আজ মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪ ইং

চ্যালেঞ্জে জিতলেন আসাদ উদ্দিন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৯-২২ ০১:৪৭:২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক :: নানা প্রতিকুলতার মাঝেও সিলেট চেম্বারের প্রশাসকের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ। মাত্র ১২০ দিনের মধ্যে জটিলতায় আক্রান্ত সিলেট চেম্বারের নির্বাচন করার জন্য তাকে এই দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

গত ৯ জুন প্রশাসক হিসেবে সিলেট চেম্বারের দায়িত্ব নেন আসাদ উদ্দিন। দায়িত্ব গ্রহণের দিন তিনি গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, সিলেটের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন সিলেট চেম্বারের নির্বাচন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তিনি করবেন। বিষয়টিকে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন তিনি।

আসাদ উদ্দিনের পরিচয় একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে। রাজনীতির বাইরে সামাজিক ও ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্মকান্ডে জড়িত থাকলেও ব্যবসা বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়ে কখনোই দেখা যায়নি তাকে। তাই কিন্তু অনেকেরেই ধারণা ছিল সঠিক সময়ে নির্বাচন আয়োজন করা তার পক্ষে সম্ভব হবে কি না?

কিন্তু চেম্বারের দায়িত্ব নিয়েই নির্বাচন আয়োজনে প্রস্তুতি শুরু করেন তিনি। গঠন করেন নির্বাচন বোর্ড এবং আপীল বোর্ড। এরমধ্যেই সদস্যপদ নবায়নের বিষয়টি উঠে আসায় স্বল্প সময়ের মধ্যে সদস্যদের নবায়নে সহযোগিতা করতে মাঠে নামেন তিনিও। দ্রুত ট্রেড লাইসেন্স টিআইএন সংক্রান্ত বিষয়ে চেম্বার সদস্যদের অগ্রাধিকার দিতে ছুটে যান সিটি কর্পোরেশন, কর অফিসসহ বিভিন্ন যায়গায়।

সবকিছু ঠিকঠাক করে যখন নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ঘোষণা করবেন তখনই চেম্বারের এক সদস্য হাই কোর্টে রীট করেন নির্বাচন বন্ধ করার জন্য। কিন্তু থেমে যাননি চেম্বারের প্রশাসক ও নির্বাচন পরিচালনা পর্ষদ। আইনী লড়াই করে নির্ধারিত ২১ সেপ্টেম্বরই নির্বাচন আয়োজনের অনুমতি পান তারা।

এরপরও নানা প্রতিকুলতা কাটিয়ে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজন করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন চেম্বারের প্রশাসক আসাদ উদ্দিন আহমদ।

গতকাল ২১ সেপ্টেম্বর উৎসবমুখর পরিবেশে সিলেটের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ‘সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। এরপর গণনা শেষে রাত সোয়া ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন ২০১৯-২১ নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান।

এসময় বক্তব্য রাখেন আসাদ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, যেদিন দায়িত্ব নিয়েছিলাম সেদিন বলেছিলাম নির্ধারিত সময়েই নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের সংগঠন ব্যবসায়ী প্রতিনিধির হাতে তুলে দেব। সকলের সহযোগীতায় সময়ের মধ্যেই আমরা তা করতে পেরেছি। সফলভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারায় প্রশাসন, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন তিনি।

এরআগে বিভিন্ন সময়ে সিলেট চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগ করা হলেও কেউই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে পারেন নি।

উল্লেখ্য, গত ৩১ মে সিলেট চেম্বারের নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু জাল ভোটার তালিকা প্রণয়নের অভিযোগে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। গত ২ ফেব্রুয়ারি চেম্বারের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান বিজিত চৌধুরী। গত ২৭ এপ্রিল ভোট গ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু ভোটার তালিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে গত ১৮ মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়। গত ৩০ মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি সরেজমিন অভিযোগের সত্যতাও পায়।

গত ৩০ এপ্রিল বিচারপতি হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সিলেট চেম্বারের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। এরপর চেম্বারের সদ্য সাবেক সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ আপিল করলে তাও খারিজ হয়। এ অবস্থায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চার মাসের জন্য সিলেট চেম্বারের প্রশাসকের দায়িত্ব দেয় আসাদ উদ্দিন আহমদকে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯/ডিজেএস

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন