আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং
কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি :: কোম্পানীগঞ্জের ধলাই নদীতে চাঁদাবাজির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা টুকেরবাজারে শ্রমিক ও সর্বস্তরের জনতা বিক্ষোভ করেছে মিছিল করে এবং উপজেলা প্রশাসন বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করে।
কোম্পানীগঞ্জ থানা পাথর বহনকারী শ্রমিক সমবায় সমিতি লি: এর সভাপতি কমিটির প্যাডে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাার কয়েকজন চিহ্নিত চাদাবাজের নাম উল্লেখ করে দরখাস্থ করেন।
এসময় বিক্ষিপ্ত শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ ও ওসির মনোনীত স্থানীয় চাঁদাবাজ চক্ররা অহেতুক প্রতি নৌকা থেকে কয়েক দফা চাঁদা আদায় করছে। বিগত সময়ে পুলিশ প্রশাসন শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা না নিলেও বর্তমান ওসি তাজুল ইসলাম থানায় যোগদানের কিছু দিনের মধ্যেই চাঁদা নেওয়া শুরু করেন। ওসির মনোনীত এএসআই এনামুল, পুলিশের টহল দল ও স্থানীয় চাঁদাবাজরা পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের নামে ভাঙ্গিয়ে চাঁদা উত্তোলন করছেন। চাঁদা উত্তোলন বন্ধে উপজেলা প্রশাসন বরাবরে তারা স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জি বলেন, স্মারকলিপি পাওয়ার সাথে সাথেই ধলাই নদীতে অভিযান চলাচ্ছি। এনিয়ে আইনআনুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অন্যদিকে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিকরা জানান, ধলাই নদীতে বালুবাহী নৌকা থেকে ১ থেকে ৩ হাজার, পাথরবাহী নৌকা থেকে ২ থেকে ৪ হাজার টাকা, লিস্টার মেশিন থেকে ২ হাজার ২ শত টাকা, সেলো মেশিন থেকে ১৫শত টাকা, বারকি নৌকা থেকে ৫ শত টাকা ও ইঞ্জিন নৌকা থেকে ১ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করাচ্ছেন থানা পুলিশের অসাধু কর্মকর্তারা। এছাড়াও কথিত জায়গার মালিক দাবি করে প্রতিটি নৌকা থেকে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা করে আদায় করা হচ্ছে যার একটি বড় অংশ পুলিশের এক অসাধু কর্মকর্তাকে দেয় কথিত জাযগার মালিকরা বলে শ্রমিকরা অভিযোগ করেন।
শ্রমিকরা অভিযোগ করে আরো বলছেন, চাঁদা উত্তোলন বন্ধের দাবিতে শ্রমিকরা টুকেরবাজারে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ করলে, থানার ওসি তাজুল ইসলাম বিক্ষোভ না করার আহ্বান জানান।
শ্রমিকরা তাদের দাবি দাওয়া আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ করবেন একথা জানালে ওসি তাজুল শ্রমিকদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, বিক্ষোভকারীদের উপর কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে পুলিশ এর দায়ভার নেবেনা। এমনটি শ্রমিকদের নানা ধরণের হুমকি দমকি দিয়ে বিক্ষোভ থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেন ওসি।
এ ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি তাজুল ইসলামের সাথে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি বারবার ফোন কেটে দেন।
এ ব্যাপাওে কোম্পানীগঞ্জ-গোয়াইনঘাট সার্কেল সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম জানান, শ্রমিকরা তাদের দাবি দাওয়া আদায়ে বিক্ষোভ করতে পারে। এটা তাদের অধিকার। এতে ভয় ভীতি দেখানোর কোন রীতি নেই পুলিশের। পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দেবে। যাতে দুস্কৃতিকারীরা কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটায়। শ্রমিকদের সাথে ওসির বিরূপ মন্তব্যে এএসপি নজরুল ইসলাম বলেন, ওসির এমন বক্তব্য দুস্কৃতিকারীদের উস্কানী দিবে।
তিনি আরো বলেন, আমি এ ব্যাপারে ওসির সাথে কথা বলছি।
উল্লেখ্য, কোম্পানীগঞ্জে ধলাই নদীতে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজির ব্যাপারে স্থানীয় একটি দৈনিক প্রত্রিকা গতকাল ও আগ দুটি প্রতিবেদন ছাপায় এতে শ্রমিকরা বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হয়।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/১০ অক্টোবর ২০১৯/এএএন/এসডি