আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

সরকারে মিশে গেছে সিলেট আওয়ামী লীগ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৯-১৬ ০০:৪৮:১৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :: টানা তিন মেয়াদ ধরে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। দলটির এই সুসময়ের রেশ সিলেটে পুরোদমেই আছে। সিলেটে আওয়ামী লীগকে এখন সরকার থেকে আলাদা করা কঠিন। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকান্ড এখন সরকারি কর্মসূচিভিত্তিক হয়ে পড়েছে। এছাড়া দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে চলা সিলেট আওয়ামী লীগে স্বাভাবিকভাবেই আছে সাংগঠনিক স্থবিরতাও। এরকম অবস্থায় সম্মেলনের দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে নেতাকর্মীদের মধ্যে।

দীর্ঘ সময় ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় স্বাভাবিকভাবেই দলটির তৃণমূলের রাজনীতি কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছে। ব্যতিক্রম নয় সিলেটও। এখানে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকান্ড কেবলই দিবসভিত্তিক কিংবা সরকারের কর্মসূচিভিত্তিক। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকীতে সিলেটে সক্রিয় দেখা যায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের। এর বাইরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী কিংবা অন্য কোন মন্ত্রী সিলেট সফরে এলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে তোড়জোড় লক্ষ্য করা যায়, সবাই মন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ছুটে যান বিমানবন্দরে। এছাড়া সরকার যখন কোন কর্মসূচি গ্রহণ করে, তখনই নেতাদেরকে মাঠে দেখা যায়। কিন্তু দলীয় কোন কর্মসূচি, মিছিল, সমাবেশ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সিলেট আওয়ামী লীগ রাজনীতির মাঠে সক্রিয় নয়। এর ফলে সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে ঝিমিয়ে পড়া দেখা দিয়েছে।

তবে আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষ্য, বর্তমানে রাজনীতির মাঠ পুরোটাই আওয়ামী লীগের দখলে। মাঠের বিরোধীদল বিএনপি শক্তি হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে। প্রতিপক্ষ না থাকায় রাজনীতি এককেন্দ্রিক হয়ে পড়ায় মাঠের কর্মসূচি কিছুটা কম।

এ প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, রাজনীতির মাঠে প্রতিপক্ষ বলতে এখন কেউ নেই। বিএনপি একেবারেই দুর্বল, তাদের নিজেদের অস্তিত্ব নিয়েই টানাটানি। আওয়ামী লীগ একা থাকায় রাজপথের কর্মসূচি কিছুটা কম। তবে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি আমরা পালন করছি গুরুত্ব দিয়েই।

এদিকে, সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হয়েছিল ২০১১ সালের নভেম্বরে। সেই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৪ সালে। এরপর দীর্ঘ পাঁচ বছর পেরোলেও সম্মেলন আয়োজন কিংবা নতুন কমিটি গঠনের তোড়জোড় নেই সিলেট আওয়ামী লীগে। নির্বাচিত সভাপতি আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান মারা যাওয়ার পর গেল কয়েক বছর ধরে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ চলছে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দিয়ে। তবে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট লুৎফুর রহমান বয়সের ভারে ন্যুব্জ, তিনি দলীয় কর্মসূচিতে একেবারেই সক্রিয় নন। এছাড়া সিলেট মহানগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২২টিতে কমিটি আছে, যেগুলোর বেশ কয়েকটি মেয়াদোত্তীর্ণ। বাকি ৭টি ওয়ার্ডে কমিটিই নেই। আর জেলা আওয়ামী লীগের আওতাধীন ১৩ উপজেলা শাখার মধ্যে ৬টিতে আছে কমিটি এসব কিছু মিলিয়ে দলটির সাংগঠনিক কর্মকা- আরো গতিহীন হয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে নেতাকর্মীদের মধ্য থেকে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জোরালো হয়ে ওঠছে।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এটিএম হাসান জেবুল বলেন, মহানগর কমিটির অনেকেই মারা গেছেন, কেউ কেউ নিষ্ক্রিয়। নতুন কমিটি না হওয়ায় সাংগঠনিক কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে। এখন প্রয়োজন সম্মেলনের মাধ্যমে ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের মূল্যায়ন করে নতুন কমিটি।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক জগলু চৌধুরী বলেন, জেলা কমিটির সভাপতিসহ অন্তত ১০ জন মারা গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে নতুন কমিটি না আসায় তৃণমূলে কিছুটা স্থবিরতা আছে। সম্মেলন হলে সব স্থবিরতা দূর হবে।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, কর্মসূচি কিছুটা কম থাকলেও সিলেটে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ, সুসংগঠিত রয়েছে। কেন্দ্র যখন আমাদেরকে সম্মেলন করতে বলবে, আমরা তখনই করতে প্রস্তুত।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯/শাদিআচৌ/ডিজেএস

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন