Sylhet View 24 PRINT

বালাগঞ্জে নদীতে সাড়ে ৩শ কুরবানীর চামড়া, আলোচনার ঝড়

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৮-১৫ ০০:৫৬:৪৫

মো. জিল্লুর রহমান জিলু, বালাগঞ্জ :: ঘটনার দু’দিন পরও বালাগঞ্জের কয়েকটি মাদরাসার সংগৃহিত কুরবানীর চামড়া নদীতে ফেলে দেয়া নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা থামছেই না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মত প্রকাশের পাশাপাশি উপজেলার সর্বত্র আড্ডা, আলোচনা থেমে নেই।

অনেকে আক্ষেপ করে বলছেন, মাদরাসার এতিম, অসহায় শিক্ষার্থীদের জন্য দেয়া এসব চামড়া যাদের ষড়যন্ত্রের কারণে নদীতে ফেলতে হয়েছে তাদের বিচার একদিন হবেই। চামড়া নদীতে ফেলে পরিবেশ দুষণের জন্য অনেকে দোষারোপ করছেন। অবশ্য সংশ্লিষ্ট মাদরাসার শিক্ষকরা আগেই জানিয়েছেন, মাটিতে পুতে রাখার মত জায়গা পাওয়া যায়নি। আর সব কিছু চাপিয়ে আলোচনায় রয়েছে, সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফে চামড়া নিয়ে গাফিলতির অভিযোগ।

তবে, চামড়া নিয়ে এমন অবহেলাভাব আর ষড়যন্ত্র যা-ই হোক, ভবিষ্যতে এমনটি যেন না হয় এটাই সবার প্রত্যাশা। অবশ্য বালাগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী জামিয়া ইসলামিয়া হোসাইনিয়া গহরপুর মাদরাসার ৬শ ৬১টি কুরবানীর চামড়া প্রতিটি ১শত টাকা দরে বিক্রি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ক্রেতা না পেয়ে বালাগঞ্জে কুশিয়ারা নদী ও বড়ভাঙ্গা নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন মাদরাসার সংগৃহিত সাড়ে ৩শ কুরবানীর পশুর চামড়া। প্রতিবারের মত এবারও ঈদের দিন গত সোমবার (১২ আগস্ট) মাদরাসার ছাত্র, শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসব চামড়া সংগ্রহ করেন। ঈদের পরদিন মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত চামড়ার কোন ক্রেতা না পেয়ে বাধ্য হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এসব চামড়া কুশিয়ারা নদীতে ফেলে দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে আলাপকালে বালাগঞ্জ ফিরোজাবাগ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুল মালিক, বালাগঞ্জ আদর্শ মহিলা মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা সাদ উদ্দিন প্রমুখ সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (১২ আগস্ট) ঈদের দিন প্রতি বছরের মত উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বালাগঞ্জ ফিরোজা বাগ মাদরাসা, বালাগঞ্জ আদর্শ মহিলা মাদরাসা, তিলকচাঁনপুর আদিত্যপুর ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা, নুতন সুনামপুর মাদরাসা ও দক্ষিণ গৌরীপুর মাদরাসার ছাত্র, শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাদরাসার এতিম ও গোরাবা ফান্ডের জন্য কুরবানীর পশুর চামড়া সংগ্রহ করেন। কিন্ত ঈদের পরদিন পর্যন্ত এসব চামড়া বিক্রয়ের ব্যাপারে ন্যায্য মূল্য ও ক্রেতা পাওয়া যায়নি। পরদিন মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সকাল থেকে এসব মাদরাসার সংগৃহিত চামড়ায় দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে বাধ্য হয়ে স্থানীয় কুশিয়ারা নদী ও বড়ভাঙ্গা নদীতে এসব চামড়া ফেলে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

সংশ্লিষ্ট মাদরাসার শিক্ষক, এলাকাবাসী জানিয়েছেন, বালাগঞ্জ ফিরোজাবাগ মাদরাসার ১শ ১৯টি, বালাগঞ্জ মহিলা মাদরাসার প্রায় ১শ’টি, তিলকচাঁনপুর আদিত্যপুর ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার ৩৪টি, নতুন সুনামপুর মাদরাসার ৭০টি এবং দক্ষিণ গৌরীপুর মাদরাসার ২৭টি চামড়া নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে আলাপকালে বালাগঞ্জ উপজেলা সদরস্থ ফিরোজাবাগ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুল মালিক, শিক্ষা সচিব মাওলানা ফয়েজ আহমদ, বালাগঞ্জ আদর্শ মহিলা মাদরাসার মুহতামিক মাওলানা সাদ উদ্দিন, শিক্ষা সচিব মাওলানা আব্দুল বাতিন এ বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তারা জানান, মাদরাসার ছাত্র, শিক্ষকরা ঈদের দিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে কষ্ট করে কুরবানীর পশু চামড়া সংগ্রহ করেছেন। ঈদের দিন সোমবার ও পরদিন মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এসব চামড়া ক্রয় করার ব্যাপারে ন্যায্যমূল্য এবং ক্রেতা পাওয়া যায়নি। ঈদের দিন বিকালে একজন মাত্র ক্রেতা প্রতিটি চামড়া দেড়শ টাকা ধর দিতে চাইলেও পরবর্তীতে তাকে আর পাওয়া যায়নি। ঈদের পরদিন মঙ্গলবার সকাল থেকে চামড়ার দুর্গন্ধ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। চামড়া পুতে রাখার মত পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় আমরা বাধ্য হয়ে স্থানীয় কুশিয়ারা নদী ও বড়ভাঙ্গা নদীতে চামড়া ভাসিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি।

মাদরাসা শিক্ষকরা দুঃখ নিয়ে বলেন, যারা মাদরাসার এতিম, অসহায় ছাত্রদের হক নষ্ট করেছেন, আল্লাহপাক একদিন তাদের বিচার করবেন।

এদিকে বালাগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী জামিয়া ইসলামিয়া হোসাইনিয়া গহরপুর মাদরাসার ৬শ ৬১টি কুরবানীর চামড়া প্রতিটি ১শত টাকা দরে বিক্রি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।




সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৫ আগস্ট ২০১৯/জেডআরজেড/এসডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.