আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

ব্যতিক্রমী ড. মোমেন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১০-১৫ ০০:০৫:০১

জুনেদ আহমদ চৌধুরী :: তিনি একজন রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধি । সচারাচর জনপ্রতিনিধির চেয়ে তিনি অনেকটা ব্যতিক্রম। হাতে একটু সময় পেলে চলে আসেন আপন ভুমি সিলেটে। কোন সপ্তাহে আসেন দুই বারও। সাধারণত বাংলাদেশের রাজনীতির সংস্কৃতিতে এমপিরা বেশীরভাগ থাকেন ঢাকায়। আর মন্ত্রী হলে তো কথাই নেই। ঢাকা ছাড়তে চাননা একবারে। নিজ নির্বাচনী এলাকায় যাওয়া আসা করেন খুব কম। কিন্তু তিনি চলমান জনপ্রতিনিধির এই ধারাকে অনেকটি বদলে ফেলেছেন। তিনি হলেন সিলেট-১ আসনের সাংসদ ড. এ কে এম আব্দুল মোমেন।

ড. মোমেন এবার সিলেট-১ আসনে থেকে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হয়ে জয় লাভ করেন। তিনি সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের ছোট ভাই। মোমেন ছিলেন জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি। নির্বাচনের বছর খানেক আগে চলে আসেন একবারে নিজের জন্মভূমি সিলেটে। শুরু করেন রাজনৈতিক কার্যক্রম। সিলেটের আওয়ামীলীগের রাজনীতির ঘরণায় নিজেকে করে তুলেন পাকাপোক্ত। রাজনীতির বাইরেও সিলেট সদর ও মহানগরীর সাধারণ মানুষের মাঝে গড়ে তোলেন সখ্যতা। তাঁর বড় ভাই মুহিত নির্বাচন না করায় দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা মোমেনের হাতে তুলে দেন নৌকা।

৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে বিভিন্ন সভা সমাবেশে নির্বাচিত হলে সিলেটের উন্নয়নে তাঁর ভাই মুহিতের মত কাজ করবেন বলে বক্তব্য দেন ড. মোমেন। সাংসদ নির্বাচিতও হন। শুধু তাই নয় এমপি হওয়ার পর তাঁর কপালে জোটে মন্ত্রিত্ব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর হাতে তুলে দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মত মর্যাদা সম্পন্ন মন্ত্রণালয়।

নির্বাচনের আগে তিনি যেসব কথা দিয়েছিলেন তিনি তাঁর কথা রাখতে শুরু করেছেন। সিলেটের উন্নয়নে হাতে নিয়েছেন মহাপরিকল্পনা। একের পর এক সফর করতেছেন নিজ নির্বাচনী এলাকা সিলেটে।

সচরাচর দেশের জনপ্রতিনিধিরা থাকেন ঢাকায়। মাসে দুই মাসে যান নির্বাচনী এলাকায়। কিন্তু মোমেন ব্যতিক্রম। সপ্তাহ শেষ হতে না হতেই চলে আসেন সিলেটে। মানুষের সুখ দুঃখের কথা শুনতে চলে যান জনগনের দারগোড়ায়। তিনি ঢাকায় থাকলেও নির্বাচনী এলাকার মানুষের কথা শুনার জন্য সিলেটে খুলেছেন একটি অফিস।

গত ৮ অক্টোবর অফিস উদ্বোধনের সময় তিনি বলেন, প্রমাণাদি নিয়ে সমস্যা লিখিত আকারে দিতে হবে। এসব কাগজপত্র সিলেট অফিস থেকে তাঁর কাছে পাঠানো হবে। পত্রের প্রেক্ষিতে ফিরতি এর উত্তরও জানানো হবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।

এছাড়া ১২ অক্টোবর সিলেট জেলা প্রশাসন আয়োজন করে চলমান সিলেটের উন্নয়ন নিয়ে একটি সভা। সিলেটের উন্নয়নের অগ্রগতি জানতে মোমেন এ সভায় দিকনির্দেশনা মুলক বক্তব্য রাখেন। যেসব কাজের ফাইল আটকা পড়েছে এর স্পষ্ট কারণও জানতে চান তিনি। ১২ অক্টোবর দিন ব্যাপী মোমেন সিলেটের বিভিন্ন সভায় নিজে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন বিষয়ের তদারকি করেন।

শুধু মোমেন নয়, সিলেটের প্রতি সু-নজর রয়েছে মন্ত্রী পত্নী সেলিনা মোমেনের। সিলেটে আসেন প্রায় সময়। নির্বাচনের সময় সেলিনা মোমেন মহিলা টিম নিয়ে নৌকার জন্য মাঠে নামেন। এসময় বিভিন্ন বাসা-বাড়ি, বস্তি এলাকার মানুষরা সেলিনার কাছে অনেক দাবি তুলে ধরেন। তাঁর স্বামী নির্বাচিত হলে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। কথার কথা রেখেছেন তিনিও।

নির্বাচনের সময় তিনি এসব বিষয় নোট করতে ভুলেননি। এখন সেই নোটের আলোকেই সেলিনা মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। একে একে করে সমস্যা সমাধানও করে দিচ্ছেন। গত ৩১ আগস্ট মোমেন পত্নী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ব্যক্তিগত উদ্যোগে করেন সিলেটে এক মহিলা সমাবেশ। হাজার খানেক মহিলা নিয়ে তাঁর এই সমাবেশ ছিল বেশ প্রশংসিত।

সবকিছু মিলিয়েই সিলেটে এখন প্রশংসায় ভাসছে মোমেনের নাম। বিশেষ করে সিলেটে অফিস উদ্বোধন করে তিনি সাধারণ মানুষের একবারে দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছেন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। আর সিলেটবাসী মোমেনকে এখন আখ্যা দেন ‘ব্যতিক্রম মোমেন হিসেবে’ ।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৫ অক্টোবর ২০১৯/জেএসি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন