে মাসের টাকা জমা হয়। বুধবার সকালে নিরাপত্তা কর্মীরা ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে আসলে রাজা মিয়া কমিশন চায়। টাকা দিতে না চাইলে ব্যাংকের ভেতর গোলযোগের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ রাজা মিয়াকে ব্যাংক থেকে বের করে দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নিরাপত্তাকর্মী বলেন, তাদের একাউন্টে দুই মাসের বেতন হিসেবে ২৮৯০০ টাকা আসার কথা থাকলেও অনেকের একাউন্টে ৬ হাজার, ১৩ হাজার এসেছে জমা হয়েছে। আগে ৮ হাজার করে টাকা দেওয়া হলেও এখন আরও কম দিয়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছে তারা। কোন ধরনের প্রতিবাদ করলেই চাকরি থেকে বাদ দিয়ে দেওয়ার হুমকী দেওয়া হয়। আবার ৩-৪ জনকে চাকরি থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘুষের বিনিময়ে যারা চাকরিতে প্রবেশ করেছে এমন কিছু সংখ্যক নিরাপত্তা কর্মীকে সম্পূর্ণ টাকা দেওয়া হয় বলে জানান তারা। প্রশাসনের কাছে তারা ন্যায্য বিচার দাবি করেন।

এবিষয়ে রাজা মিয়ার সাথে যোগাযোগ করলে চাদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি একজনের কাছ থেকে ঋনের টাকা আনতে ব্যাংকে গিয়েছিলাম। আর কারও কাছে আমি টাকা দাবি করিনি।’

যোগাযোগ করলে কোম্পানীর ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘চাঁদা দাবির বিষয়টি আমার জানা নেই। একজনের কাছ থেকে খাবারের পাওনা টাকা আনতে গিয়েছিল রাজা মিয়া।’

সোনালী ব্যাংকে অনেকের একাউন্টে টাকা কম দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘ডিউটি অনুযায়ী সবাইকে টাকা দেওয়া হয়। তাই অনেকের একাউন্টে টাকা কম দেওয়া হয়েছে। আবার কিছু একাউন্ট নাম্বারে সমস্যা হওয়ায় অনেকের একাউন্টে টাকা কম গেছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় কোম্পানীকে সর্ম্পূণ টাকা দেওয়ার পরও নিরাপত্তাকর্মীদেরকে বিগত তিন মাস ১৪৪৫০ টাকার পরিবর্তে ৮ হাজার দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, সবাইকে ব্যাংকের মাধ্যমে পূর্ণ টাকা দেওয়া হয়েছে। একটু পরে আবার গোজামিলের আশ্রয় নিয়ে হ্যাঁ, না উত্তর দিতে থাকেন।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গরিব মানুষগুলো যাতে ন্যায্য টাকা পায় সে জন্য আমি কয়েক মাস ধরে কাজ করে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই তাদের পাশে দাড়াঁনো উচিৎ।’

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে দুই বছরের চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তাকর্মী সরবরাহ করে আসছে কোম্পানীটি। শুরু থেকে বেতন কম দেওয়ার অভিযোগ করে আসছিল কোম্পানীর কর্মীরা।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৭ জুলাই ২০১৯/এএএম/পিডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.